গতবারের চেয়ে এবারের ঈদে দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩১.২৫ শতাংশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরের চেয়ে এবারের ঈদুল ফিতরে দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩১.২৫ শতাংশ।

বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩শ ৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩শ ২৮ জন নিহত এবং ৫শ ৬৫ জন আহত হয়েছিলেন। বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরে যাতায়াতে দেশের সড়ক মহাসড়কে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪শ ৭ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩শ ৯৮ জন আহত হয়েছেন।

একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া নৌপথে ২টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত এবং ৫ জন আহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪শ ১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪শ ৩৮ জন এবং ১ হাজার ৪শ ২৪ জন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো সংগঠনের সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এবারও প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়টি অনেকদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষ বেশি যাতায়াত করেছেন। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায় যানবাহনের গতি বেড়েছে। দেশের সবকটি সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর ৭.৫ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে।

সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিম্নবিত্তের লোকজনদের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩শ ৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪শ ৭ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩শ ৯৮ জন আহত হয়েছেন।

বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩শ ৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩শ ২৮ জন নিহত এবং ৫শ ৬৫ জন আহত হয়েছিলেন। বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১শ ৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১শ ৬৫ জন নিহত, ২শ ৪০ জন আহত হয়েছেন, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯.৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০.৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০.৩৭ শতাংশ প্রায়।

এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৮৭ জন চালক, ৩১ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪০ জন পথচারী, ৭৫ জন নারী, ৪৭ জন শিশু, ২৭ জন শিক্ষার্থী, ৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৪ জন শিক্ষক, ১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২ জন চিকিৎসকের পরিচয় মিলেছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পাশাপাশি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতালে) সড়ক দুঘটনায় আহত ৬শ ৫৮ জনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৬শ ৮ জন আহত রোগীর তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

সংঘটিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৪০.৫০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪.২৮ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ৬.৫০ শতাংশ কার, মাইক্রো জিপ, ৫.৯৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ৬.১৪ শতাংশ অটোরিকশা, ১২.১১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল, ও ১৪.৪৬ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৬.৩১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৭.১১ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২.৫৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ০.৫০ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনে, ০.৫০ শতাংশ চাকায় ওড়না পেছিয়ে ও ৩ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩২.৫৮ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১০.০২ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৫০.৬২ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬.০১ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.২৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৫০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে গত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে অবকাঠামো ভালো হওয়ায় যানবাহনের গতি বেড়েছে। গতিকে নিরাপদ করার মতো আইনি কাঠামো, দক্ষচালক, মানসম্মত যানবাহনের অভাব রয়েছে।

আইন প্রয়োগে দুর্নীতির কারণে জাতীয় মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন, নিষিদ্ধ ত্রি-হুইলার, ইজিবাইকের মতো যানবাহন অবাধে চলছে।

এছাড়াও ছোট ছোট যানবাহন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ইজিবাইকের অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনাও।

তিনি মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের আমদানি বন্ধ করে দেশব্যাপী উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন ঠেকানো, আইন প্রয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট করা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে গণপরিবহনগুলোতে নগদ অর্থ বন্ধ করে ডিজিটাল লেনদেন চালুর দাবি জানান তিনি।

এতে সংবাদ সম্মেলনেন আরো উপস্থিত ছিলেন- সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুরন্নেছা খান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আব্দুল হক, সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম-মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, মো. মহসিন প্রমুখ।

দুর্ঘটনার কারণ:
১. দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল।
২. জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো।
৩. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালক এসব সড়কে দুঘটনায় পতিত হয়েছে।
৪. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন।
৬. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ:
১. জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা;
২. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা;
৩. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান।
৪. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা;
৫. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা;
৬. মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা;
৭. সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা;
৮. উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা;
৯. মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা;
১০. মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া।

   

প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় ঢাবির ৮৭ শিক্ষার্থীসহ সব আসামি খালাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৭ সালের ২০ অক্টোবরে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জন খালাস পেয়েছেন। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত সম্প্রতি এ রায় দেন।

খালাস পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ২১ জন ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী, ৮ জন চাকরিজীবী-ব্যবসায়ী এবং বিসিএস নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত এক ব্যক্তিও আছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে প্রায় সাড়ে ছয় বছর আগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলায় দুটি আইনে (আইসিটি ও পাবলিক পরীক্ষা) অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ২৪ জুন ১২৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। আইসিটি আইনের মামলায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আদালতের রায়ে বলা হয়, অভিযোগ গঠনের পর আদালতে সাক্ষীদের হাজির করতে সমন, গ্রেফতারি পরোয়ানা ও অজামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষ মাত্র একজন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে। একমাত্র যে সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনিও অভিযোগ সমর্থন করে কোনো সাক্ষ্য দেননি। আইসিটি আইনের যেসব ধারায় (৫৭ ও ৬৩) অপরাধের অভিযোগ মামলায় আনা হয়, তা বিচারে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই আসামিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

রায়ে আদালত বলেছেন, একই অপরাধের অভিযোগে মামলায় পৃথক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি ও দণ্ডিত করা যায় না।

আইসিটি আইনের মামলাটিতে সব আসামির খালাস পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর প্রসিকিউশন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

অবশ্য আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. মনজুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হয়রানির উদ্দেশ্যে আসামিদের বিরুদ্ধে এক মামলায় পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আইসিটি আইনের অভিযোগ থেকে সবাই খালাস পেয়েছেন। অপরটি (পাবলিক পরীক্ষা আইন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন। এটির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে আছে।

গণমাধ্যমকর্মীদের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল থেকে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন রানা ও অমর একুশে হল থেকে আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। দুজনের তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার হল থেকে ইশরাক হোসেন নামের এক পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। একই দিন সিআইডি মামলা করে।

আদালতের রায়ে আরও বলা হয়, মামলার আসামিদের মধ্যে ৪৬ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। রায়ের তথ্য বলছে, মামলার অভিযোগ, ইলেকট্রনিক বিন্যাসে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও সরকারি সংস্থার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। এ অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের ৫৭ ও ৬৩ ধারায় ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযোগ গঠনের দীর্ঘদিন পর ২০২৩ সালের ১১ মে এক সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ। বাকি সাক্ষী হাজির না করার তথ্য উল্লেখ করে আসামিপক্ষ আদালতে আবেদন করে বলে, একই ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা চলমান। এ কারণে আইসিটি আইনের মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।

রায়ে আরও বলেছেন, আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে মিথ্যা বা অশ্লীল কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করলে এবং প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত আধেয় (কন্টেন্ট) কেউ পড়লে বা দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। প্রসিকিউশন মামলাকে শতভাগ সত্য বলে ধরে নিলেও এখানে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার অপরাধের উপাদান নেই। এ ধারায় অপরাধের ক্ষেত্রে তর্কিত আধেয় সর্বসাধারণের জন্য কোনো ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক বিন্যাসে প্রচার বা প্রকাশ করতে হবে। ফাঁস করা প্রশ্নপত্র সর্বসাধারণের জন্য ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে প্রচার করার কোনো অভিযোগ মামলায় আনা হয়নি।

আদালত আরও বলেন, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ইমেইল, ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে বা অন্য কোনো আবদ্ধ গ্রুপে কোনো ধরনের চ্যাটিং বা যোগাযোগ আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার অপরাধের উপাদানের মধ্যে পড়ে না। যেখানে ৫৭ ধারার অপরাধ প্রতিষ্ঠিত হয়নি, সেখানে ৬৬ ধারার অপরাধও প্রতিষ্ঠিত হয় না।

আইসিটি আইনের ৬৬ ধারায় কোনো ব্যক্তির ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কম্পিউটার, ই–মেইল, নেটওয়ার্ক, রিসোর্স বা সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংগঠনে সহায়তা করার কথা উল্লেখ আছে।

রায়ে বিচারক বলেন, আইসিটি আইনের ৬৩ ধারার মূল বক্তব্য হলো, কোনো ব্যক্তি যদি এই আইন বা আইনের বিধি বা প্রবিধানের কোনো ইলেকট্রনিক রেকর্ড, বই, রেজিস্ট্রার, তথ্য, দলিল বা অন্য কোনো বিষয়ে প্রবেশাধিকারপ্রাপ্ত হয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া কোনো বিষয়বস্তু অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট প্রচার বা প্রকাশ করেন, তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তবে মহিউদ্দিন, মামুনসহ অন্য আসামিদের এ ধরনের কোনো অপরাধ করার সাক্ষ্য-প্রমাণ দেখা যায় না।

রায়ে আদালত বলেন, আসামি মহিউদ্দিনের মুঠোফোনের ফরেনসিক পরীক্ষায় সাদা কাগজে হাতে লেখা প্রশ্নোত্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাওয়া যায়। ফলে আসামির ডিজিটাল ডিভাইস থেকে প্রশ্নপত্র সর্বসাধারণের জন্য ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক বিন্যাসে প্রচার বা প্রকাশ করার কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই। আসামি মামুন টাকার বিনিময়ে ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের গ্রাহক সংগ্রহ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার তথ্য জবানবন্দিতে স্বীকার করেন। পরীক্ষার হলের বাইরে থেকে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের উত্তর বলার তথ্যও স্বীকার করেন তিনি। মামুনের কাছ থেকে উদ্ধার করা মুঠোফোনের ফরেনসিক পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্রের ছবি পাওয়া যায়। তবে তিনি তা সর্বসাধারণের জন্য ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে প্রচার করেননি।

একইভাবে আদালত রায়ে আসামি ইব্রাহীম, অলিপ কুমার বিশ্বাস, নাভিদ আনজুম, রফিকুল হাসান, বনি ইসরাইল, হাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, আইয়ুব আলী, আনোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির তথ্য আদালত রায়ে তুলে ধরেছেন। স্বীকারোক্তির তথ্য পর্যালোচনা করেছেন।

রায়ে আদালত বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনে পৃথক একটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে; যা ‘ডাবল জিওপ্রাডি’র (একই অপরাধের অভিযোগে কাউকে দুবার বিচারের মুখোমুখি করা) মূলনীতিকে লঙ্ঘন করে। সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারি মামলায় সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাবে না।

রায়ে উল্লেখ রয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষে পিপি উল্লেখ করেন, মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার অপরাধের উপাদানকে সমর্থন করে না। মামলার কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও কোনো ধরনের ইতিবাচক ফলাফল আসার সম্ভাবনা নেই। যেহেতু আসামিদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধের কোনো উপাদান নেই, তাই মামলাটি ‘কেস অব নো এভিডেন্স’ (অভিযোগ প্রমাণের সপক্ষে সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকা)।

;

কষ্টিপাথর কিনে প্রতারিত হয়ে প্রতারকের ভায়রাকে অপহরণ, গ্রেফতার ৭



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝালকাঠির বাসিন্দা মোস্তফা হাওলাদার। পেশায় অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিভিন্ন ধাতব মুদ্রা সংগ্রহ করে বিক্রি করা। অপর দিকে ঢাকার বাসিন্দা খোকন হাজী। তিনিও ঠিকাদার পরিচয়ের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিভিন্ন ধাতব মুদ্রা কিনে পার্শ্ববর্তীদেশ ভারতে পাচার করে আসছিলেন। সম্প্রতি মোস্তফার কাছ থেকে প্রায় ৯৫ লাখ টাকায় মূর্তি ও ধাতব মুদ্রা কিনে প্রতারিত হন খোকন।

অপর দিকে নকল মূর্তি ও মুদ্রা বিক্রি করে আত্মগোপনে চলে যান মোস্তফা। ফলে খোকন প্রতারতি হয়ে মোস্তফাকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু তার কোনো হদিস না পেয়ে এক সহযোগীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে টাকা আদায় করতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে আনোয়ারের হোসেন খান (৪৪)কে অপহরণ করে খোকন হাজী ও তার চক্রের সদস্যরা। টাকা নিয়ে আত্মগোপনে যাওয়া মোস্তফার ভায়রা ভাই অপহৃত আনোয়ার।

অভিযোগ পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা খোকন হাজীসহ সাত জনকে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৩)। এ সময় অপহৃত আনোয়ারকে উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃতরা হলো- মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূলহোতা হাজী ওয়াজী উল্লাহ্ খোকন (৬৫), মো. আরিফ হোসেন (৫৫), সাইফ উদ্দিন আহমেদ মিলন (৬২), সিরাতুল মোস্তাকিম (৫৮), মো. রুহুল আমিন (৬০), মো. জাকির হোসেন (৩০), ও মো. স্বাধীন (৫২)।

এসময় তাদের কাছ থেকে রিভলবার, ৮ রাউন্ড গুলি ও শটগান উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর এসব তথ্য জানান।


লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর বলেন, গত ১ মে রাত ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকায় একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে খোকন হাজীর নেতৃত্বে ৮ থেকে ৯ জনের একটি অপহরণকারী চক্র দোকান কর্মচারী আনোয়ারের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জিম্মি করে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া এলাকায় খোকন হাজীর মালিকানাধীন ‘চুনকুটিয়া রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ অফিসের আটকে রাখে। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা আনোয়ারের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে পরিবারের কাছে ৯৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আনোয়ারের জীবন বাঁচাতে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে অপহরণকারী চক্রের দেওয়া একটি ব্যাংক হিসাব নম্বরে পাঠায়। সাড়ে ১৭ লাখ টাকা পাওয়ার পরেও আরও টাকার দাবিতে নির্যাতন চালাতে থাকে। এমনকি অপহরণকারীরা টাকা না দিলে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এই অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-৩ এর গোয়েন্দা দল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় অপহরণকারী চক্র ও অপহৃতের অবস্থান শনাক্ত করে। খোকনের অফিসে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ৭ জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক জানান, আসামি খোকন হাজী ২০১৫ সাল থেকে দেশের মূল্যবান কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য পিতলের ধাতব মুদ্রা ভারতে পাচার করে আসছিল। তার এ অপকর্মের সহযোগী ছিল ভারতীয় এক নাগরিক যার নাম মিলন চক্রবর্তী। যিনি নিজেকে একটি বিখ্যাত ভারতীয় কোম্পানীর এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন। কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য পিতলের ধাতব মুদ্রার মূল ক্রেতা ছিল মিলন চক্রবর্তী। খোকন হাজী ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতব মুদ্রার ৭টি চালান ভারতে পাচার করেন। খোকন হাজীর কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতবমুদ্রা সংগ্রহের কাজে নাঈম (৩৫), মোস্তফা হাওলাদার(৫০) ও রবি নামের কয়েকজন সহযোগী বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করতো। বিনিময়ে তাদের মাসে ৩০ হাজার টাকা করে বেতন দিত খোকন।

তিনি আরও জানান, গত ১ মে মোস্তফা হাওলাদার ও নাঈমের একজন সহযোগী মোবাইল ফোনে খোকন হাজীকে বলেন, মোস্তফা হাওলাদারের ভায়রা-ভাই ভিকটিম আনোয়ার ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকায় একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে। তাকে ধরতে পারলে মোস্তফা হাওলাদারের সন্ধান পাওয়া যাবে। এই তথ্য পেয়ে খোকন হাজী তার সহযোগীদের নিয়ে আনোয়ারকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খোকন হাজীর নেতৃত্বে একটি সাদা মাইক্রো বাসে করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আনোয়ারকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় নিয়ে এসে মুক্তিপণ দাবি করে।

র‍্যাব-৩ এর সিও আরও জানান, খোকন হাজী একজন ঠিকাদার। মতিঝিল এলাকায় তার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। খোকন হাজী ১৯৭৫ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। তার ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। ঠিকাদারী ব্যবসার আড়ালে খোকন হাজী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য ধাতব মুদ্রার কারবার করে আসছিল। এই অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার সহযোগীরাও অবৈধ কষ্টিপাথর ও ধাতব মুদ্রার কারবারের জড়িত। ভিকটিমকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর।

;

গাজীপুরে রেল দুর্ঘটনা: ৩ ঘণ্টা পর এক লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের কাজীবাড়ি এলাকায় দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর পাশের এক লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা ত্যাগ করে জয়দেবপুর জংশনে যাত্রাবিরতি দিয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই আন্ত:নগর আরও একটি ট্রেন ছেড়ে গেছে।

শুক্রআর (৩ মে) জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাজীবাড়ি এলাকায় একটি তেলবাহী ট্রেনের সাথে টাঙ্গাইল কমিউটারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে জয়দেবপুর থেকে ঢাকামুখী আউটার সিংগন্যাল বন্ধ হয়। তবে দুর্ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর দুটি ট্রেন পাশের এক লাইন দিয়ে পারাপার হয়েছে। রেল লাইনে থাকা যাত্রীবাহী ট্রেনের বগি এবং তেলবাহী ট্রেনের বগি সরানোর জন্য ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন আসছে।

এর আগে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে জেলার জয়দেবপুর জংশনের পাশেই কাজীপাড়া এলাকায় থেমে থাকা তেলবাহী ট্রেনের সাথে টাঙ্গাইল কমিউটারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার পর গাজীপুর জেলা প্রশাসক পুলিশ, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, কেন দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, এসব বিষয়ে জানতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

;

গাজীপুরে ট্রেন সংঘর্ষ, ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাজীপাড়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উদ্ধার সহায়তায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি সদর দপ্তর।

শুক্রবার (৩ মে) বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের কারণ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি জয়দেবপুর রেল স্টেশন পার হলে কাজীপাড়ায় আউটার সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয়। 

এতে ট্রেনের কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া যাত্রঅবাহী ট্রেনটির ৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ, গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ শুরু করছে। আহতদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সংঘর্ষের এই ঘটনায় উদ্ধার সহায়তা নিশ্চিত করতে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

;