প্রীতি উরাংয়ের হত্যার ঘটনায় বিচার চায় সচেতন নাগরিক সমাজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী শিশু প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।

‘নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী অ্যাড. খুশী কবির বলেন, প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে আমরা সবাই সোচ্চার হয়ে প্রীতি উরাংয়ের সুষ্ঠু বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। সেইসঙ্গে আমরা সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

লিখিত বক্তব্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফারহা তানজীম তিতিল বলেন, “গৃহকর্মীদের সুরক্ষা এবং কল্যাণের জন্য বারবার সরকারের কাছে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে দাবি ও অনুরোধ জনানো হলেও বাস্তবে আমরা এর কোনো প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না। সাম্প্রতিক সময়ে গৃহকর্মীদের নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা আমাদেরকে এর প্রয়োজনীয়তার কথা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। এই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মোহাম্মদপুরে সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী এই শিশুটির অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। ঘটনার সময় সৈয়দ আশফাকুল হক ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ৪ এপ্রিল তিনি চাকরিচ্যুত হন।

তিনি বলেন, প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে তাকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু, স্বাধীন, নিরপেক্ষ, প্রভাবমুক্ত, পক্ষপাতহীন ও স্বচ্ছ তদন্ত এবং দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই আমরা। ওই বাসায় আরো কয়েকজন শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সেইসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতহীন তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আমরা সোচ্চার।

লিখিত বক্তব্যে তিতিল আরও বলেন, “সৈয়দ আশফাকুল হকের মোহাম্মদপুরের ওই ফ্ল্যাট থেকে গত বছর আগস্টে ৭ বছরের আরো একজন গৃহকর্মী পড়ে গিয়েছিল বা লাফ দিয়েছিল। সে বেঁচে আছে। পরপর ঘটে যাওয়া একই রকমের দুটি ঘটনা আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে। গণমাধ্যমে এই সংক্রান্ত তেমন অনুসন্ধানী কিছু পাচ্ছিলাম না। ফলে আমরা সরেজমিনে এই সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। আমাদের মধ্য থেকে কয়েকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, মোহাম্মদপুর, স্থানীয় থানা এবং সংশ্লিষ্ট হসপিটালে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করেছেন।

তিতিল বলেন, আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যথাযথ তদন্ত হলে অভিযোগের সত্যতা মিলবে। তাই সরকারের কাছে বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার নিরপেক্ষ, দ্রুত, সুষ্ঠু, পক্ষপাতহীন, প্রভাবমুক্ত ও স্বচ্ছ তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি আজকের সংবাদ সম্মেলনে। হুবহু এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি দুর্ঘটনা হতে পারে না। ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ মামলা দিয়ে হত্যা অপরাধকে আড়াল বা লঘু করা হচ্ছে, আমরা এমন আশঙ্কা করছি। আমাদের অনুসন্ধানে জেনেছি মৃত্যুর সময় প্রীতির বয়স ছিল ১৩ বছর (২০১৮ সালে ৭ বছর বয়সে প্রাক- প্রাথমিক স্কুল ছাড়ার বিবেচনায়)। তার স্কুলের নথি হারিয়ে গেছে বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগ রয়েছে সৈয়দ আশফাকুল হকের স্ত্রী তানিয়া খন্দকার প্রায়ই তার বাসায় কর্মরত গৃহকর্মীদের মারধর করতেন। একটি টিভি চ্যনেলে প্রীতিকে পরীক্ষাকারী একজন ডাক্তার বলেছেন, প্রীতির গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পায়ুপথের আকৃতি অস্বাভাবিকভাবে বড়। দুর্গামণি বাউরি নামে ওই বাড়ির আরেকজন শিশু গৃহকর্মী জানিয়েছে, সৈয়দ আশফাকুল হক তাকে বেল্ট দিয়ে মেরেছে। তার মাথায় রক্ত জমে গিয়েছিল। প্রীতিকে আট তলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। প্রীতির বাবা অভিযোগ করেছেন, ওই গৃহে কাজ করার সময় সৈয়দ আশফাকুল হকের পরিবার প্রীতিকে মা-বাবার সঙ্গে কথা বলতে দিত না। তারা পারিশ্রমিকও পেয়েছেন সামান্য।

তিনি বলেন, প্রীতি উরাং নামের শিশুটি পড়ে যাবার আগে ১২/১৩ মিনিট ঝুলে ছিল। সে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিল। কিন্তু আশফাকুল হকের বাসা থেকে কেউ তাকে সাহায্য করেনি। এলাকার বহু মানুষ এই ঘটনার সাক্ষী। আশপাশের মানুষজন সাহায্যের জন্য এগিয়ে যেতে চাইলেও ওই বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীরা তাদেরকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। এজাহারে প্রীতির বয়স ১৩ বছরের বদলে ১৫ বছর বলে উল্লেখ করা উদ্দেশ্যমূলক বলে আমাদের মনে করার সঙ্গত কারণ আছে। কোনো প্রভাবশালী মহলের চাপে তদন্তকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হলে আমরা তা মেনে নেব না।

সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন সচেতন নাগরিক সমাজ। এগুলো হলো—

প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু বা হত্যার সুষ্ঠু স্বাধীন নিরপেক্ষ, পক্ষপাতহীন, প্রভাবমুক্ত ও স্বচ্ছ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুকে অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড বিবেচনা করা হলে তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে হালকা করা হবে। এ মামলা অবিলম্বে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আওতায় এনে নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে। এর জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কিংবা প্রয়োজনে উচ্চ বিচার বিভাগীয় নির্দেশনা দেবার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।

প্রীতির পরিবারকে যথোপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। সেইসাথে তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আশফাকুল হকের বাসায় নির্যাতিত অন্য যে শিশুটি বেঁচে আছে তার চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

শিশুটির শরীরের বিশেষ ক্ষতটি পরীক্ষা করে প্রকৃত ঘটনার তদন্ত করতে হবে। প্রয়োজনে আইনি প্রক্রিয়ায় দোষীদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে।

সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় ৩ জন শিশু গৃহসহকারী ছিল। তারা ৭, ৮ এবং ১১ বছর বয়সে কাজে যোগ দেয়। বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী ১৪ বছর পূর্ণ হয়নি এমন ব্যক্তি শিশু। শ্রম আইনের ৩৪ ধারা অনুয়ায়ী, কোন শিশুকে কোন পেশায় বা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করা যায় না। সৈয়দ আশফাকুল হক কিংবা তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যের বিরুদ্ধে শিশুদের ওপর কোনো নির্যাতেনের যে দৃষ্টান্ত রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি আমরা। সেই সাথে আইনি প্রক্রিয়ায় তার বিচার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

যে দারোয়ানরা বাড়ির মালিকের ইশারায় বা নির্দেশে প্রীতিকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে দেয়নি, তাদেরকেও নিরপেক্ষ বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এই সঙ্গে ডেইলি স্টারের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি মিন্টু দেশোয়ারা এবং প্রীতির মামা ফুলসাই ওঁরাংকে তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

চা বাগান থেকে আনা শিশুদেরকে পাচার করা এবং যৌনদাস করার জন্য কোনো চক্র কাজ করেছে কিনা, সেটাও আলাদাভাবে তদন্ত করে দেখার দাবি জানাচ্ছি।

শিশুশ্রম বিষয়ক নীতিমালাকে আইনে পরিণত করার জোর দাবি করছি। শ্রমে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিশুর বয়স ১৪ বছরের পরিবর্তে ১৬ বছর করার দাবি করছি সরকারের কাছে। সেই সাথে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালায় গৃহে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিশুর বয়স ১৪ বছরের পরিবর্তে ১৬ বছর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

২০১৭ সালে আদালেতের নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রম মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিযে গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় সারাদেশে মনিটরিং সেল গঠনের যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল তা অবিলম্বে কার্যকরের জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে গৃহ শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে লেখক প্রিসিলা রাজ, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা অ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত, অ্যাড. তবারক হোসেন, লেখক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন, কণ্ঠশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ শায়ান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

   

ডিবি কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী মিঠু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, মিল্টন সমাদ্দার ও তার স্ত্রী মিঠু সমাদ্দার

ছবি: সংগৃহীত, মিল্টন সমাদ্দার ও তার স্ত্রী মিঠু সমাদ্দার

  • Font increase
  • Font Decrease

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান গ্রেফতার মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী মিঠু হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবিতে ডাকা হয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকাল সাড়ে ১১ টারদিকে রাজধানীর ডিবির কার্যালয়ে আসেন তিনি। ডিবি পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

ডিএমপির গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শনিবার (৪ মে) দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে ডিএমপি'র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, সেসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার আশ্রমের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে মিল্টনের স্ত্রীকে রোববার দুপুরে ডিবিতে ডাকা হয়েছে। তার স্ত্রীকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো।

তিনি বলেন, নিজের বাবাকে পিটিয়ে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় এসে মিল্টন সমাদ্দার ‘সাইকো’তে (মানসিক রোগী পরিণত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এসেছে, সেসব বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। তার উত্থান কীভাবে হলো, তথাকথিত ‘মানবতার ফেরওয়ালা’ কীভাবে হলেন, তার অর্থের উৎস, কীভাবে আসে, কীভাবে তিনি দরিদ্র মানুষকে সংগ্রহ করতেন এবং কেনই-বা তাদের টর্চার সেলে এনে পেটাতেন, সবকিছু বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ডিবিপ্রধান আরো বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে মিল্টন কীভাবে অর্থ উপার্জন করতেন এবং কারা তাকে সহয়তা করতেন, তাদেরকেও শনাক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মিল্টন সমাদ্দারের তিন-চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে। সেসব অ্যাকাউন্টে কারা টাকা পাঠাতেন, তদন্ত করে জানানো হবে বলেও জানান হারুন অর রশীদ।

এর আগে গত বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করে গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগ।

পরে রাতে তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় বিভিন্ন অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। সেসব মামলায় আদালতে সোপর্দ করলে মিল্টনকে তিনদিনের রিমান্ড দেন আদালত।

সম্প্রতি, কিছুদিন ধরে মিল্টনের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। মিল্টন ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরই মধ্যে তার সঙ্গে কাজ করা এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকজন তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।

;

সুন্দরবনের আগুন নেভাতে ৫ বাহিনী, জোয়ারের অপেক্ষা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়ার ছিলা এলাকায় লাগা আগুন নেভাতে কাজ শুরু করেছে পাঁচ বাহিনী।

রোববার (৫ মে) সকাল ৯টা থেকে বনরক্ষী ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি এ কাজে যোগ দিয়েছে নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার।

শুরুতেই নৌ বাহিনীর মোংলা ঘাঁটির লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরফাতুল আরেফিনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি ফায়ার ফাইটিং টিম আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়েন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পাশের ভোলা নদী থেকে পানি উঠানোর জন্য পাইপ সংযোগ দেয়। তবে নদীতে জোয়ার না থাকায় পানি সরবরাহে বিলম্ব হচ্ছে।

ফয়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বাগেরহাটের উপ পরিচালক মামুন আহমেদ জানান, রোববার (৫ মে) সকালেই সুন্দরবনের আগুন নেভাতে তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসেছে। এর মধ্যে মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরনখোলার তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করেছে। বাকি দুটি ইউনিট স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। তবে বনের পাশে ভোলা নদীতে এখন ভাটা থাকায় আগুন নেভানোর কাজে পাইপসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নেওয়া যাচ্ছে না। জোয়ার হলে এগুলো পার করা হবে। তবে আগুন অল্প অল্প করে জ্বলছে। শুকনো পাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করার সম্ভাবনা নাই বলেও জানান তিনি।

সুন্দরবনের আগুন নেভানোর কাজে বনরক্ষীদের পাশাপাশি অন্যরা কাজ করছে জানিয়ে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম বলেন, গতকাল নানা প্রতিকূলতায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা যায়নি। তবে রোববার (৫ মে) সকাল থেকে এ কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগ দিয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীরাও সব রকমের সহযোগিতা করছেন।

আগুন ব্যাপক এলাকা ছড়িয়ে যাওয়ার আগেই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে বলেও জানান বনবিভাগের এই কর্মকর্তা।

এক প্রশ্নে ডিএফও কাজী নুরুল করিম বলেন, কী কারণে, কীভাবে আগুন লেগেছে তার এখনও সঠিক কারণ বের করা যায়নি। তবে স্থানীয়রা একেকজন একেক তথ্য দিচ্ছে। সব তথ্যই আমলে নিয়ে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷

কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধার স্টেশন অফিসার মোঃ ওবায়দুর রহমান এবং ধানসাগর স্টেশন অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে আগুন লাগার সঠিক কারণের প্রতিবেদন জমা দেবেন এই কমিটি।

;

কটিয়াদীতে প্রশান্তির বৃষ্টিতে স্বস্তি



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে শনিবার (৪ মে) রাত আটটার পর থেকে আকাশে মেঘের গর্জন। চাঁদনী রাতের নিভু নিভু ঝলমলে আলো মেঘের আবরণে ঢাকা পড়েছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনছে কখন আকাশ থেকে নেমে আসবে শীতল বারিধারা৷

বহু প্রতীক্ষার পর নয়টা চল্লিশ মিনিটে স্বস্তির বৃষ্টি হলো কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে। থেমে থেমে চলছিল বৃষ্টির নিঝুম আওয়াজ৷ 

রোববার (৫ মে) সকাল থেকে আবহাওয়া ছিল মেঘলা৷ তাপমাত্রাও স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে এসেছে।

শনিবার রাতের স্বস্তির বৃষ্টিতে মানুষের মধ্যে নেমে এসেছে প্রশান্তি। জেলা সদর ও আশপাশের উপজেলায় শুরু হয় বৃষ্টি। থেমে থেমে কয়েকদফা বৃষ্টি নামতে থাকে। এদিকে, বৃষ্টিপাতের পর তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসে। দিনভর ৩০-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও সন্ধ্যায় তা ২৬ ডিগ্রিতে নেমে আসে।

সরজমিনে দেখা যায়, জালালপুর ইউনিয়নের নদীর বাঁধ এলাকায় বৃষ্টির মধ্যে চলাচল করছে যানবাহন, অনেকেই স্বেচ্ছায় ভিজছেন বৃষ্টিতে। চোখে মুখে তাদের আনন্দের ছাপ। অপরদিকে বৃষ্টি রপর থেকে সামজিক মাধ্যমে স্বস্তির কথা জানিয়ে পোস্ট করেন নেটিজেনরা।

পথচারী রবিউল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। গরমে প্রতিদিন ক্লান্ত হয়ে যেতাম। এলাকায় বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকা নামাজও পড়েছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে বৃষ্টি হলো। এখন ভালো লাগছে। এতোদিন দাঁড়িয়ে বসে থাকলেও ঘাম ঝরতো। রাতে বিদ্যুৎ গেলে ঘুমাতে পারতাম না। এখন ভালো লাগছে।

আশিকুল, হৃদয়, সজিব নামে কয়েকজন যুবক বলেন , বৃষ্টি নামার পরই ভিজেছি। শরীর জুড়িয়ে গেছে। এখন ঠান্ডা হাওয়া আরও ভালো মনে হচ্ছে। সড়কে সব ধুলাবালি সব পরিষ্কার হয়ে গেল।

উল্লেখ্য, বৃষ্টির জন্য টানা তিনদিন কটিয়াদী পাইলট স্কুল মাঠে নামাজ আদায় করেও দোয়া চাওয়া হয়েছে। বৃষ্টি আসায় সবার মনেই প্রশান্তি নেমে এসেছে।

;

খাগড়াছড়িতে বজ্রপাতে আরও এক জনের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খাগড়াছড়ি
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাগড়াছড়ির রামগড়ে বজ্রপাতে গনজ মারমা (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। 

রোববার (৫ মে) ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে রামগড়ের সদর ইউনিয়নের হাজা বৈদ্যপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত গনজ মারমা (৫৫) ওই এলাকার মৃত কংজ মারমার ছেলে। এ সময় গনজ মারমার গোয়ালে তাকে দুইটি গরুও মারা যায়।

রামগড় সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম জানান, রোববার ভোরে বজ্রপাতে এক জনের মৃত্যুর খবর স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

এদিকে, রামগড়ে মৌসুমের প্রথম কাল বৈশাখে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বসতবাড়ি, গাছপালা ও বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন। রোববার ভোরে কাল বৈশাখীতে রামগড়-জালিয়াপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ ছাড়া, দারগাপাড়া ও রামগড় বাজারে কালবৈশাখীতে বসতবাড়ির টিন, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ে। 

রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতা আফরিন জানান, বজ্রপাতে নিহতের পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া কালবৈশাখীতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলমান আছে।

এর আগে, রোববার ভোরে জেলার দীঘিনালার মধ্যবেতছড়িতে বজ্রপাতে বসতবাড়িতে আগুন লেগে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়।

;