যুবলীগ নেতার লাথিতে গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠ, জীবন-শঙ্কায় প্রসূতি



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
যুবলীগ নেতার লাথিতে গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠ, জীবন-শঙ্কায় প্রসূতি

যুবলীগ নেতার লাথিতে গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠ, জীবন-শঙ্কায় প্রসূতি

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মিরপুরে এক গর্ভবতী নারীকে মারধরের পর সন্তান ভূমিষ্ঠের ঘটনা ঘটেছে। নির্ধারিত সময়ের আগে সন্তান ভূমিষ্ঠের ঘটনায় নবজাতক ও মা রয়েছেন জীবন-শঙ্কায়। জ্ঞান ফেরেনি চার দিনেও। অভিযোগ উঠেছে, এই মারধরের নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা। তবে ভয়ে এ ঘটনার মামলায় নাম আসেনি ওই যুবলীগ নেতার। অন্যদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার দাবি, তিনি নিজে অসুস্থ, তাই তদন্তের কাজ শুরু করতে পারেননি।

ঘটনাটি গত ২১ এপ্রিলের। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মিরপুরের পল্লবী থানার সেকশন ১২ নম্বরের বালুরমাঠ এলাকার বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামান। তার পাশেই নির্মাণ শ্রমিক স্বামী আব্দুল মালেক ও ৭ বছরের সন্তানকে নিয়ে বসবাস করেন বড় মেয়ে মোসা. মুক্তা (২৫)।‍ মালেক-মুক্তা দম্পতি দ্বিতীয় সন্তানের অপেক্ষায় ছিলেন। সন্তানসম্ভবা মুক্তা গত ২১ এপ্রিল বিকালে শিশুপুত্র মোক্তাদিরকে নিয়ে বাসার সামনে হাঁটতে বের হন। আর এই হাঁটতে যাওয়াই যেন কাল হলো তার।

একই সময়ে বাসার সামনে ফুটবল খেলছিল স্থানীয় কয়েকটা ছেলে। হাঁটাহাঁটির এক পর্যায়ে রাস্তার পাশে প্রস্রাব করে মুক্তার শিশুপুত্র মোক্তাদির। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে খেলতে থাকা তরুণেরা। অবুঝ শিশু প্রস্রাব করে দিয়েছে, বিষয়টি ভুল হয়েছে জানিয়ে বাসায় ফিরতে যান মুক্তা। কিন্তু তাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে থাকে ওই তরুণেরা। গালাগালির প্রতিবাদ করায় গর্ভবতী মুক্তাকে মারধর শুরু করে তারা। মেয়েকে বাঁচাতে মুক্তার মা এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। এরপর মা ও বোনকে উদ্ধারে এগিয়ে আসলে মুক্তার ভাই মেহেদী শেখও মারধর করে তরুণেরা।

সাত থেকে আটজনের মারধরে আহত হন মুক্তা। এই মারধরে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. আনোয়ার। মারধরে অংশ নেয় আনোয়ারের ছেলে, স্ত্রী ও নাঈমসহ স্থানীয় কয়েকজন। আনোয়ারের কিল, ঘুষি ও লাথিতে ঘটনাস্থলেই রক্তপাত শুরু হয় মুক্তার। পরবর্তীতে মুক্তাকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে প্রথমে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যান তার বাবা অহিদুজ্জামান। কুর্মিটোলা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালেও রাস্তায় অবস্থার অবনতি হতে থাকলে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান অহিদুজ্জামান। সেখানেই নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান প্রসব করেন মুক্তা।

যুবলীগ নেতা আনোয়ারের মারধরের কারণে পেটের সন্তানও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। মাথায় প্রচণ্ড আঘাতের কারণে ঘটনার চার দিনেও জ্ঞান ফেরেনি মুক্তার। বেসরকারি হাসপাতালে সন্তান প্রসব হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তাকে বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল পাঠিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

মুক্তার বাবা অহিদুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঘটনার সময়ে আমি বাসায় ছিলাম না। ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে আমার মেয়ে, স্ত্রী ও ছেলেকে রাস্তা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমার স্ত্রীর মাথা ফেটেছে। আমার ছেলেকে আহত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমার গর্ভবতী মেয়েটার। মারধর ও পেটে আঘাতের কারণে সময়ের আগেই সন্তান প্রসব হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও মাথায় আঘাতের কারণে এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি। ওর সন্তান জন্মদানের তারিখ ছিল ২৯ মে।

তিনি বলেন, মেয়ের সন্তান জন্মের আনন্দ আমাদের নেই। আমরা মেয়ের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি।

বৃহস্পতিবার মুক্তার শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডাক্তার সিটি স্ক্যানসহ বেশ কিছু টেস্ট দিয়েছেন। এছাড়া মেয়ের মাথার পাশাপাশি পেট ও গোপনাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেছে।

কারা কী কারণে হামলা করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মেয়ে বাসার সামনে হাঁটতে বের হয়েছিল। এই সময়ে কয়েকজন খেলতে ছিল। রাস্তার পাশে আমার নাতি প্রস্রাব করে। সেই প্রস্রাব তাদের বলে লাগায় আমার মেয়েকে গালাগালি করে। ভুল হয়েছে, জানিয়ে মেয়ে বাসায় যেতে চাইলে মারধর শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে আনোয়ার পেটে লাথি মারলে আমার মেয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। সেখানেই তার রক্তপাত শুরু হয়। রক্তপাত হওয়া আমার মেয়ে বাঁচার আকুতি জানালেও হামলাকারীরা তাকে আরও মারধর করে। এতে সে মাথায়ও আঘাত পায়। বারবার বাঁচার আকুতি জানালেও মেয়েকে উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। আমার মেয়েকে বাঁচাতে আসলে আমার স্ত্রী ও সন্তানকেও মারধর করা হয়। পরে খবর পেয়ে আমি দ্রুত ছুটে এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

মারধরের নেতৃত্ব দেওয়া যুবলীগ নেতা আনোয়ারকে মামলায় আসামি করা হয়নি বলে জানিয়েছেন অহিদুজ্জামান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জীবনের ভয়ে আনোয়ারকে আসামি করিনি। সে ভয়ংকর। তার ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। তাকে আসামি করলে আমরা বাঁচতে পারব না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করলে কেউ এলাকায় থাকতে পারবে? আমিও ভয়ে আনোয়ারের নাম মামলায় দিইনি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কেউই ভয়ে মুখ খুলতে চান না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, শিশুর রাস্তায় প্রস্রাবের মতো তুচ্ছ কারণে মুক্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করেন আনোয়ার, তার স্ত্রী, সন্তান ও সহযোগীরা। তাদের মারধরের কারণে গর্ভবতী মুক্তার প্রসবের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। মুক্তার রক্তে রাস্তা লাল হয়ে যায় কিন্তু আহত মুক্তাকে হাসপাতালে নিতে দিচ্ছিলেন না আনোয়ার ও তার সহযোগীরা। তিনি বারবার মুক্তার পেটে লাথি মারার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। এমনকি রাস্তায় ফেলে মুক্তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিলেন আনোয়ার।

জানা গেছে, বালুরমাঠ এক সময়ে বস্তি ছিল। সেই সময়ে কিশোর বয়স থেকেই নানা অপরাধে জড়িত ছিলেন আনোয়ার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন তিনি। নাম লেখান ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন যুবলীগে। থানা পর্যায়ের এক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে বাগিয়ে নেন পল্লবীর ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র সহসভাপতির পদ। আর এই পদই হয়ে ওঠে আনোয়ারের ক্ষমতার হাতিয়ার। যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে স্থানীয় কিশোর গ্যাং, মাদকের স্পট, চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ করেন। এলাকার কেউ অবাধ্য হলেই চলে নির্যাতন। আনোয়ারের হাতে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীর তালিকা দীর্ঘ। এই তালিকায় মুক্তা ছাড়াও আরও এক গর্ভবতী নারী রয়েছেন, স্থানীয় বাড়ির মালিক, দোকানদারসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ রয়েছেন। তবে কেউই আনোয়ারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস দেখায় না। বর্তমানে কোনো কমিটিতে পদ না থাকলেও নিজেকে পদধারী নেতা পরিচয় দিয়ে পল্লবী জুড়ে নানা অপরাধের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন আনোয়ার। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে যুবলীগ নেতা আনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বাসাও তালাবন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। মোবাইল ফোনেও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

মামলায় যুবলীগ নেতা আনোয়ারের নাম না থাকা প্রসঙ্গে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান বলেন, ভুক্তভোগী মামলায় নাম না দিলে আমরা কী করব। আমাদের তো কিছু করার নেই।

আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিরাজ আকন বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ আছি। তাই এই মামলায় এখনো কাজ করতে পারিনি। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তদন্তে যাদের নাম আসবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

   

রাজধানীতে দুই হোটেলে আগুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় আওতাধীন নীলক্ষেত মোড়ে ২টি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৫ মে) দিবাগত রাত ১টা ৫ মিনিটের দিকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়।

পরে খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী ফায়ার সার্ভিসের পলাশী ব্যারাকের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পলাশী ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার জিহান রহমান নাবিল বলেন, রাত ১টার পর নীলক্ষেতে আগুনের খবর পেয়েছি। আমরা সাথে সাথে ঘটনাস্থলে আসি।

তিনি আরও বলেন, প্রথমে ২টি দোকানে আগুন দেখতে পাই। যার একটি বড় এবং আরেকটি ছোট দোকান। তবে দুটি দোকানই ছিল খবারের দোকান। এখন আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত করা ছাড়া তাৎক্ষণিক বলা সম্ভব না। তবে ধারণা করছি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। তবে দোকান দুটির তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং আগুনে কোনও হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি বলে জানান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গভীর রাতে হঠাৎ করেই নীলক্ষেত মোড়ের সুলতানী ভোজ ও সিপি ফাইভ স্টার নামের দুইটি হোটেলে আগুন দেখা যায়। পরে নিরাপত্তা কর্মীরা সাথে সাথেই ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়।

 

;

পটুয়াখালীতে সাড়ে তিন হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক ৪



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পটুয়াখালী পৌরসভা এলাকা থেকে ৩ হাজার ৭ শত ৫ পিস ইয়াবাসহ ৪ জনকে আটক করেছে পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে পটুয়াখালী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের নতুন বাজারে অবস্থিত হোটেল ছোয়া-এর ৬ষ্ঠ তলার একটি রুম থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামের ওসমান হাওলাদারের ছেলে মো. আলমগীর হোসেন, একই উপজেলার আমতলী পৌরসভার সন্তু নাথ চ্যাটার্জির ছেলে সজল চন্দ্র চ্যাটার্জি (৩০), পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের
নুর মোহাম্মদ আকনের ছেলে মো. সবুজ আকন (২৫) ও গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়ন এর মৃত কাসেম হাওলাদারের ছেলে মো. মহসীন হাওলাদার।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসিম বলেন, আমাদের একটি চৌকস টিম পটুয়াখালী পৌরসভার নতুন বাজারে অবস্থিত হোটেল ছোয়ায় অভিজান চালিয়ে ৩ হাজার ৭ শত ৫ পিস ইয়াবাসহ ৪ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। তারা সকলেই পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী, তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সদর থানায় মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।

;

স্বস্থির বৃষ্টিতে ভিজলো ময়মনসিংহ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহের পর ময়মনসিংহে দেখা মিললো স্বস্তির বৃষ্টির। শনিবার (৪ মে) রাত ৮টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়।

জেলার অধিকাংশ এলাকা গফরগাঁও, নান্দাইল, ঈশ্বরগঞ্জ, তারাকান্দা, ফুলপুর, ভালুকা, ফুলবাড়িয়া, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, মুক্তাগাছায় সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি পড়া শুরু করে। জেলার অন্যান্য উপজেলার আকাশ মেঘলা দেখা যায়।

এক পশলা বৃষ্টিতে নাগরিক জীবনে স্বস্তির আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। অথচ গত সপ্তাহেও প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছিলেন জেলার মানুষজন।

অনেকেই আবার খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজেছেন মনের আনন্দে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে মনের আনন্দ প্রকাশ করে পোস্ট দেন।

গফরগাঁও পৌরসভার বাসিন্দা রাজীব আহমেদ বলেন, রাত সাড়ে আটটা থেকে বারোটা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে সেই সাথে প্রচন্ড রকমের বজ্রপাত হয়েছে।

মুক্তাগাছার বাসিন্দা ইদ্রিস আলী বলেন, তীব্র তাপদাহের পর সন্ধ্যার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টিতে শহরের মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরেছে। তবে, গ্রামে কৃষকের ধান কাটা শুরু হয়েছে। তাদের কিছুটা অসুবিধা হবে।

ভালুকার মিজানুর রহমান বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে ভালুকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরেছে।

চর ইশ্বরদিয়া এলাকার কৃষক জয়নাল বলেন, গত কয়েকদিন তীব্র গরম গরম ছিল। ধান কাটতে খুব কষ্ট করতে হয়েছে। এই বৃষ্টিতে গরম কিছুটা কমে আসবে।

;

তদন্ত কমিটি গঠন

সুন্দরবনে লাগা আগুনের কাছেই যেতে পারেনি দমকল বাহিনী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়ার ছিলা এলাকায় লাগা আগুন এখনও জ্বলছে। আগুন নেভাতে ফায়ারসার্ভিস বা দমকল বাহিনী এলাকায় গেলেও আগুনের কাছেই যেতে পারেনি। সন্ধ্যা হওয়ায় এবং কাছাকাছি কোনো পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা যায়নি। রোববার (৫ মে) সকাল থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হবে। এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) কাজী নুরুল করিম রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নুরুল করিম বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহ ও দূর্গম এলাকায় আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকল বাহিনী নিয়ে ছুটে যায়। প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণে পানির উৎস খুঁজি। কিন্তু কাছাকাছি কোনো পানি পাওয়া যায়নি। অনেক দূরে ভোলা নদী থেকে পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এরই মধ্যে সন্ধ্যা নেমে যায়। তাই আগুনের কাছে আর যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় এলাকাবাসী এবং বনরক্ষীদের চেষ্টায় অল্প পানি সরবরাহ করে প্রাথমিকভাবে আগুন যাতে ছড়াতে না পারে সেটি করা হয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে আমরবুনিয়া এলাকার ভোলা নদী থেকে পানির সংযোগ স্থাপন করে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আগুন বেশিদূর ছড়াতে পারেনি। অল্প অল্প করে আগুন জ্বলছে, রাতের মধ্যেও ছড়ানোর সম্ভব নাই।

কি করে আগুন লেগেছে জানতে চাইলে ডিএফও কাজী নুরুল করিম বলেন, এখনও সঠিক কারণ বের করা যায়নি। তবে স্থানীয়রা একেকজন একেক তথ্য দিচ্ছে। সব তথ্যই আমলে নিয়ে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷

কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধার স্টেশন অফিসার মো. ওবায়দুর রহমান এবং ধানসাগর স্টেশন অফিসার মো. রবিউল ইসলাম। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে আগুন লাগার সঠিক কারণের প্রতিবেদন জমা দিবেন এই কমিটি।

বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার (৪ মে) দুপুরে প্রথমে আগুন লাগে সুন্দরবনের আমরবুনিয়ার ছিলা এলাকায়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় আগুন ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর স্থানীয় এলাকাবাসী ও বনরক্ষীদের সমন্বয়ে প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। পরে বাগেরহাট ও মোরেলগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আসে। কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলে দমকল বাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করতে পারেনি।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক মো. সাইদুল আলম চৌধুরী বলেন, বিকেলে আগুনের খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও নানা প্রতিকূলতার কারণে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেনি। তবে আগুন লাগার ঘটনাস্থল চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে।

;