ব্ল্যাকে টিকিট কিনে বিপাকে ১৩ যাত্রী, কালোবাজারির নাম 'জসিম'



মাসুম বিল্লাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বুড়িমারী (লালমনিরহাট) থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন বুড়িমারী এক্সপ্রেস। এই ট্রেনে দ্বিগুণ দামে ঢাকার টিকিট কিনেও যাত্রীদের পড়তে হয়েছে চরম বিপাকে। হাতে টিকিট থাকা সত্বেও কর্তৃপক্ষের কাছে সাভ্যস্ত হতে হয়েছে বিনা টিকিটের অবৈধ যাত্রী হিসেবে। শুধু কি তাই? সিনেমার মতো যেন অভিনয় দেখতে থাকেন ট্রেনের অন্য যাত্রীরা। আর দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা পালন করে ক্যামেরাম্যান এবং সাংবাদিকের ভূমিকা।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এমনই হতাশাজনক এক ঘটনা ঘটেছে ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেসে'। যাত্রীরা দ্বিগুণ মূল্য দিয়ে টিকিট কিনেও পড়তে হয়েছে তোপের মুখে। এদিন ট্রেন সংশ্লিষ্টদের প্রশ্নের কোনও সদত্তোর দিতে পারেনি পাঁচ টিকিটে থাকা ‘ঞ’ বগীর ১৩ যাত্রী। তাদের মধ্যে দুই সন্তানসহ যেন দুমরে-মুচরে গেছেন এক নারীও। কারণ তাদের টিকিটগুলো ছিল ব্ল্যাকে ক্রয় করা।

কিভাবে পেয়েছেন এসব টিকিট?  এমন প্রশ্নের উত্তরে যাত্রীদের মুখে ছিল একটিই নাম 'জসিম'। প্রশ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রেতা কে এই জসিম?

এদিন বুড়িমারী এক্সপ্রেসে নাটোর যাচ্ছিলেন বার্তা২৪.কমের গাইবান্ধার এই প্রতিবেদক। তিনি গাইবান্ধা রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠেন। এদিন বুড়িমারী এক্সপ্রেস রাত ১০ টা ৫৬ মিনিটে গাইবান্ধা রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে গিয়ে বোনারপাড়া স্টেশনে প্রবেশ করে রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে। সেখান থেকে ‘ঞ’ বগিতে বেশ কিছু যাত্রী ওঠেন। ট্রেনে উঠেই এক নারী যাত্রীসহ চারজন যাত্রীর মধ্যে আসনে বসা নিয়ে বিবাদ বাধে। কারণ তাদের হাতে থাকা টিকিটের প্রত্যেকটি টিকিটই ছিল একই আসন নম্বর। মূলত কোনটা কার আসন সেটিই নিয়েই বিবাদের শুরু হয়। পরে উপস্থিত যাত্রীদের সহায়তায় বিষয়টির সমাধান হয় এবং ঞ- ৫, ৬, ৭ ও ১১ নম্বর আসনে বসেন বিবাদে ওই নারীসহ জড়ানো যাত্রীরা।

বিবাদ হওয়া চার যাত্রীর কাছে থাকা টিকিটে দেখা যায়, টিকিট দুটি ১৩ এপ্রিল একই তারিখে ক্রয় করা। যার একটিতে ঞ-৫,৬,৭, ও ১১ এই চারটি আসন এবং নারীর হাতের অপর টিকিটেও রয়েছে ঞ-৫ ও ৭ ও ১১ আসন নম্বর। ওই টিকিটে যাত্রীরা বোনারপাড়া থেকে ঢাকা পর্যন্ত যাত্রা করবেন।

ঘটনার এখানেই শেষ নয়; 

এদিন রাত ১ টার দিকে বুড়িমারী এক্সপ্রেস যখন সান্তাহার-নাটোর স্টেশনের মাঝামাঝিতে তখন ট্রেনের এই ‘ঞ’ বগিতে আসেন টিকিট কালেক্টর 'টিটিই' গোলাম হাফিজ রিজু। এসময় টিকিট চেক করার এক পর্যায়ে বিতর্কিত এই দুটি টিকিটসহ একই ধরণের আর পাঁচটি টিকিট দেখতে পান তিনি। যা দেখে ওই সব টিকিটের যাত্রীদের সাথে চটে যান টিকিট কালেক্টর। রাগান্বিত হয়ে কোথায় আর কার কাছ থেকে কেনা হয়েছে এসব টিকিট এমন প্রশ্নে দুই সন্তানসহ ঢাকাগামী এক নারী ছাড়া যাত্রী ১১ যাত্রীই বলেন একটিই নাম জসিম। তারা বোনারপাড়ার জসিমের থেকে দ্বিগুণ দামে ক্রয় করেছেন এসব টিকিট। এসময় টিটিই'র সাথে থাকা পুলিশ সদস্য তাদের ছবি ও কথা ভিডিও রেকর্ড করতে থাকেন। এদিন শত আপত্তি সত্ত্বেও ওই নারীরও ভিডিও বক্তব্য রেকর্ড করেন দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য। এ সময় ওই নারী চরম বিব্রতবোধ করে কাপড়ে ভিতরে মুখ লুকানোর চেষ্টা করেন।

এদিনের ব্ল্যাকে ক্রয় করা টিকিটগুলো বিশ্লেষন করে দেখা যায়, একই তারিখে ক্রয় করা ওই সব টিকিটে আসন সংখ্যা ছিল ১৩ টি। যার দুটি টিকিট ৮ যাত্রী, একটিতে ২ যাত্রী এবং অপর দুটি টিকিটে আসন সংখ্যা ৭ টি দেওয়া থাকলেও যাত্রী ৩ জন। টিকিট ক্রয়ে যে এনআইডি, মোবাইল নম্বর, এবং যাদের নামে ক্রয় করা হয়েছে তাদেরকে যাত্রীদের কেউই চেনেন না। শুধু তাই নয়, তাদের মধ্যে পাঁচ যাত্রীর কেউ কাউকেই চেনেন না!

১৩ যাত্রীর হাতে থাকা পাঁচ টিকিটের একটিতে দেখা যায়, ১৩ এপ্রিল তারিখে ক্রয় করা। ক্রয়কারীর নাম মো.আব্দুর রাজ্জাক বেরারি। টিকিটে এনআইডি নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে ৮৬৭...৬৮৪ এবং মোবাইল নম্বর ০১৩০......৬৩৩ ।

এছাড়া আরেকটি টিকিটে দেখা যায় টিকিট ক্রয় কারীর নাম হাওয়া আকতার হাসি। যেখানে এনআইডি নম্বর ৩৩১...৩৭৯, আর মোবাই নম্বর ব্যবহার হয়েছে ০১৭০...৫৮১। 

ওইসব টিকিটে যাত্রীদের মধ্যে একজন শাহিন (৫৫)। তার বাড়ি বোনারপাড়ায়। তিনি ফার্নিচারের ব্যবসা করেন, জরুরী কাজে ঢাকায় যাচ্ছেন তিনি। তার কাছে থাকা টিকিটের আসন নম্বর ঞ-৫, ৬, ৭ ও ১১। টিকিট দেওয়ার সময় তাকে বলা হয়েছে তার আসন নম্বর ঞ-৭। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে অপর তিনটি আসন কার? এছাড়া তার এই টিকিটে ক্রয়কারীর নাম দেখাচ্ছে আব্দুর রাজ্জাক বেরারি।

এ সময় জানতে চাইলে যাত্রী শাহিন বলেন, ‘কয়েকদিন চেষ্টা করেও টিকিট পাইনি। পরে জসিমের থেকে বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ দামে টিকিট কিনেছি। কিছু করার নাই সবখানেই একই অবস্থা। যেতে হবে তো!’

আপনার হাতের টিকিটে আব্দুর রাজ্জাক কে? এনআইডি আর এই মোবাইল নম্বরইবা কার? এমন প্রশ্নের যাত্রীর সরল উত্তর, মোবাইল নম্বর এবং এনআইডি আর আব্দুর রাজ্জাক কে আমি জানিনা।

এছাড়া যাত্রীদের মধ্যে ওই নারীর বাড়ি সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ার শিমুলতাইর গ্রামে। মেয়ে মাহমুদা (১১) ও ছেলে মামুন (৬) কে সাথে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন তিনি। তার হাতের টিকিটে আসন নম্বর ছিল ঞ-৫, ৭, ও ১১ নম্বর। ওই নারীর দাবি তাকে বলা হয়েছে তার আসন নম্বর ৫ ও ৭। তাহলে কোচের ১১ নম্বর আসনের যাত্রী কে?

এ সময় জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, ঢাকা যাওয়ার জন্য আমার স্বামী দুটি টিকিট ১৭০০ টাকা দিয়ে কিনেছে। স্টেশন থেকে নয়। তবে, কার থেকে কিনেছে তা জানা নেই ওই নারীর। তিনি বলেন, টিকিট থাকার পরেও এমন ঘটনা খুব কষ্টের। এসময় পুলিশের নেওয়া ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিবে কি না-এমন প্রশ্ন করে আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন তিনি।

ব্লাকে টিকিট ক্রয় করা আরেক যাত্রীর নাম শাকিল (২৩) । তবে, শাকিলের কাছে একটি নয় রয়েছে দুটি টিকিট। ওই দুই টিকিটের ৮টি আসনে ঢাকা যাচ্ছেন তারা আট যুবক।

শাকিলের হাতে থাকা দুটি টিকিটই কাউন্টার থেকে প্রিন্ট করা। যার মধ্যে ১, ৪,২৮ ও ৩০ নম্বরের ৪ টি আসনের একটি টিকিটে যাত্রীর নাম দেখাচ্ছে হাওয়া বেগম।  

হাওয়া বেগম কে? শাকিলের কাছে টিটিই'র এমন প্রশ্নে শাকিল বলেন, চিনিনা। তাহলে তার নামের টিকিটটি তোমার হাতে এলো কিভাবে? শাকিল বলেন, বোনারপাড়ার জসিম ভাইয়ের থেকে প্রতিটি টিকিট ৮০০ টাকা করে কিনেছি। এসময় জসিমের নাম শুনে ক্ষিপ্ত হন টিটিই। এসময় টিটিই সহ ট্রেন সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি এসব কালোবাজারিতে টিকিট ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে বোনারপাড়া স্টেশনের বর্তমান স্টেশন মাস্টার খলিলও জড়িত আছে বলে অভিযোগ তোলেন।

এ সময় জানতে চাইলে টিকিট কালেক্টর গোলাম হাফিজ রিজু বার্ত২৪.কমকে বলেন, এই ঞ বগীর পাঁচটি টিকিটে থাকা ১৩ যাত্রীর প্রত্যেকেই ব্ল্যাকে টিকিট কিনেছেন। বিধি মোতাবেক তারা প্রত্যকেই অবৈধ যাত্রী। কেননা, তাদের কাছে থাকা টিকিট ক্রয়ে যে এনআইডি ব্যবহার করা হয়েছে সেই নামের বা সেই এনআইডিধারীর সাথে যাত্রীদের কোন মিল নেই । তাদের সবগুলো টিকিট ব্ল্যাকে পাওয়া। নিয়ম অনুযায়ী এসব যাত্রীদের এখন জরিমানাসহ টিকিট ক্রয় করতে হবে। যদিও তিনি তা করেন নি।

কে এই জসিম?

সেদিনের একটি বগীর ১৩ যাত্রীর কাছে ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রেতা কে এই জসিম? তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করেছেন বার্তা২৪.কমের গাইবান্ধার এই প্রতিবেদক। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে-

সাঘাটা উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের বীর মুক্তযোদ্ধা মৃত হায়দার আলীর ছেলে 'জসিম'। তিনি এক সময় বোনারপাড়া স্টেশনে ব্যবসা করতেন। জসিম ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর টিকিট কালোবাজারে বিক্রির সময় বোনারপাড়া থেকে তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশ। সে সময় তার (জসিম) কাছ থেকে ট্রেনের চারটি টিকিট উদ্ধার করা হয়। পরে একই তারিখে রেলওয়ে পুলিশ বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে তাকে কারাগার পাঠানো হয়। যার মামলা নম্বর-২। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জসিম মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, "এখন টিকিট সব অনলাইনে, আর টিকিটে আমার নাম বা আমার নম্বর (এনআইডি-মোবাইল) নাই। বোনারপাড়াতে মানুষকে ভালবেসে কিছু করতে যায়া (গিয়ে) আমার নামে একটা ঘটনা ঘটে গেছে। তারপর থেকে আমি অনেকটাই দূরে।

এ সময় তিনি বলেন, বোনারপাড়া স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে সবাই এই ব্যবসার সাথে জড়িত। মূলত তারাই এসব টিকিট বিক্রি করে যদি কোনো সমেস্যা হয়, তারা আমার (জসিম) নামটা তাদেরকে বলতে বলে দেয়।

এ সময় তিনি আরো বলেন, ট্রেনে সেদিনের ঘটনা আমি শুনেছি, যাত্রীরা নাকি আমার নাম বলেছে। আপনিও নাকি সেদিন ট্রেনে ছিলেন আমি জানি।

বোনারপাড়া রেলওয়ে ষ্টেশনের ষ্টেশন মাস্টার খলিল মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, টিকিট কালোবাজরীর বিষয়টি দেখার দায়িত্ব জিআরপি এবং আরএমপি পুলিশের। তারা কী করে? টিকিট এখন শতভাগ অনলাইনে। যদি কেউ আমার কথা বলে থাকে তা মিথ্যা বলেছে। আমি জসিমকে সেরকমভাবে চিনিওনা। 

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন,' অভিযুক্ত জসিমকে ২০১৯ সালে কালোবাজারে টিকিট বিক্রিকালে হাতেনাতে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় রেলওয়ে পুলিশ। এই অভিযোগের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট (লালমনিরহাট) আব্দুল্লাহ আল মামুন মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে শতভাগ টিকিট এখন অনলাইনে।

তিনি বলেন, অনেক সময় সিন্টিকিটেরা এক সিটের টিকিট একাধিক ব্যক্তিকে দিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে ট্রেনে থাকা সংশ্লিষ্টরা যাদের টিকিটের সাথে নাম বা এনআইডির মিল পায় তাদেরকে ওই সীটে বসিয়ে দেয় এবং অন্যজনকে জরিমানাসহ নতুন টিকিট করে দেওয়া হয়।

তবে, ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইন করা সত্ত্বেও এখনো শতভাগ কালোবাজারী নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি স্বীকার করে তিনি বলেন, একজন কৃষক যখন কোনো দোকানে টিকিট নিতে যান, আর সেই দোকানদার যদি সিন্ডিকেট হয় তাহলে তার আইডি দিয়েই ওরা চারটি টিকিট ক্রয় করে বেশি দামে বিক্রি করে থাকে।

এ সময় ষ্টেশনের আশেপাশে টিকিট কালোবাজারী থাকার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ষ্টেশনের আশেপাশে চিপায়-চাপায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারীর একটি সিন্ডিকেট আছে। যারা টিকিট কেনে তারাও বিষয়টি জানেন। বিষয়টি একটি ফৌজদারী অপরাধ।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহাত আহমেদ মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিষয়টি জানলাম; অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পুলিশ কালোবাজারী নির্মূলে শতভাগ চেষ্টা করছে, তৎপর রয়েছে। টিকিট সিন্ডিকেট ধরতে রেলওয়ে পুলিশের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই।’

 

   

মেহেরপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরের মুজিবনগরের বল্লভপুর নামক স্থানে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবুজ হোসেন (২৪) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৮ মে) রাত পৌনে দশটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের আরেক আরোহী তোফিক উমর (২০) গুরুতর আহত হন।

নিহত সবুজ হোসেন মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়িবাকা গ্রামের পাখি শেখের ছেলে।

জানা গেছে, মুজিবনর উপজেলার বাগোয়ান গ্রাম থেকে মোটরসাইকেলযোগেবাড়ি ফিরছিলেন সবুজ ও তার বন্ধু তৌফিক উমর। মুজিবনগর-দর্শনা সড়কের বল্লভপুর নামক স্থানে পৌঁছুলে দ্রুত গতির মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ সময় মোটরসাইকেলসহ আরোহীরা রাস্তার পাশের এক সাইনবোর্ডের সাথে সজোরে ধাক্কা খান। এতে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই সবুজের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তৌফিক উমরকে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন।

তৌফিকের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল করেজ হাসপাতালে রেফার করেছেন চিকিৎসকরা।

দুর্ঘটনার বিষয়ে মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জল দত্ত বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়ে কোন অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

;

বসুন্ধরায় আইএসডি স্কুলের সামনে গুলি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বসুন্ধরায় আইএসডি স্কুলের সামনে গুলি

বসুন্ধরায় আইএসডি স্কুলের সামনে গুলি

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে(আইএসডি) গুলির ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (০৮ মে) দুপুর ২টার দিকে স্কুল প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে। এতে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আহসান গ্রুপের মালিকের সন্তানের দেহরক্ষীদের বন্দুক থেকে গুলি করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে আইএসডি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জোর প্রচেষ্টাও চলছে। কিন্তু এ ঘটনায় অন্য ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকগণ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে আইএসডি স্কুলের এক ছাত্রের অভিভাবক জানান, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন বন্দুকধারী দেহরক্ষীদের প্রবেশাধিকার থাকবে? এটা তো দেশের আইন বহির্ভূত। গুলিটা আমার সন্তানের শরীরেও আঘাত হানতে পারতো। অথবা অন্য কোনো ছাত্রছাত্রী আহত-নিহত হলে, এর দায় কে নিতো? আইএসডি স্কুল এবং বসুন্ধরা আবাসিক কর্তৃপক্ষের উচিত, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কোনো ভিআইপি'র দেহরক্ষীকে স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখা।

গুলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গুলশান বিভাগের ভাটারা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা।

তিনি বলেন, দুইটা গাড়িতে বাচ্চাদের নিতে এসেছিল। একটা গাড়িতে গানম্যান/বডিগার্ড ছিল। তাদের বন্দুক থেকে বের হওয়া অপ্রত্যাশিত গুলিতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে পুলিশ কাজ করছে।

;

ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে বিল পাসের সুপারিশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে বিল পাসের সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এসংক্রান্ত সুপারিশসহ বিলের উপর প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৮মে) রাতে ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিল উপর প্রতিবেদন উত্থাপন করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম।

সংসদে উপস্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলে উল্লিখিত, এর সর্বত্র উল্লিখিত ‘সচিব’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ শব্দসমূহ এবং ‘সচিবের’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তার’ শব্দসমূহ প্রতিস্থাপিত হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে আর্থিকভাবে শক্তিশালীকরণ, সরকার প্রদত্ত বরাদ্দের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর উপায় নির্ধারণ এবং ইউনিয়ন পরিষদ আইনকে আরো যুগোপযোগী ও সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন-২০২৪’ সংশোধনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সম্মানী প্রদানের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ইহার মাধ্যমে কোনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বরখাস্তকালীন সময়ে ভাতা প্রদানের বিষয়ে কোনো আইনগত জটিলতা থাকিবে না।

এতে আরো বলা হয়েছে, কোনো এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণা বা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করবে। গ্রাম আদালত পরিচালনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের অর্পিত দায়িত্ব পালন ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলে গ্রাম আদালতের কার্যক্রমকে আরো বিস্তৃত ও কার্যকর হবে। এছাড়া বিলে ‘ইউনিয়ন পরিষদ সচিব’ নাম পরিবর্তন করে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

;

দাগনভূঞায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. আরাফাত (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৭ মে) রাত নয়টার দিকে সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীপুর (৫ নম্বর ওয়ার্ড) এর আজিজ উল্যাহ হাফেজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার (৮মে) বুধবার বিকালে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

নিহত আরাফাত একই এলাকার আমির উদ্দিন মোল্লা বাড়ির মো. লোকমান হোসেনের ছেলে। সে রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করত। তিন ভাইয়ের মধ্যে নিহত আরাফাত সবার ছোট।

স্থানীয়রা জানান, ওইদিন রাত নয়টার দিকে আরাফাত তার ভাইসহ ওই গ্রামের আজিজ উল্যাহ হাফেজের বাড়ি নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের কাজ করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত বৈদ্যুতিক মোটরের সুইস দিতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরাফাতকে মৃত ঘোষণা করে।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন স্বপন আরাফাতের মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আরাফাত নামে এক যুবকের মৃত্যুর সংবাদ শুনেছি। আমরা তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।

;