চিফ হিট অফিসারের পরামর্শেই কাজ চলছে: মেয়র আতিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, চিফ হিট অফিসার (সিএইচও) বুশরা আফরিনের পরামর্শ অনুযায়ী তাপদাহ মোকাবিলায় কাজ চলছে।

চিফ হিট অফিসার পরামর্শ দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি একজন একক ব্যক্তি। তিনি তো কাজগুলো বাস্তবায়ন করবেন না। তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, কিন্তু কাজগুলো আসলে আমাদের সকলকে করতে হবে। তার পরামর্শেই জনগণকে স্বস্তি দিতে আমরা এই কাজগুলো করছি।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বায়ু দূষণ রোধ ও তীব্র তাপদাহে শহরকে ঠাণ্ডা রাখতে ডিএনসিসির ওয়াটার স্প্রে (পানি ছিটানো) কার্যক্রম পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনকে নিয়োগ ও বেতন ভাতা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি দেখছি কয়েকদিন ধরে তাকে নিয়ে অনেকে কথা বলছেন। তিনি সিটি কর্পোরেশন থেকে বেতন পাচ্ছেন, আসলে এটা সঠিক নয়। সিটি কর্পোরেশন থেকে তিনি একটি টাকাও পান না। এমনকি সিটি কর্পোরেশনে তার কোনো বসার ব্যবস্থাও নেই। তার কোনো চেয়ারও কিন্তু নেই।

হিট অফিসার নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান (অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেসিলিয়েন্স সেন্টার (আরশট-রক)। সারা বিশ্বে ৭ জন চিফ হিট অফিসার তারা নিয়োগ করেছে এবং সাতজনই নারী।

এর আগে, বেলা সাড়ে ১১টায় মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম আগারগাঁওয়ের সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ সরণিতে এসে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের জন্য রাখা বিশেষ ভ্যান পরিদর্শন করেন এবং নিজে ট্যাব ছেড়ে পানি পান করেন। পরে স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টির মতো পানি ছিটানো শুরু হলে তিনি নিজে উচ্ছ্বসিত শিশু কিশোরদের সাথে ভেজেন এবং তাদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন মেয়র। আতিকুল ইসলাম বলেন, দুটি স্প্রে ক্যানন যেগুলো কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করে এগুলো প্রধান সড়কে পানি ছিটাবে। এগুলো বেশ বড় হওয়ায় গলির সড়কে প্রবেশ করতে পারবে না৷ গলির সড়কে পানি ছিটানোর জন্য দশটি ব্রাউজার কাজ করবে। এগুলোর মাধ্যমে সড়কগুলো ভিজিয়ে ঠাণ্ডা রাখা হবে। এছাড়াও ডিএনসিসির পার্কগুলোয় স্প্রে ক্যাননের মতো কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পার্কগুলোয় কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, চিফ হিট অফিসার (সিএইচও) বুশরা আফরিনের পরামর্শে বর্তমানে চলমান তীব্র তাপদাহে জনগণকে স্বস্তি দিতে সড়কে পানি ছিটানো এবং ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে খাবার পানি সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি বিশেষ ভ্যানগাড়ি (৫০০ লিটার পানির ট্যাংক সম্বলিত) পথচারীদের পানি পান করানোর জন্য নামানো হয়েছে। ভ্যানগুলো বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবে। এই ভ্যানগুলো ছোট আকারে করা হয়েছে যেন শহরের অলি গলিতে প্রবেশ করতে পারে। পথচারী এবং শ্রমজীবী মানুষ যেন পানি পান করতে পারেন।

নগরবাসীকে আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নগরবাসীর প্রতি আমার তিনটি আহবান। ১, আমি ডিএনসিসি এলাকার দোকানদার, ব্যবসায়ী ও মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দদের অনুরোধ করছি আপনারা প্রতিটি দোকান, শপিংমল, মার্কেটের সামনে পানি খাওয়ার জন্য একটি ড্রামের ব্যবস্থা রাখবেন। সবাই যেন পানি খেতে পারে। ২, আমরা গতবছর ৮০ হাজার গাছ লাগিয়েছি। এই বছর আরও ১ লাখ ২০ হাজার গাছ লাগাবো। এই গাছগুলো লালন পালনের জন্য আমি নগরবাসীকে অনুরোধ করছি। সিটি কর্পোরেশন পরিচর্যা করছে, পাশাপাশি নগরবাসী যার যার বাড়ির সামনে, দোকানের সামনে যে গাছগুলো আছে সেগুলোর যত্ন নিবেন। ৩, এবছর ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আগেই আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। এডিস মশার সিজন শুরু হচ্ছে। সবাই যার যার বাড়ি, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আশপাশ পরিষ্কার রাখবেন যেন এডিসের লার্ভা না জন্মায়।

ওয়াটার স্প্রে পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফোরকান হোসেন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর হামিদা আক্তার (মিতা) প্রমুখ।

   

কুড়িগ্রামে শিশুদের নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত ‘বাংলার বৈশাখ, বাংলার নাচ’ শীর্ষক লোকনৃত্যের আসরের স্কুল পর্যায়ের জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কুড়িগ্রামে।

শুক্রবার ও শনিবার (১০, ১১ মে) এই দুইদিন এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে।  শুক্রবার (১০ মে) চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হওয়ার পর আগামী শনিবার (১১ মে) বিকেলে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং জেলা প্রশাসন কুড়িগ্রামের সহযোগিতায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এ বৈশাখী উৎসবের রং প্রাণে ছড়িয়ে দিতে এই আয়োজন কুড়িগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেলে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন।

তিনি জানান, একই স্কুলের ৫ জন শিশু নৃত্যশিল্পীকে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। এবারের এই প্রতিযোগিতায় সারাদেশের ৩০৫টি স্কুলের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫২৫ জন। এদের মধ্যে মেয়েশিশু ১ হাজার ৩৭২ জন এবং ছেলেশিশু ১৫৩ জন।

আনজির লিটন বলেন, জেলা থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকারী বিজয়ী দুইটি দল বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে। বিভাগীয় পর্যায়ের বিজয়ী দুইটি দল চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের জন্য আজ কুড়িগ্রামে এসেছে। শুক্রবার (১০ মে) চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রতিযোগিতায় ৮টি বিভাগ থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের প্রথম স্থান অধিকারী বিজয়ীরা অংশগ্রহণ করছে। এখান থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের ৩টি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩টি বিজয়ী স্কুলদলকে পুরস্কৃত করা হবে।

শনিবার (১১ মে) বিকেল ৩ টায় শেখ রাসেল অডিটোরিয়াম, কুড়িগ্রামে পুরস্কার প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক এ আয়োজনের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাংসদ হামিদুল হক খন্দকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ড. রওশন আরা বেগম, অতিরিক্ত সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়; আল আসাদ মো: মাহফুজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার, কুড়িগ্রাম; মো: কাজিউল ইসলাম, মেয়র, কুড়িগ্রাম পৌরসভা; প্রফেসর মির্জা মো: নাসির উদ্দিন, অধ্যক্ষ, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ; জনাব এস এম আব্রাহাম লিংকন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত, আইনজীবী ও সমাজ গবেষক। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ এবং শামীম আরা নিপা। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ।

এর আগে ২০১৮ সালে এই প্রতিযোগিতা প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছিল চট্টগ্রামে। এরপর ২০১৯ সালে রাজশাহীতে ২য় বারের মতো এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। করোনার প্রভাবে দীর্ঘ বিরতির পর এবছরের অনুষ্ঠান ৩য় বারের মতো কুড়িগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো: মঞ্জুরুল কাদির বলেন, ইতোমধ্যে সব বিভাগ থেকে প্রতিযোগীরা আসতে শুরু করেছে। আমরা তাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করছি।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরিফ বলেন, অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও আগামী শনিবার (১১ মে) বিকেলের পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুড়িগ্রামের সর্বস্তরের জনগণকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।

;

সাতক্ষীরার বাজারে গোপালভোগ, বোম্বাই, গোপালখাস আম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরায় গাছ থেকে আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। আমের গুণগত মান বজায় রেখে নিরাপদে আম বাজারজাত করতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময় অনুযায়ী জেলায় আম সংগ্রহ শুরু করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে আম সংগ্রহের কার্যকারিতা উদ্বোধন করেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম। সদর উপজেলা কুখরালীর আমচাষি মোকছেদ মোড়লের আম বাগান থেকে এসব আম সংগ্রহ করা হয়।

এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমদের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপপরিচালক ইকবাল আহমেদ, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ।

সাতক্ষীরার বাজারে গোপালভোগ, বোম্বাই, গোপালখাস আম, ছবি- বার্তা২৪.কম 

সাতক্ষীরা সদরের আমচাষি মোকছেদ আলীসহ অন্যরা জানান, মৌসুম শুরুর আগে বাজারে আম ওঠায় সাতক্ষীরার আমের চাহিদা একটু বেশি। তবে জেলা প্রশাসন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২২ মে হিমসাগরসহ অন্যান্য আম সংগ্রহ করলে বাজারে সাতক্ষীরার আমের চাহিদা কমবে। অন্যদিকে, বৈরী আবহাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কাও আছে।

এদিকে, সাতক্ষীরার আমের কদর রয়েছে বিশ্বজুড়ে। সে কারণে গুণগত মানের আম সরবরাহে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন বেঁধে দিয়েছে আম সংগ্রহের নির্ধারিত সময়। আমের জাত ভেদে আমগাছ থেকে সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আম সংগ্রহ ও বাজার জাতকরণ ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়েছে। তবে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এক সপ্তাহ এগিয়ে ৯ মে গোপালভোগ, বোম্বাই, গোপালখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম, ১১ মে গোবিন্দভোগ, ২২ মে হিমসাগর, ন্যাংড়া আম ২৯ মে, আম্রপালী আম ১০ জুন সংগ্রহের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

;

দেশে ৩৮ দিনে বজ্রপাতে ৭৪ জনের মৃত্যু, বেশিরভাগই কৃষক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত ৩৮ দিনে বজ্রপাতে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকদের মধ্যে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালনকালে স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস (এসএসটিএএফ) ফোরাম এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এপ্রিল মাসে বজ্রপাতে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ২০ জন ও নারী ১১ জন। আর মে মাসের গত ৮ দিনে ৪৩ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৫ জনই কৃষক ছিলেন।

এ লক্ষ্যে গত শনিবার থেকে এসএসটিএএফের একাধিক প্রতিনিধিদল মানিকগঞ্জের সিংগাইর, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এবং ঢাকার নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত প্রায় ৫০০ কৃষককে বজ্রপাত থেকে নিজেদের জীবন রক্ষার কৌশল শেখান।

সচেতনতামূলক এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা, গবেষণা সেলের প্রধান আব্দুল আলিম, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ও স্বেচ্ছাসেবী মো. শরিফুল ইসলাম। এসময় কৃষকদের মধ্যে কোমল পানি, শরবত ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়।

এসময় সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দ্রুত মাঠে মাঠে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানান। পাশাপাশি বছরের মার্চ থেকে জুন এই চার মাস কৃষকদের মধ্যে বজ্রপাত সচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনারও পরামর্শ দেন।

সংগঠনটি জীবন রক্ষায় মাঠে কাজ করা কৃষকদের তিনটি পরামর্শ পালনের আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি বজ্রপাত হলে কৃষকরা কীভাবে নিজেদের নিরাপদ রাখবেন সেই কৌশলও বলে দিয়েছেন সংগঠনটির সদস্যরা।

কৃষকদের যেসব পরামর্শ দেওয়া হয়েছে

১. খোলা আকাশের নিচে থাকলে আকাশে কালো মেঘ দেখার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।
২. বৃষ্টির সময়ে গাছের নিচে অবস্থান না করা। এবং
৩. খোলা আকাশের নিচে কাজ করার সময় পায়ে জুতা পরিধান করা এবং মাঠে থাকা অবস্থায় বজ্রপাত হলে শুয়ে পড়া।

এ সময় কৃষকদের মাঝে কোমল পানি, শরবত ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়।

;

অনলাইন জুয়া, বেটিংয়ের প্রচার, প্রসার ও অর্থপাচারে টিআইবির উদ্বেগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে অনলাইন জুয়ার ব্যাপক বিস্তারে মূলধারার সম্প্রচার মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার, অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে অর্থপাচার এবং জুয়ার ব্যাপক প্রসারের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি বলছে, সর্বোচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অনলাইন জুয়া বন্ধে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উল্টো ভিন্ন মোড়কে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে, স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো সংস্থার আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি’র এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বিজনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশকে, বিশেষ করে তরুণ সমাজকে অনলাইন জুয়ার নেশার কবল থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে এ সংক্রান্ত সব ধরনের বিজ্ঞাপন বন্ধ ও জুয়া প্রতিরোধে আইন প্রণয়নসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্বপ্রণোদিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানায় টিআইবি।

উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি জানায়, দেশের প্রচলিত আইনে যে কোনো ধরনের জুয়া নিষিদ্ধ হলেও নানা কৌশলে অনলাইন জুয়ার প্রচার ও প্রসার চলছেই। মূলধারার সম্প্রচার মাধ্যমে আইপিএল, বিপিএলসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় খেলা সম্প্রচারসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বেটিং সাইটের চটকদার বিজ্ঞাপন ভিন্ন মোড়কে বা ‘সারোগেট’ বিজ্ঞাপন আকারে প্রচার করা হচ্ছে। এমন কী এ বছরের বিপিএল-এর একটি দলের জার্সিতে জুয়ার ওয়েবসাইটের সারোগেট বিজ্ঞাপনও দেখা যায়।

এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, চরম উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ করছি, দেশে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনের মহোৎসব চলছে। আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে শুধু মুনাফার লোভে দেশকে চরম বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া কোনোমতেই দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে না। ইদানিং শহরের বিভিন্ন বিলবোর্ডেও অনলাইন জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হতে দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গত বছর উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, টেলিভিশন; বিশেষ করে স্পোর্টস চ্যানেলসহ ডিজিটাল ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বাজি ও জুয়ার বিজ্ঞাপনের রমরমা প্রচার চলছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এ ধরনের বিজ্ঞাপনের কুফল উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, টিআইবি মনে করে, শুধুমাত্র অনলাইন জুয়ার মাধ্যমেই দেশ থেকে বিপুল অংকের টাকাও পাচার হয়ে যাচ্ছে, যা আরো বড় উদ্বেগের বিষয়! গণমাধ্যম ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের সূত্রে জানা যায়, শহর থেকে গ্রামসহ সারাদেশে লাখ লাখ মানুষ বিশেষ করে তরুণ সমাজ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন।

এর মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ই-ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড, ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পাচার হয়। অনলাইন জুয়ার অ্যাপসের বেশির ভাগই রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে পরিচালনা করা হলেও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এগুলোর স্থানীয় এজেন্ট রয়েছেন।

এসব এজেন্টরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে টাকা আদান-প্রদান করেন। আবার এই এজেন্টদের মাধ্যমেই বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। অথচ চোখের সামনে হয়ে যাওয়া এই পাচার রোধে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-সহ কোনো দায়িত্বশীল সংস্থারই কোনো কৌশলগত উদ্যোগ বা প্রচেষ্টার কথা জানা যায় না।

একইভাবে সব নিয়ন্ত্রক সংস্থার চোখের সামনে চলছে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের বিশাল ব্যবসা, যা অবৈধ ও অনৈতিক!

অনলাইন জুয়ার ফলে সামাজিক নানা সংকটেরও জন্ম হচ্ছে উল্লেখ করে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিভিন্ন সময়ে জুয়ায় আসক্ত হওয়া ও সর্বস্ব খুইয়ে আত্মহত্যার ঘটনা আমরা নিয়মিত বিরতিতে বিভিন্ন সংবাদে দেখছি। সম্প্রতি, ঠাকুরগাঁওয়ে একজন ৩৫ বছরের যুবক অনলাইন জুয়ায় ১৫-২০ লাখ টাকা হারিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। পারিবারিক অশান্তি, কলহ, বিষণ্ণতা, সর্বোপরি জুয়ায় সর্বস্ব খোয়ানোর ঘটনার পাশাপাশি অবৈধ উপায়ে বিপুল বিত্ত-বৈভব অর্জনের ঘটনাও ঘটে চলেছে।

তিনি বলেন, জুয়ার নেশা আমাদের অমিত সম্ভাবনাময় তারুণ্যের নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের পাশাপাশি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে বিপন্ন করে তুলছে।

অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে বহুমুখী উদ্যোগ প্রয়োজন উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংবিধানের ১৮(২) অনুচ্ছেদ ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী, যে কোনো ধরনের জুয়া প্রতিরোধ করতে সরকারের ওপর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে দেশে এখনো জুয়া প্রতিরোধে ব্যবহার হচ্ছে ১শ ৫৭ বছরের পুরনো আইন।

সরকার ‘জুয়া প্রতিরোধ আইন-২০২৩’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিলেও এখনো তা খসড়া পর্যায়েই রয়ে গেছে। অথচ বর্তমান প্রেক্ষাপটে জুয়া প্রতিরোধে কঠোর ও যুগোপযোগী আইন আরো আগেই প্রণীত ও প্রয়োগ হওয়া প্রয়োজন ছিল।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, আইনটি এখনো খসড়া অবস্থাতেই রয়েছে। খসড়া আইনের ৬ ধারায় দূরবর্তী জুয়া ও অনলাইন জুয়ার প্রকৃতি এবং ৭ ধারায় বাজি বা বেটিং সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে বেটিং, অনলাইন জুয়া প্রচারণার বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় সারোগেট বিজ্ঞাপন প্রচার এবং অনলাইন বেটিংয়ের সঙ্গে অর্থ পাচারের যোগসূত্রের ব্যাপারগুলো উপেক্ষা করা হয়েছে।

আবার, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার ৪.৫.৩ (ঘ) ধারা অনুযায়ী, বাজি ধরা বা জুয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত সংস্থা/কোম্পানি/ব্যক্তির বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ করা হলেও সারোগেট বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে কোনো নির্দেশনা দেওয়া নেই।

অন্যদিকে, অনলাইন জুয়া রোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্বপ্রণোদিত ভূমিকা দেখা যায় না। অনলাইনের অবারিত দুনিয়ায় জুয়া বা বেটিংয়ের প্রসার রোধে সবার আগে এর প্রচারণা রোধ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্বপ্রণোদিত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

এমতাবস্থায়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, বিএফআইইউ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, নাগরিক অধিকার সংগঠনসহ সব অংশীজনের সঙ্গে পর্যালোচনার মাধ্যমে খসড়াটি অতি দ্রুত সংশোধন করে আইন প্রণয়ন ও অবিলম্বে প্রয়োগের জোর দাবি জানাচ্ছে টিআইবি।

পাশাপাশি, অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে এ সংক্রান্ত সব ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত নজরদারি ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায় টিআইবি।

;