হিট অ্যালার্টেও স্কুল খুলল, গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা



রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
হিট অ্যালার্টেও স্কুল খুলল, গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

হিট অ্যালার্টেও স্কুল খুলল, গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ ও তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এক মাসের বেশি ছুটির পর আবারও খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে পাঠদান। পাঠদানের সময় সুচি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে নতুন সময়। তবে সে সময়েও তীব্র গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষাথীরা।

অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত রুটিন পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এতে স্বাভাবিকভাবে নতুন সময়ে অভ্যাস তৈরিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি পড়াশুনার সময় ও প্রাইভেট টিউশনের সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীকে। এ ছাড়া দেশের তাপ প্রবাহের প্রকোপে সকাল ৯ টার পরই বাইরের তাপমাত্রা অসহনীয় হয়ে যায়। ফলে নতুন সময় অনুযায়ী পাঠদানেও ঝুঁকির বাইরে নয় শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থায় অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থাই উত্তম বলছেন তারা

ফার্মগেট বটমলী হোম বালিকা স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ম্যারানো মেরিন। নিয়মিত সকাল ১০ টায় স্কুলে আসে সে। প্রাত্যহিক অভ্যাস অনুযায়ী সকাল ৮ টায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা ও রেডি হয়ে আসেন। তবে নতুন নিয়মে নিজেকে প্রস্তুত করতে প্রায় ৩৫ মিনিট দেড়ি হয়ে এই শিক্ষার্থীর। স্বাভাবিক ভাবে ঘুম অপূর্ণ থাকায় মাথা ব্যথার সমস্যায় ও পড়েছে বলে জানান মেরিনের মা মেরিনো লিনা।


লিনা বলেন, আমাদের অভ্যাসগত কিছু দিক থাকে যা পরিবর্তন সম্ভব নয়৷ পরিবর্তন করলেও বেশ কিছু জটিলতা থাকে খাপ খেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বেশি।

তিনি বলেন, সকাল ১০টা হলেই গরম আর সহ্য করা যায় না। বাচ্চাদের রক্ষার জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা কোন ভাবেই তাদের উপকারে আসছে না। আবহাওয়া যতটা প্রখর হয়ে উঠেছে তাতে কোন ভাবেই সময় পরিবর্তন করে রক্ষা পাওয়া যাবেনা। এর জন্য অনলাইন ক্লাস চালু করা প্রয়োজন।

নাখাল পাড়া প্রাইমারি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা আমেনা খাতুন বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাপপ্রবাহ টা বেশি থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির যে কথাটা আমরা বলছি তা ঠেকানোর উপায় তাদের ঘরে রাখা। এ ক্ষেত্রে তাপপ্রবাহ যতদিন থাকে ততদিন তাদের অনলাইন শিক্ষার ব্যবস্থাই শ্রেয় মনে হয় হয় আমাদের।


সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারুফ বলেন, সকালে নিয়মিত রুটিনে আমাদের একটা অভ্যাস হয়েছে। যেটা থেকে বের হয়ে নতুন সময় ঠিক রাখতে আজ কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে দুপুরের যে রোদ টা এটা থেকে মুক্তি মেলেনি। দেখছেন শরীর ঘেমে গেছে৷ এখন এমন অবস্থায় আমাদের অনলাইন ক্লাশ হলেই ভালো হতো

সরকারের নতুন সময় অনুযায়ী এক পালায় (শিফটে) পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। আর দুই পালায় বিদ্যালয়গুলোয় প্রথম পালা সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় পালা সকাল পৌনে ১০টা থেকে থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলমান থাকবে। 

শিফট পরিবর্তন করে কি শিশুদের গরম ও রোদ থেকে রক্ষা সম্ভব কিনা? এ প্রসঙ্গে শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র তাপ প্রবাহে সব থেকে ঝুঁকিতে আছে শিশুরা।  অতিরিক্ত গরমে শিশুদের ডায়রিয়া,  নিউমোনিয়া, জন্ডিস পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া স্বাভাবিক ভাবে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, কানে ইনফেকশন, টনসিলাইটিস ও নিউমোনিয়াও দেখা দিতে পারে। প্রখর রোদে ত্বকে ফোসকা পড়া, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, ফাঙ্গাসের সংক্রমণ, ঘামাচি ও চুলকানি দেখা দিতে পারে। ফলে রোদ থেকে শিশুদের রক্ষাতে ঘরে থাকার পরামর্শ সকলের।


চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমান তাপমাত্রা একদমই অস্বাভাবিক শিশুদের জন্য। এর ফলে নানা ভাবে আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। ঠান্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে শিশুদের রাখা জরুরি। এবং গরম থেকে বাঁচতে পারিবারিক ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর উচিত। তাই শিফট পরিবর্তন নয়, শিশু সুরক্ষায় নিরাপদ স্থানই নিশ্চিত প্রয়োজন।

আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ও অ্যাসোসিয়েট সাইন্টিস্ট ফারহানা আফরোজ বলেন, দিন দিন তাপ প্রবাহ বেড়ে চলছে৷ ফলে শিশু ও বৃদ্ধরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে৷ বিশেষ করে শিশুরা অতিরিক্ত ঝুঁকিতে পড়ছে। ফলে শিশুদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, শিশুদের গরমের পাশাপাশি ধুলোবালি থেকে দূরে রাখতে হবে। বাহিরের খাবার ও পানি পান জরা থেকে বিরত রাখতে হবে। তীব্র গরমে অস্বস্তি থেকে শিশুরা মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারে। সকল ঝুঁকি এড়াতে দিনের বেলায় ঘরে থাকাই শ্রেয়।

প্রসঙ্গত, ৩১ মার্চ থেকে দেশে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। গত ২৮ দিন ধরে টানা তাপপ্রবাহ চলছে; যা অতীতে কখনো দেখা যায়নি। এ পরিস্থিতিতে ঈদের ছুটির পর আর স্কুল খোলেনি সরকার। অসহনীয় গরমের কারণে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

এই গরমে শিশুদের 'অতি উচ্চ ঝুঁকির' বিষয়টি স্মরণ করিয়ে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফও।

   

সিকৃবিতে রুম দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১৭



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম সিলেট
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রুম দখলকে কেন্দ্র করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে।

রবিবার (১২ মে) বিকাল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুস সামাদ আজাদ হলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই হলে দুই দফা সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

জানা যায় , সিকৃবির আজাদ হলের একটি রুম (৫০৭ নং) দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা পড়ে ছিল। তখন এলোটমেন্ট পাওয়া কিছু ছাত্রকে ওই রুমে তুলে দেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াদ সমর্থিত গ্রুপের নেতা-কর্মীরা।

তবে সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসেন সমর্থিত গ্রুপের নেতা-কর্মীরা এটা নিজেদের রুম বলে দাবি করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দু-পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে।

পরে সমাধানের উদ্দেশ্য ছাত্র পরামর্শ, প্রক্টর, প্রভোস্টরা ছাত্রলীগসহ বসলে সেখানে কথা কাটাকাটির জেরে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়েন নেতা-কর্মীরা।

দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে মাঠে অবস্থান করে আরেকটি গ্রুপের (সহ-সভাপতি সাব্বির মোল্লা ও সাংগঠনিক সম্পাদক জুনায়েদ আহমেদ পক্ষের) নেতা- কর্মীরা। পরে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

দুই দফা সংঘর্ষে ১৭ জন আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিকৃবির চীফ মেডিকেল অফিসার ডা. অসিম রঞ্জন রায়। আহতদের মধ্যে দুজনকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে আব্দুস সামাদ আজাদ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মীর মো. ইকবাল হাসান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে একটি রুমকে নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েক জন ছাত্র আহত হয়েছে। আমারা আহতদের দেখতে যাচ্ছি। আর ওই কক্ষটা আমরা তালা মেরে রেখেছি। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিজেরা বসে বিষয়টা সমাধান করবে বলে জানিয়েছে।’

এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে সিকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতি আশিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এমাদুল হোসেনকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।

এ ছাড়াও সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও কথা বলতে রাজি হননি।

এ প্রসঙ্গে সিকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড.সাদ উদ্দিন মাহফুজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে আব্দুস সামাদ আজাদ হলের একটি রুম নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ঝামেলা হয়, যার দরুন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। আমরা সকলের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করেছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কারা এ ঝামেলায় জড়িত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে কোনো সমস্যা হলে প্রশাসন থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে সিলেট শাহপরান থানার এসি শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘একটা রুম নিয়ে ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এখনো ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থান করছে।’

এর আগে গত শুক্রবার (১০ মে) রাতে সিকৃবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার দুই দিন না পেরোতেই সংঘর্ষে জড়ালো ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ।

;

সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলামের চার ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম চট্টগ্রাম
নুরুল ইসলাম বিএসসি। ছবি : সংগৃহীত

নুরুল ইসলাম বিএসসি। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির চার ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। বেসরকারি উত্তরা ব্যাংকের ৩০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের মামলায় এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১২ মে) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।

ওই চারজন হলেন-নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমান, জাহিদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম ও ওয়াহিদুল ইসলাম।

মুজিবুর রহমান সাবেক মন্ত্রীর মালিকানাধীন সানোয়ারা ডেইরি ফুডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। অন্য তিন জন একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।

মামলায় উল্লেখ করা তথ্য থেকে জানা গেছে, উত্তরা ব্যাংক থেকে দুই প্রতিষ্ঠানের নামে ২০ কোটি ৭২ লাখ ৪৬ হাজার ৭০৭ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল।

এর মধ্যে সানোয়ারা ডেইরি ফুডস লিমিটেডের নামে ১৭ কোটি ৯০ লাখ ৫৯ হাজার ১৩৯ টাকা ও ইউনিল্যাক সানোয়ারা বিডি লিমিটেডের ২ কোটি ৮১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৬৭ টাকা ঋণ নেয়া হয়েছিল।

কিন্তু, এর বিপরীতে ব্যাংকে কোনো সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়নি। বিবাদীদের ব্যক্তিগত নিশ্চয়তা ও ট্রাস্ট রিসিটের ভিত্তিতে এই ঋণ মঞ্জুর করেছিল ব্যাংক।

নির্ধারিত সময়ে পরিশোধযোগ্য ঋণ হিসেবে আরোপিত সুদ ছিল এক কোটি ৬৭ লাখ ৬৩ হাজার ১১৭ টাকা। সুদসহ মোট স্থিতি ২২ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৮২৪ টাকা।

ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার পর পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয় ব্যাংক। এরপরও ঋণ পরিশোধ না করায় সুদ আরোপ হয় আরও ৮ কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৬২৪ টাকা।

এর ফলে ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকের মোট দাবি অর্থাৎ দুই প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমান দাঁড়ায় ৩০ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার ৪৪৯ টাকা ৩৯ পয়সা।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, উত্তরা ব্যাংকের করা ৩০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপির মামলায় আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত সাবেক মন্ত্রীর চার ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। এ ছাড়া এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপারকে (অভিবাসন) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে, ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর খেলাপি ঋণ আদায়ে উত্তরা ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার প্রিন্সিপ্যাল অফিসার এ এস এম ফয়জুল আলম চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এতে দুটি প্রতিষ্ঠানকে বিবাদী করা হয়। এ ছাড়া নুরুল ইসলাম বিএসসি ও তার স্ত্রী সানোয়ারা বেগম এবং পাঁচ ছেলেকেও বিবাদি করা হয়।

এদিকে বাদী গত ২ মে আদালতকে জানান, মামলা দায়েরের পর থেকে শুধুমাত্র একজন ছাড়া আর কোনো বিবাদি আদালতে হাজির হননি। ঋণ পরিশোধেরও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং তারা দেশ ছেড়ে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানতে পেরেছেন বাদী।

যে কারণে বিবাদিদের পাসপোর্ট জব্দ করে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আবেদন করেন বাদী।

;

গাইবান্ধায় অদম্য এক 'মা' মরিয়ম



মাসুম বিল্লাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধায় অদম্য এক 'মা' মরিয়ম

গাইবান্ধায় অদম্য এক 'মা' মরিয়ম

  • Font increase
  • Font Decrease

ছেলের বয়স যখন দুই বছর সাত মাস, তখন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় স্বামী। হঠাৎ আলোর সংসারে নেমে আসে অমাবস্যার ঘোর অন্ধকার। একদিকে অবুঝ শিশু সন্তান, অপরদিকে নিজের বয়স কেবল আঠারোতে পড়েছে। এমন সময় ঝড়ে দুমড়ে-মুচড়ে যান তিনি। ঘোর অন্ধকারে তখন তার জীবনের একপাশে কুপির মতো আলো দিতে থাকে বাবা।

শিশু সন্তানের সঙ্গী হয়ে জীবন সংসার পার করার প্রত্যয় নিয়ে পথ চলা শুরু করেন তিনি। কিন্তু কি নিয়তি! তিন বছরের মাথায় মারা যান সেই অবলম্বন বাবাও। তবে, সব হারিয়েও দমে যাননি তিনি। স্বামীর রেখে যাওয়া জমিতে নিজ হাতে করেছেন চাষাবাদ। দীর্ঘ ৫ কিমি পথ হেঁটে আয়ার কাজ করেছেন ক্লিনিকে। হারতে নারাজ তিনি, বরং নিয়তি, মন এবং বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করে টিকে আছেন সমাজে। মানুষ করছেন সন্তানকেও। একাকী মায়ের প্রবল পরিশ্রম এবং প্রচণ্ড প্রচেষ্টায় সেই দুই বছর সাত মাসের বাবা হারা অবুঝ শিশু এখন সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কুড়িগ্রামের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।

এ গল্প মোছাম্মৎ মরিয়ম বেগম (৪১) ও তার সংগ্রামী জীবনের।


আজ এই মা দিবসে সকল মায়েদের প্রতি অতল শ্রদ্ধা জানিয়ে এমনি এক অদম্য মায়ের সংগ্রামী জীবনের গল্প তুলে এনেছেন বার্তা২৪.কমের গাইবান্ধার করেসপন্ডেন্ট।

মোছাম্মৎ মরিয়ম বেগম (৪১)। বাবা মরহুম করিম মুন্সি। বাবার বাড়ি গাইবান্ধার পৌর এলাকার তিনগাছ তলা নামক এলাকায়। আট ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় মরিয়ম। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা অবস্থায় একই জেলার সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম হরিপুর গ্রামের মৃত সমেশ উদ্দিনের ছেলে নুরুজ্জামানের সাথে বিয়ে হয় মরিয়মের। বিয়ের দেড় বছরের দিকে ঘরে আসে এক পুত্র সন্তান। যার নাম রাখা হয় মনোয়ার হোসেন মিজান।

কৃষক পরিবারে সন্তান নুরুজ্জামান সব ধরনের কাজই করতেন। যা নিয়ে সুখেই কাটছিল নুরুজ্জামান-মরিয়ম দম্পতির জীবন। কিন্তু মাত্র চার বছরের সংসারই সয়নি মরিয়মের কপালে। হঠাৎ প্রবল ঝড়ে কিডনি, ফুসফুস নষ্ট হয়ে রংপুরের চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় চিকিৎসা করাতে নিয়েই যাওয়ার পথেই ২০০৩ সালে ১৭ অগ্রহায়ণ জেলার ঢোলভাঙ্গা নামক স্থানে গাড়িতেই মৃত্যু বরণ করে নুরুজ্জামান।


স্বামী নুরুজ্জামানের সাথে মাত্র চার বছরের সংসারের ইতি টানতে টানতেও যেন শেষ করতে পারেনি 'মা' মরিয়ম। একমাত্র সন্তান মিজানের মুখপানে চেয়ে বারবার ভেঙ্গেছে হৃদয়। অগণিত সময় পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে দু'চোখ। হাজারো সুযোগ আসলেও কেবল সন্তানের কারণেই ঘর পাল্টাতে পারেনি অবলা এই নারী।

মন্দ ভাগ্যে যুবতী বয়সেই 'বিধবা মরিয়ম':

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মরিয়মের বিয়ে হয় মাত্র ১৪ বছর বয়সে। সংসার জীবনের চার বছরের মাথায় রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় স্বামী। মাত্র ১৮ বছর বয়সে নামের সাথে যোগ হয় বিধবা শব্দটি। স্বামী হারিয়ে ১৮ বছর বয়সেই ভাগ্য দোষে যুবতী মরিয়ম থেকে হতে হয়েছে বিধবা মরিয়ম।

সন্তানকে নিয়ে একাকী জীবন সংগ্রামে মরিয়ম:

কিডনি-ফুসফুসসহ শরীরের বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত স্বামীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে আবাদি জমি, গাছপালা ঘরের যতটুকু ধান ছিল সবই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু মৃত্যু নামক দানব ছেড়ে যায়নি স্বামী নুরুজ্জামানকে। তাকে তো নিয়ে গেছেই সাথে নিঃস্বও হতে হয়েছে মরিয়মকে। পরে কেবল স্বামীর স্মৃতি আর একমাত্র সন্তানকে সঙ্গী করে জীবন সংসার পারি দেওয়ার স্বপ্ন বোনে মরিয়ম। এসময় আসহায়-বিধবা মরিয়মের পাশে কুপির মতো আলো দিতে থাকে সোনালী ব্যাংকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বাবা। কিন্তু ‘অভাগা যেদিকে যায়, সাগরও শুকিয়ে যায়।’ এর তিন বছরের মাথায় মারা যায় শেষ অবলম্বন বাবাও।

এদিকে সন্তান মিজানের বয়স ছয় বছর ছুঁইছুঁই। বাবার মৃত্যুর আগেই কিনডার গার্ডেনে পড়ানোর ইচ্ছা ছিল মরিয়মের। কিন্তু অর্থাভাবে মিজানকে ভর্তি করে দেওয়া হয় রামচন্দ্রপুর ব্র্যাক স্কুলে।

স্বামীর পর বাবার মৃত্যুতে চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে বিধবা মরিয়ম। এবার ঘুরে দাঁড়াতে চান তিনি। কেননা, হারলে মরিয়মদের চলে না। দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় সন্তানকে মানুষ করতে ঘর থেকে বের হন বাহিরে। স্বামীর রেখে যাওয়া ১২ শতাংশ জমিতে ফসল ফলান নিজ হাতে। পালন করেন হাঁস-মুরগি। এরপরে গাইবান্ধার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আয়ার কাজও নেন তিনি।

একমাত্র ছেলেকে ঘিরেই যত স্বপ্ন, সংগ্রাম:

একমাত্র সন্তানকে কেজি স্কুলে (কিনডার গার্ডেন) পড়ানোর স্বপ্ন থাকলেও টাকার অভাবে ফরম তুলেও স্কুলে ভর্তি করাতে পারেনি। কিন্তু ছেলেকে কেজি স্কুলে পড়ানোর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার। গাইবান্ধার একটি ক্লিনিকে ৩ হাজার টাকা বেতনে চাকরি নিয়ে ২০১৪ সালে ছেলেকে জেলার উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত 'কল্পলতা স্কুল এন্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন মরিয়ম। স্বপ্ন দেখেন ছেলে একদিন অনেক বড় চাকরি করবে, দুঃখ ঘুচাবে মায়ের। কিন্তু সেখানে ভর্তি করে দেওয়ার পর আর্থিক খরচ দ্বিগুণ হয়। যা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে দমে যাননি তিনি।

সন্তানের জন্য খেয়ে-না খেয়ে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করে তার পড়া লেখায় কোনো ঘাটতি হওয়ার সুযোগ দেয়নি বিধবা মরিয়ম। এই টানা পোড়েনের মাঝেই গাইবান্ধার একটি প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এসকেএস স্কুল এন্ড কলেজে আয়া পদে ৮ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পায় মরিয়ম। তখন সন্তানের পড়ালেখার খরচের খানিকটা চিন্তামুক্ত হন তিনি। পরে মিজান একই প্রতিষ্ঠান থেকে জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) পাশ করে গাইবান্ধার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি, একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২১ সালে এইচএসসি পাশ করে। পরে ২০২৩ সালে মেধাতালিকায়র কুড়িগ্রাম সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পায়।

মরিয়মের দিন বদলের স্বপ্নে অঙ্কুর গজিয়েছে কেবল:

বাবা হারা মিজান যেদিন সরকারি পলিটেকনিকে ভর্তির সুযোগ পায়, সেদিন মরিয়মের মতো সুখী বুঝি পৃথিবীতে কেউ ছিল না। স্বপ্ন পূরণের পথে একধাপ এগিয়েছে তার ছেলে। এখন ভরসা হচ্ছে ছেলে একদিন বড় হবেই, মায়ের কষ্ট ঘুচাবে। এ যেন মরিয়মের দিন বদলের স্বপ্নে অঙ্কুর গজিয়েছে কেবল। এর থেকেই একদিন ফুল হবে, হবে ফলও। সেই প্রত্যাশায় দিন গুনছেন তিনি।

বার্তা২৪.কম-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে মরিয়ম বলেন, 'জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। ছোট্ট ছেলেটাকে জমির আইলে বসিয়ে রেখে ধানের বেছন (চারা) তুলেছি। ধান কেটেছি, মাড়াই করেছি। ছেলেটা কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়েছিল, ভাত পাইনি। এসময় হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন মরিয়ম। এসময় কান্নায় বেশ কিছুক্ষণ স্বাভাবিক হতে পারেননি তিনি।

পরে স্মৃতিচারণ করে কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ওকে (ছেলেকে) কেজি স্কুলের ভর্তি ফরম নিয়ে আসার পরেও এক হাজার টাকার জন্য ভর্তি করতে পারিনি। বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলাম, পাইনি। বাধ্য হয়ে ব্র্যাকে পড়িয়েছি।

পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে ক্লিনিকে চাকরি করে ভাল স্কুলে পড়িয়েছি। এখনও কষ্ট করছি। এখন এসকেএস এনজিও'র স্কুলে ৮ হাজার টাকা বেতনে আয়া পদে চাকরি করছি। চাকরির বয়স সাত বছর হয়ে গেল। এই টাকায় অন্য কিছুই করতে পারি না। সবই ছেলেটার পিছনে খরচ হয়। হোক, তবুও আমি হারবো না, আসলে মায়েরা হারতে জানে না।

আমার সব স্বপ্ন ওকে নিয়েই। চোখ ভরা পানি নিয়ে তিনি বলেন, মাত্র ১৮ বছর বয়সে স্বামীকে হারিয়েছি, তখন থেকেই বিধবা। মন্দভাগ্য যুবতী বয়সেই বিধবা হলাম। ছেলেটার বয়স তখন দুই বছর সাত মাস। জীবনে অনেক প্রস্তাব এসেছিল কিন্তু ছেলেটার দিকে তাকিয়ে অন্য কিছুই ভাবতে পারিনি।

মায়ের মতই ছেলের ভাবনাও:

যাকে ঘিরে মরিয়মের এত স্বপ্ন সেই সন্তানের ভাবনায় কী? তা জানতে ছেলে মিজান বলেন, তার ভাবনাও ঠিক মা মরিয়মের মতই।


ম্যাসেঞ্জারে এক প্রশ্নের উত্তরে মিজান লিখে পাঠান- প্রত্যেকটি পরিবারে রোজগার করে বাবারা, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে পুরাই ছিল ভিন্ন। ছোটবেলায় বাবা মারা যায় তখন থেকে মা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে দিনরাত এক করে দু'মুঠো ভাত তুলে দিতো আমার মুখে।

মাই আমার সব, বাবাও আমার মাই। মা আমাকে কখনো বাবার অভাব বুঝতে দেয়নি। মা আমার আগামী দিনের পথ চলার আলোকবর্তিকা। মা আমার অন্ধকারের আলো। মাকে নিয়ে আমি খুব গর্ব করি। মাকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি। একদিন বড় হবো, চাকরি করবো। মায়ের সকল দুঃখ মুছে যাবে। মায়ের স্বপ্নইতো আমার স্বপ্ন। আল্লাহ যেন আমার মাকে হাজার বছর বেঁচে রাখেন।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, অল্প বয়সে বিধবা হয়ে শিশু সন্তানকে মানুষ করতে ওই নারী অনেক সংগ্রাম করেছেন, আজও করছেন। তার এই সংগ্রাম দেশে উদাহরণ হতে পারে। আমি আজ মা দিবসে তাকে একজন সংগ্রামী মা হিসেবে স্যালুট জানাই।

;

রানওয়ের বৈদ্যুতিক লাইনে শর্ট সার্কিট, সৈয়দপুরে বিমান উঠানামা বন্ধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে রানওয়েতে বৈদ্যুতিক তারে শর্ট সার্কিটের কারনে প্রায় চার ঘন্টা ধরে উড়োজাহাজ উঠানামা বন্ধ রয়েছে। ৬টার পর থেকে উড়োজাহাজ উঠানামা বন্ধ রয়েছে।

রোববার (১২ মে) রাত ১০টা ২০ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ।

তিনি বলেন, রানওয়ের বৈদ্যুতিক লাইনে শর্ট সার্কিটের কারণ সন্ধ্যার পর থেকে বিমান চলাচল বন্ধ হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। বাতিল হওয়া ফ্লাইট গুলার মধ্যে বাংলাদেশ বিমান, ইউএস-বাংল ও নভোএয়ারের একটি করে ফ্লাইট রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত বিমান চলাচল স্বাভাবিক করার।

;