চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম চট্টগ্রাম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশাসনের আশ্বাসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার চলমান ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।

দীর্ঘ দুই ঘণ্টা আলোচনা শেষে রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় এ ঘোষণা দেন সংগঠনের আহ্বায়ক মঞ্জুর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের অনুরোধে জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে ৪৮ ঘণ্টার চলমান ধর্মঘট আমরা স্থগিত করেছি। জেলা প্রশাসক আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়েছেন, সেজন্য তাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। পরবর্তীতে এরকম কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পুনরায় ধর্মঘট দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের ৪৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। তা চলমান রয়েছে। এ অবস্থায় জেলা প্রসাসক প্রসাশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ আমাদেরকে ডেকেছেন। আমরা উনার ডাকে সাড়া দিয়ে এসেছি এখানে। আমরা তার প্রতি সম্মান রেখে বলবো, চুয়েটে যে দুইজন ছাত্র নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং একজন আহত হয়েছেন তার জন্য আমরা মর্মাহত। ওই ছেলেদের আমাদের পক্ষ থেকে কিছু সহযোগিতা দিয়েছি। এরপর আমাদের তিনটা গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের তিনটা গাড়ির বিষয়ে প্রশাসন আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন বিআরটিএর মাধ্যমে গাড়িগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আমরা উনার আশ্বাসকে সাধুবাদ জানাই।’

তিনি‌ আরও বলেন, 'আমরা গাড়ি চালানোর জন্য ব্যবসা করি। আমাদের কাপ্তাই সড়কের চুয়েটের সামনে বর্তমানে যে বিবাদমান আন্দোলন, এই আন্দোলনে আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত। জানি না আবার গাড়ি চালাতে গিয়ে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হবো কিনা। তারপরও ডিসি মহোদয় আমাদেরকে বলেছেন, উনার কথায় আস্থা রেখে আমরা গাড়ি ছাড়ব। আমাদেরকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেবে, যদি আমাদের কোন গাড়ি যদি সেই দুর্ঘটনা বা আক্রমণের শিকার হয় অথবা আমাদের এবি ট্রাভেলস বা শাহ আমানতের কোন গাড়ি যদি ইচ্ছাকৃত কোন আক্রমণের শিকার হয়, উদ্ভূত কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমরা পুনরায় ধর্মঘট শুরু করব। জেলা প্রশাসকের আহবানে আমরা জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে ধর্মঘট স্থগিত করলাম।'

বৈঠকে মনজুর আলম বলেন, ‘কাপ্তাই সড়কে গাড়ি চললে চট্টগ্রামের সব সড়কে গাড়ি চলবে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেটি অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সরকারকে বিব্রত করতে চাইনা। আমরা সবমসময় সরকারকে সহযোগিতা করেছি। আমরা গাড়ি চালাবো। আপনাতত আমাদের দাবিগুলো আপনি পূরণ করার আশ্বাস দিয়েছেন আমরা আপনার আশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

এর আগে সভায় জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা যে দাবিগুলো বলেছেন তার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে নিরাপত্তা। নিরাপত্তার বিষয়ে আমি আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা গাড়িগুলো চালান আমরা নিরাপত্তা দেব। প্রয়োজনে পুলিশ স্কোয়ার্ড ও আমাদের দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। আর হামলায় গাড়িগুলো কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি বিআরটিএ দেখবে। এরপর আমরা সেটির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখবো। ক্ষতিপূরণের জন্য মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আমরা কথা বলব। যাতে আপনাদের তিন গাড়ির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায়।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, দুইজন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনার পর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। নিরাপত্তার বিষয়টি সেখানে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। গাড়িগুলো যাওয়া আসার সময় সামনে পেছনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ স্কোয়াড থাকবে।

এ সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা বলেন, ‘সড়কের মধ্যে দাড়িয়ে যে চাদাঁবাজি করা হচ্ছে সেটি বন্ধ করুন। না হয় আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। সড়কে যত্রযত্র গাড়ি থামানো যাবে না। মামলা প্রত্যাহারের যে দাবি তোলা হয়েছে সেটি আসলে তদন্তের আগে জানানো সম্ভব নয়। আর গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে মামলা কেউ করতে চাইলে করতে পারবে।’

বিআরটিএ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর মাথায় হেলমেট ছিল না। মোটরসাইকেলেরও নিবন্ধন ছিল না বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়া যে বাসটি মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছে, সেটা ছিল ফিটনেসবিহীন। চালকের লাইসেন্স ছিল না।’

সভায় পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান মেহেবুবসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পরিবহন মালিক শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ৪ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের এই ঘোষণা দেয় বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ। পরে অবশ্য তিনটি পরিবহন সংগঠন ধর্মঘট প্রত্যাখানের ঘোষণা দেয়। কিন্তু, এই সংগঠগুলো টেম্পো জাতীয় পরিবহন সংশ্লিষ্ট। ফলে তাদের প্রত্যাখানে তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হয়। এর জের ধরে ওইদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন।

গত ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপরও ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে ২৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

   

মাদকের ফাঁদে হারিয়ে গেলো কৈশোর, জীবনে ফেরার লড়াইয়ে সঙ্গী আহ্ছানিয়া মিশন



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনে আহ্ছানিয়া মিশন

মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনে আহ্ছানিয়া মিশন

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকার সাইফুল ইসলাম (ছদ্মনাম)। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান সাইফুল ইসলাম সদ্য কৈশোর ছেড়ে তারুণ্যে পা রেখেছেন। এই সময়ে পড়াশোনা আর বন্ধুদের সঙ্গে হৈহুল্লোড় করে জীবন উপভোগ করার কথা। তবে অন্য আর দশটি ছেলের মতো স্বাভাবিক জীবনে নেই সাইফুল। বরং অপরিচিত এক রিকশাচালকের খপ্পরে মাদকের অন্ধকারে পথ হারানো তার সময় কাটছে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার লড়াইয়ে।

সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে রাস্তায় অপরিচিত এক রিকশাচালকের সঙ্গে সখ্যই কাল হলো সাইফুলের। রিকশাচালকের ছদ্মবেশে থাকা ওই ব্যক্তি ছিলেন মাদকের ডিলার। তার প্ররোচনায় মাদক গ্রহণ ও একটা পর্যায়ে মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িয়ে যান স্কুলপড়ুয়া সাইফুল। গাঁজা-ইয়াবা থেকে শুরু করে দেশের অপ্রচলিত মাদক কোকেনে আসক্তিতে জড়ান। ফলে মাদকের থাবায় পড়াশোনা থেকে ছিটকে পড়তে হয়। এমনকি পরিবার সুস্থ করে তুলতে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করলেও একাধিকবার মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে পালিয়েছেন। বেশ কয়েকটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রের পরে সাইফুলের ঠিকানা এখন গাজীপুরে আহছানিয়া মিশন পরিচালিত মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে।

গত ৯ মে আহছানিয়া মিশনের মাদক পুনর্বাসন গাজীপুর কেন্দ্রে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় সাইফুলের। তার ভাষ্যে জানা যায়, বাবা প্লাস্টিক ব্যবসায়ী। লালবাগ এলাকা একটি স্কুলে পড়তেন। কিন্তু মাদকের কারণে সপ্তম শ্রেণির পর ঝড়ে পড়েন সাইফুল। এরপর মাদকাসক্তি ও নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসায় কাটছিল তার জীবন।

মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে যাওয়ার বিষয়ে সাইফুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, লালবাগের একটি স্কুলে পড়াশোনা করতাম। সব সময় আমার পরীক্ষার ফলাফল ভালো হতো। প্রাথমিকে পড়ার সময় থেকেই বন্ধুদের সঙ্গে ধূমপান করতাম। হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে এক রিকশাচালক ডাক দিলো। কাছে যেতেই নানাভাবে সখ্য গড়ে তুলল। এরপর আমাকে গাঁজা সেবনের প্রস্তাব দিলো। এক টান দিতেই আমার মাথা ঘুরে গেলো। সে দিন রাস্তায় অনেক বমি করেছিলাম। পরে সেই রিকশাচালক আমাকে বাসায় পৌঁছে দেয়। এরপর আমি নিজেই ওই রিকশাচালকের কাছে যেতাম। বাসা থেকে টাকা নিয়ে নিয়মিত গাঁজা সেবন করতাম।

কিন্তু হঠাৎ একদিন টাকা না থাকায় মাদক চাইলে সেই রিকশাচালক আমাকে মাদক বিক্রির প্রস্তাব দেয়। টাকা জোগাতে এরপর ওই রিকশাচালকের ইয়াবা বিক্রি করতাম। এভাবে ধীরে ধীরে আমি ইয়াবা সেবন শুরু করি। মাদকের টাকা জোগাতে বাসায় চুরি শুরু করি। টাকা না পেলে জিনিসপত্র চুরি শুরু করি। বিষয়টি টের পেয়ে আমার পরিবার ডোপ টেস্ট করায়। পরবর্তীতে মাদকাসক্তির প্রমাণ পেয়ে তেজগাঁও এলাকায় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করায়। ২৮ দিন করে দুই দফায় নিরাময় কেন্দ্রে থাকার পরেও মাদক থেকে ফিরতে পারিনি।

ইয়াবা ও গাঁজা সেবন থেকে ফিরতে ভর্তি হন নিরাময় কেন্দ্রে। সুস্থ হওয়ার বদলে জড়িয়ে যান হিরোইন ও কোকেনের মতো মাদকে উল্লেখ করে সাইফুল আরও বলেন, তেজগাঁওয়ের সেই মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা চলাকালীন কেন্দ্রের নারী শাখায় ভর্তি থাকা একটি মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। মোহাম্মদপুর এলাকার সেই মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পরে হিরোইন সেবন শুরু করি। সেই মেয়ের মাধ্যমে তার সঙ্গে হিরোইন বিক্রি করে যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে আমরা সেবন করতাম। এরপর সেই মেয়েই আমাকে কোকেন সেবন করায়। এক গ্রাম কোকেনের দাম পাঁচ হাজার টাকা। বাসা থেকে টাকা চুরি করে কোকেন সেবন করতাম। এমনকি টাকা না পেয়ে মায়ের ওয়াশিং মেশিন বিক্রি করে দিই। পরবর্তীতে পরিবার রায়েরবাজার এলাকার একটি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে। সেখান থেকে কেন্দ্রের লোকজনকে মারধর করে পালিয়ে যাই।

তিনটি প্রতিষ্ঠানে চারবার চিকিৎসা নিয়েও সুস্থ হতে পারেননি সাইফুল। এমনকি দুটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অন্য বন্দিদের সঙ্গে মিলে নিরাময় কেন্দ্রের কর্মীদের মারধর করে পালিয়ে যান।

সর্বশেষ গত কয়েকমাস ধরে আহছানিয়া মিশনের পরিচালিত গাজীপুর কেন্দ্রে মাদক ছেড়ে জীবনের পথে ফেরার চিকিৎসা গ্রহণ করছেন সাইফুল। এখন তার ভুল ভেঙেছে। জীবনের শুরুতে অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া সাইফুল চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান। নতুন করে পড়াশোনা করে বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেন চান ১৮ বছরে পা দেওয়া এই তরুণ।

জানা গেছে, আহছানিয়া মিশনের রাজধানীসহ দেশের তিন জেলায় নারী ও পুরুষদের মাদক মুক্ত করতে নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনা করছে। ২০০৪ সালে গাজীপুর জেলার গজারিয়া পাড়া এলাকায় প্রাকৃতিক ও মনোরম পরিবেশে মাদকাসক্তি মুক্ত করার চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ২০১৪ সালে যশোরে, ২০২১ সালে মুন্সিগঞ্জ ও রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে। এই সকল নিরাময় কেন্দ্র মাদকের কারণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া বহু মানুষের জীবনের আলোর বাতিঘর হয়ে উঠেছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আহছানিয়া মিশন পরিচালিত মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে ২০০৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৮৯ জনকে সেবা নিয়েছেন। ২ হাজার ৭৮৯ জন চিকিৎসা গ্রহণকারীর মধ্যে মাদকাসক্তজনিত সমস্যা দুই হাজার ১৪২ জনের এবং মানসিক সমস্যা ৬৪৭ জনের। যার মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থতার হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।

ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, আমরা তিন ধরনের রোগীকে সেবা দিয়ে থাকি। যেমন মাদকাসক্তি, আচরণগত এবং মানসিক সমস্যা। ৬ মাসের একটি কোর্সের আওতায় সেবা দেওয়া হয়। যারা পূর্ণমেয়াদে চিকিৎসা নিয়েছেন, পরবর্তীতে কোনো সমস্যা হলে তারা ১২ দিন বিনামূল্যে থাকা, খাওয়া ও কাউন্সেলিং সেবা নিতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের গাজীপুরের এই কেন্দ্র থেকে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি ধাপে চিকিৎসা সেবা হয়। আমার কেন্দ্রগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে সাধারণ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, নিয়মিত চেকআপ, রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ও পরীক্ষা করা হয়। এছাড়াও নিয়মিত বিশেষজ্ঞ মনোচিকিৎসকের মাধ্যমে কাউন্সেলিং করা হয়।

;

বাংলাদেশে বজ্রপাত নিরোধ যন্ত্র স্থাপনে সহায়তা করতে চায় ফ্রান্স



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশে বজ্রপাত নিরোধ যন্ত্র স্থাপনে সহায়তা করতে চায় ফ্রান্স

বাংলাদেশে বজ্রপাত নিরোধ যন্ত্র স্থাপনে সহায়তা করতে চায় ফ্রান্স

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রযুক্তি জ্ঞান বিনিময়, বজ্রপাত নিরোধ যন্ত্র স্থাপন, অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রশিক্ষণ প্রদানে সহায়তা করতে চায় ফ্রান্স।

সোমবার (১৩ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপে​​​​​​​ সাক্ষাত করতে গেলে তাৎক্ষণিক এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে রাষ্ট্রদূত এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন।

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মোঃ মহিববুর রহমান জানান, বজ্র নিরোধক যন্ত্র স্থাপন করাসহ এ বিষয়ে ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তুলতে কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

বর্তমান সরকার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্প্রতি বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, এ বিষয়ে জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে।

মহিববুর রহমান জানান, বজ্র নিরোধক প্রযুক্তি সুলভ ও ব্যাপকভিত্তিক করতে গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময় ও হস্তান্তরের ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

;

'সমাজ পরিবর্তনে পোশাক শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
'সমাজ পরিবর্তনে পোশাক শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে'

'সমাজ পরিবর্তনে পোশাক শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে'

  • Font increase
  • Font Decrease

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সরকার পোশাক শিল্পকে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সব থেকে বড় ক্ষেত্র হিসেবে দেখছে না, সমাজ পরিবর্তনেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

সোমবার (১৩ মে) সচিবালয়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনেও এ খাত মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। এখাতে প্রায় ৪২ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ শ্রমিক নারী। এই শিল্পের কল্যাণে নারীর ক্ষমতায়ন ফিরে এসেছে। নারীরা স্বপ্ন দেখতে শিখেছে। কাজেই সেই শিল্পকে আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এসময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান এবং বিজিএমইএ’র নবনির্বাচিত সভাপতি এস এম মান্নান কচির নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে সহ-সভাপতিবৃন্দ এবং পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

নড়াইলের লোহাগড়ায় ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নড়াইল
ছবিঃ বার্তা২৪.কম

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশায় ছুরিকাঘাতে ফয়সাল মুন্সী (১৫) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। 

সোমবার (১৩ মে) রাতে লক্ষীপাশা এলাকার মারকাজুল মাদরাসার উত্তরপাশের সড়ক থেকে পিঠে ছুরিবিদ্ধ অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত ফয়সাল লোহাগড়া ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের আহমেদ মুন্সীর ছেলে। সে পেশায় ইজিভ্যান চালক। তবে ঘটনার সময় ফয়সাল ভ্যান চালাচ্ছিল কিনা বিষয়টি তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয়রা পিঠে ছুরিবিদ্ধ অবস্থায় কিশোরের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে তার পরিচয় উদঘাটন করে পুলিশ। তবে কী কারণে কে বা কারা ফয়সাল মুন্সীকে হত্যা করেছে তা প্রাথমিক পর্যায়ে জানা যায়নি।

এবিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

;