দেশে বিদেশি ‘পতাকা উত্তোলনে’ যে সমস্যা



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। 

সোমবার (৬ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের সামনে কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবি ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শিত হয়। সংগঠনটির একই কর্মসূচি ছিল দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সেটাও পালিত হয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।

কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অল্প সময়ের মধ্যে হলেও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। সরকার-দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনটি কর্মসূচির প্রচারণায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ফটোকার্ড শেয়ার করে তাতে পিলে চমকে যাওয়ার মতো তথ্য; যেখানে লেখা ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশ।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সমাবেশ নিয়ে আপত্তি থাকার কথা না কারো, কিন্তু প্রশ্ন জেগেছে স্বাধীন দেশে অন্য দেশের ‘পতাকা উত্তোলন’ নিয়ে। এখানে উচিত-অনুচিতের দ্বন্দ্ব আছে, আছে আইনি বিধিনিষেধ; এবং এ-ব্যাপারে কি আদৌ সচেতন ছিল সংগঠনটি?

প্রশ্ন তুলেছিলাম এ-নিয়ে ফেসবুকে। বলেছিলাম, ‘এটা অতি-আবেগী, হাস্যকর ও অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। ফিলিস্তিনের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে, আমরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিচ্ছি; কিন্তু দেশটির পতাকা উড়ানোর মতো কর্মসূচি পতাকার আবেদন অনুধাবন করতে না পারার মতো ছেলেমানুষি ও হঠকারী কর্মসূচি। এটা ব্যক্তি-ব্যক্তিতে অনানুষ্ঠানিকভাবে করা যায়, কিন্তু দেশব্যাপী কর্মসূচি দিয়ে করার মতো আনুষ্ঠানিক করা যায় না। কর্মসূচি দিয়ে পতাকা উড়ানো মানে দেশ ও পতাকার প্রতি নিবেদন, আনুগত্য প্রদর্শন। এটা কেবল নিজ দেশের প্রতিই করা যায়। অন্য দেশের প্রতি করা যায় না। একদিনের জন্যে হোক, এক ঘণ্টা কিংবা এক মিনিটের জন্যে হলেও এই আনুগত্য প্রকাশ অপ্রত্যাশিত। এটা নিজ দেশের লাল-সবুজের পতাকার প্রতি আনুগত্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

ফেসবুকে লেখার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, এটা সংহতি সমাবেশ মূলত। পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি এখানে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়ে গেছে কেবল। তারা সচেতন থাকবেন এ-বিষয়ে, যাতে বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকার সঙ্গে আনুগত্য ও নিবেদনের প্রশ্নে সাংঘর্ষিক না হয়।

ছাত্রলীগের এই কর্মসূচির প্রতি চোখ রেখেছিলাম। ভিনদেশি পতাকা উত্তোলন বিষয়টির চাইতে সংহতির বিষয়টি তখন চোখে পড়েছে। আগ্রাসনের প্রতিবাদে তারা বক্তব্য রেখেছেন, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের প্রতি মানবিক আবেদনে জোর দিয়েছেন। দেশে-দেশের ছাত্র আন্দোলনের যে তরঙ্গ তাতে সামিল হওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা। এখানে মানবিক দিক যেমন আছে, তেমনি আছে ছাত্র-আন্দোলনের গভীরতা।

তারপরেও প্রশ্ন থাকে। কারণ ওই ‘পতাকা উত্তোলন’ প্রসঙ্গ! পতাকার আবেদন, নিবেদন এবং আনুগত্য। কারা, কোথায়, কী প্রক্রিয়ায় পতাকা উত্তোলন করতে পারে-এ সম্পর্কে কি সচেতনতা আছে সকল মহলে? সত্যি বলতে কী, এখানে আমাদের জানা-বুঝার সীমাবদ্ধতা রয়েছে অনেক।

‘জাতীয় পতাকা বিধিমালা’ রয়েছে আমাদের। এই পতাকা বিধিমালা মেনে চলা প্রতিটি নাগরিকের অবশ্য কর্তব্য। এটা কেবল কর্তব্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, অমান্য করলে আছে পড়তে হয় শাস্তির মুখে। ২০১০ সালে প্রণীত সংশোধিত পতাকাবিধি অনুযায়ী জাতীয় পতাকার ব্যবহার বিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। বিষয়টি কম-আলোচিত হলেও যে স্পর্শকাতর, তা এ-থেকেই অনুমেয়।

আমাদের দেশের পতাকা, কিন্তু নির্দিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ছাড়া চাইলেই কি আমরা ব্যক্তি-পর্যায়ে যেকোনো সময় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পতাকা উত্তোলন’ করতে পারি? মর্যাদার প্রশ্ন, তাই এখানেও আছে নিয়ম। ২০২৩ সালের সংশোধিত পতাকাবিধি অনুযায়ী ঈদে মিলাদুননবি, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, জাতির পিতার জন্মদিন জাতীয় শিশু দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, এবং সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত যেকোনো দিবসে কেবল বাংলাদেশের সর্বত্র পতাকা উত্তোলন করার নিয়ম। এরবাইরে আছে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধিবদ্ধ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। বিদেশি পতাকা উত্তোলনের বিষয়েও উল্লেখ আছে জাতীয় পতাকা বিধিমালায়। এর ৯ ধারায় স্পষ্ট, বাংলাদেশে কারা এবং কী প্রক্রিয়ায় বিদেশি পতাকার ব্যবহার করতে পারবে।

প্রসঙ্গের অবতারণা মূলত ছাত্রলীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু খানিক অমনোযোগিতা হয়েছে মূলত পতাকা উত্তোলন বিষয়ে চলে যাওয়ায়। জাতীয় পতাকা বিধিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এখানে বিদেশি পতাকা উত্তোলনের কোন কর্তৃপক্ষ নয়। এখানে কর্মসূচি ঘোষণা করে পরক্ষণে কেন্দ্রে হয়ত সচেতনতার খানিক প্রচেষ্টা ছিল, কিন্তু দেশব্যাপী এটা সম্ভব হয়নি। আমাদের ধারণা জাতীয় পতাকা বিধিমালা সম্পর্কে এখনো সচেতনতার অভাব রয়েছে। ফলে সবখানে যে নিয়ন্ত্রণ-নিয়মরক্ষা, সেটা হয়নি।

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আমাদের পুরনো দাবি। এই দাবি থেকে আমাদের সরে আসার সম্ভাবনা নাই। তবে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের প্রতি আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে আমরা যেন সংযত থাকি, অন্তত আনুগত্য ও নিবেদনের প্রশ্ন যখন সামনে চলে আসে। দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের অগণন নেতাকর্মী। এই বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের সামনে কোন কর্মসূচি দেওয়ার সময়ে খেয়াল রাখা উচিত দেশ-বিদেশ প্রশ্নে যেন কোন সাংঘর্ষিক কিছু না ঘটে। পতাকা নিয়ে যখন কর্মসূচি আসবে তখন যেন এমন কোন কিছু না ঘটে যাতে নিজ দেশের পতাকার মর্যাদাহানি ও পতাকাবিধির ব্যত্যয় না হয়।

কেবল ধারণা থেকে নয়, অভিজ্ঞতা থেকেই বলি, বিপুল লোকের অংশগ্রহণে কোন কর্মসূচিতে নিয়ন্ত্রণ সচরাচর থাকে না। পতাকা নিয়ে আগেও কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, মর্যাদাহানি হয়েছে। ওসব জায়গা থেকে আমাদের শেখার ছিল। আমরা হয়ত পুরোপুরি শিখিনি। তবু আশাবাদী হতে চাইছি। ভুল থেকে শিক্ষাগ্রহণের যে শিক্ষা সেটাকে গ্রহণ করতে চাই। ছাত্রলীগের এই কর্মসূচি থেকেও তাই একই প্রত্যাশা।  

আমাদের পঠন-পাঠনে বিস্তর সীমাবদ্ধতা। এটা স্বীকার করে এখান থেকে প্রাপ্তির সুযোগ খোঁজা যেতে পারে। দেশের অভ্যন্তরে বিদেশি পতাকা উত্তোলন নিয়ে খুব ক্ষীণ স্বরে হলেও যে প্রশ্ন, সেটাকে আমলে নেওয়া যেতে পারে এক্ষেত্রে। এবং এখান থেকে পঠনে আগ্রহ বাড়াতে হবে শিক্ষার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের। জাতীয় পতাকাবিধি নিয়ে পাঠ ও আলোচনার সুযোগকে গ্রহণ করতে হবে। কে জানে একটা ভুল হয়ত দেখাতে পারে সম্ভাবনার দুয়ার!

   

রিমালের তাণ্ডবে খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ লাখ মানুষ

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



ডিস্ট্রিক করেসপনডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
রিমালের তাণ্ডবে খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ লাখ মানুষ

রিমালের তাণ্ডবে খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ লাখ মানুষ

  • Font increase
  • Font Decrease

রিমালের তাণ্ডবে খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৫২ হাজার ২শ’ মানুষ। ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে ৭৬ হাজার ৯০৪টি এবং নিজ ঘরে গাছ চাপায় নিহত হয়েছেন একজন।

ঘূর্ণিঝড় চলাকালে সোমবার (২৭ মে) রাত ১টার দিকে জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলায় সুরখালি ইউনিয়নে নিজ ঘরে গাছচাপা পড়ে গাওঘরা গ্রামের গহর আলী মোড়লের ছেলে লাল চাঁদ মোড়ল (৩৬) নিহত হয়েছেন। 

সোমবার (২৭ মে) রাতে খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ নাজমুল হুসেইন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

জেলার কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ উপজেলায় কয়েক হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে এবং ভেঙে পড়েছে। ছোট বড় শত শত মাছের ঘের, পুকুর এবং ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট। অনেকের গবাদিপশু, গৃহস্থলির আসবাবপত্র জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।

সোমবার (২৭ মে) দুপুরের পর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে অনেক এলাকায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রোববার (২৬ মে) ও সোমবার (২৭ মে) ভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া বইছে খুলনা মহানগরীসহ উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে।

খুলনা শহরের মধ্যে সোমবার (২৭ মে) রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত খুলনা মহানগরীর অনেক সড়ক এবং ড্রেন ছিল পানির নিচে। নগরীর অনেক এলাকায় বসতঘরের মধ্যেও ছিল পানি।

খুলনা মহানগরীর ৩০নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোসাঃ শারমিন সুলতানা জানান, সোমবার রাতে ঘরে মধ্যে পানি ঢোকে। এখনো সেই পানি কমেনি। ঘরের আসবাবপত্র সব পানিতে ডুবে আছে। 

৩১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ আব্দুস সালাম জানান, ঘরের কথা কি বলবো। জিনিসপত্র সব খাটের উপরে। আর আমরা এক আত্মীয়ের বাড়িতে। মাঝে মাঝে এসে দেখে যাচ্ছি। তার উপর বিদ্যুৎ নেই।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৩১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আরিফ হোসেন মিঠু জানান, ভৈরব এবং রূপসা নদীতে ভাটা লাগলে শহরের পানি কমে যাবে। বৈরি আবহাওয়ার জন্য নদীর পানি কমছে না। ফলে শহরের পানি নামতে দেরি হচ্ছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ নাজমুল হুসেইন জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে জেলার ৭৬ হাজার ৯০৪টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার ৭শ’ ঘর সম্পূর্ণ ও ৫৬ হাজার ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার ৯ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৫২টি ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৫২ হাজার ২শ’ মানুষ। খুলনা নগরীতেও অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে।

;

চট্টগ্রামে খালে পড়ে নিহত তরুণ কলেজছাত্র ইমন



স্পেশাল করেমপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে খালে পড়ে নিহত তরুণ কলেজছাত্র ইমন

চট্টগ্রামে খালে পড়ে নিহত তরুণ কলেজছাত্র ইমন

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামে খালে পড়ে নিহত তরুণের পরিচয় মিলল। তাঁর নাম আজিজুল হাকিম ইমন। তিনি নগরের সদরঘাটের ইসলামিয়া কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ফেসবুকের মাধ্যমে খবর পেয়ে সোমবার (২৭ মে) রাত সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন ইমনের পরিবারের সদস্যরা। 

ইমনের ছোট ভাই রেজাউল হাকিম ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ফেসবুকে ভাইয়ের ছবি দেখে এলাকার লোকজন আমাদের খবর দেন। পরে আমি নিজেও ফেসবুকে দেখি। এরপর হাসপাতালের মর্গে এসে মরদেহ শনাক্ত করেছি। কীভাবে ভাইয়ের এমন পরিণতি হলো কিছুই বুঝতে পারছি না।'

তবে কিছুদিন ধরে ইমন মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন রেজাউল। বলেন, ভাই নিজে নিজে কথা বলতেন। নানা অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। এ জন্য চিকিৎসাও চলছে। সোমবার জোহর নামাজ পড়তে বাসা থেকে বের হন। এরপর তিনি আর ফেরেননি। বাসায় না ফেরায় খোঁজাখুজি করেও পাইনি। বাসা থেকে এতদূরে কীভাবে গেলেন বুঝতেছি না।'

ইমনদের বাসা রামপুর ওয়ার্ডের এয়াকুব আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এলাকায়। আর তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বাসার প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরের আছাদগঞ্জের চাক্তাই খাল থেকে।

খাল থেকে মরদেহক উদ্ধারের সময় ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চার যুবক ডুব দিয়ে এক যুবককে তুলে টেনে খালের পাড়ে নিয়ে আসেন। পরে পাড়ে থাকা লোকজনের সহায়তায় ওই যুবককে খাল থেকে তুলে আনা হয়। তখনও যুবক বেঁচে ছিলেন বলে একজনকে বলতে শোনা যায়। যদিও তরুণটি ছিলেন নিস্তেজ।

স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর বলেন, ‘সোমবার বিকেলে চাক্তাইখালে প্রচণ্ড স্রোত ছিল। এ সময় এক যুবককে খালে পড়ে যেতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। তারা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে ওই যুবক কীভাবে পড়লেন তা নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারেননি।’

কোতোয়ালী থানা পুলিশের এসআই বাবুল পাল জানিয়েছেন, বিকেল পৌনে চারটার দিকে সিসিটিভি ফুটেজে ওই যুবককে আছাদগঞ্জ থেকে চামড়া গুদামের দিকে যেতে দেখা যায়। এর কয়েক মিনিটের মাথায় স্থানীয় লোকজনকে চিল্লাচিল্লি করতে দেখা যায়। কয়েকজনকে খালে লাফিয়ে পড়তে দেখা যায়। এর আগে ওই যুবক খালে পড়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাবুল পাল আরও বলেন, কলাবাগিচা খাল ও চাক্তাইখালের সংযোগস্থলে একটি ব্রিজ রয়েছে। সেখানে পাশে সংকীর্ণ একটি উন্মুক্ত জায়গায় লোকজন প্রস্রাব করেন। বৃষ্টিতে খালের পাড় পিচ্ছিল ছিল। ধারণা করা হচ্ছে ওই যুবক ওখানে প্রস্রাব করতে গিয়ে খালে পড়ে স্রোতে তলিয়ে যান।

;

ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় নৈতিক শিক্ষার প্রভাব সূদূরপ্রসারী: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় নৈতিক শিক্ষার প্রভাব সূদূরপ্রসারী: ধর্মমন্ত্রী

ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় নৈতিক শিক্ষার প্রভাব সূদূরপ্রসারী: ধর্মমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান বলেছেন, একটি আদর্শ ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় নৈতিক শিক্ষার প্রভাব সূদূরপ্রসারী।

তিনি বলেন, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা শিক্ষার্থীদেরকে ধর্মীয় জ্ঞানে আলোকিত করার পাশাপাশি তাদের আচরণগত উৎকর্ষ সাধন এবং নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টিতে বিশেষ প্রভাব ফেলে।

সোমবার (২৭ মে) বিকেলে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে বিয়াম অডিটোরিয়ামে 'টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট অর্জন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসারে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের ভূমিকা' বিষয়ক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, মসজিদ-মন্দিরের মতো পবিত্র স্থানে বসে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা লাভের সুযোগ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সাধারণ শিক্ষার সাথে নৈতিক শিক্ষার মেলবন্ধনে শিক্ষার মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব অনেকগুণে বৃদ্ধি পায়। সমাজের সমস্ত জরা-ব্যাধি প্রতিরোধ করে একটি সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে এরূপ শিক্ষা অত্যন্ত ফলপ্রসূ।

ধর্মমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট ও সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনার নিরিখে কাজ করে যাচ্ছে। গত দেড় দশকে জাতির সামনে তিনি ৩টি উন্নয়ন পরিকল্পনা পেশ করেছেন। রূপকল্প-২০২১ এর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার সফল হয়েছে। বাংলাদেশ স্বপ্লোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে।

মোঃ ফরিদুল হক খান বলেন, কাউকে পিছিয়ে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এসডিজি’র অন্যতম মূলনীতি হলো কাউকে পিছিয়ে রাখা যাবে না। আমাদের মূল ফোকাসটা এখানেই। আমরা সবাইকে সমান তালে এগিয়ে নিতে চাই। সকল ধর্মের মানুষকে সমান গুরুত্ব দিয়ে তাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। সরকার সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ন্যায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সময়ে চারিদিকে নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় লক্ষণীয়। দুর্নীতি-সন্ত্রাস, ঘুষ, কালোবাজারি, মজুতদারি, ভেজাল প্রভৃতি ব্যাধি সমাজে জেঁকে বসেছে। এই ব্যাধির করাল গ্রাস থেকে সমাজকে বাঁচাতে হলে নৈতিক শিক্ষার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে এই প্রকল্পটির উপযোগিতা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে সেটা অবশ্যই আমলে নিতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সৎ ও একনিষ্ঠ থাকতে হবে।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মুঃ আঃ হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য এবং হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ড. বীরেন শিকদার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আরমা দত্ত, কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষেন্দু কুমার পাল ও মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কাযক্রম (৬ষ্ঠ পযায়) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ।

উল্লেখ্য, মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৬ষ্ঠ পযায়) প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় প্রকল্পের সহকারী পরিচালক, মাস্টার ট্রেইনার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, শিক্ষকমন্ডলী ও সাংবাদিকেরা অংশগ্রহণ করেন।

;

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পটুয়াখালীতে তিনজনের মৃত্যু

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, পটুয়াখালী
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পটুয়াখালীতে তিনজনের মৃত্যু

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পটুয়াখালীতে তিনজনের মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। 

নিহতরা হলেন কলাপাড়া উপজেলার মো. শরীফ (২৭), বাউফল উপজেলার করিম আলী (৬৫) ও দুমকি উপজেলার জয়নাল হাওলাদার (৭০)।

সোমবার (২৭ মে) রাতে জেলা দুর্যোগ ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজের বোন ও ফুফুকে বাঁচাতে গিয়ে মো. শরীফ (২৭) নামের একজন নিহত হয়েছেন। রবিবার (২৬ মে) দুপুরে কলাপাড়া উপজেলায় ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শরীফ অনন্তপাড়া এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে।

এদিকে সোমবার (২৭ মে) ঘূর্ণিঝড় রিমাল চলাকালীন গাছ চাপায় বাউফল উপজেলার রনাজিরপুর ইউনিয়নের ধানন্দী গ্রামের সোবহান আলীর ছেলে করিম আলী (৬৫) ও দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানী এলাকার আজিজ হাওলাদারের ছেলে জয়নাল হাওলাদার (৭০) নামে দুইজন নিহত হয়েছেন।

নিহতদের দাফন কাফনের জন্য তাৎক্ষণিক সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।

;