চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চসিক-সিএমপি চুক্তি সই



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম মহানগরীতে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) একটি চুক্তি সই করেছে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের কোনো শহরের দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এটিই প্রথম চুক্তি সই।

মঙ্গলবার (৭ মে) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়ের উপস্থিতিতে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও সিএমপির ডেপুটি কমিশনার (হেড কোয়ার্টার) আব্দুল ওয়ারিশ নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

সভায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চসিক এবং সিএমপি যানজটমুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে একসঙ্গে কাজ করছে। ইতোমধ্যে, উচ্ছেদ কার্যক্রমের কারণে শহরে যানজট কমেছে। এই চুক্তির আওতায় পারস্পরিক তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমরা নিরাপদ নগর পরিকল্পনায় আরো এগিয়ে যাবো

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, তথ্যের এই আদান-প্রদান ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে আরো বেশি বিজ্ঞানভিত্তিক ও গতিশীল করবে। ভূমিকা রাখবে সড়ককে আরো নিরাপদ করতে।

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) বিশ্বের ২৮টি শহরে রোড ক্র্যাশে মৃত্যু ও হতাহতের সংখ্যা কমাতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছে। চট্টগ্রামেও বিআইজিআরএসের কারিগরি সহায়তায় চসিক ও সিএমপি নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কাজ করবে।

জানা গেছে, এ চুক্তির লক্ষ্য চট্টগ্রামে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্বশীল দুটি প্রধান সংস্থা সিএমপি এবং চসিকের মধ্যে একটি সমন্বয় প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করা। নগরের সড়ক ব্যবস্থাপনা, সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য লিপিবব্ধ করা এবং তদন্তের দায়িত্ব সিএমপির। অন্যদিকে, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিদ্যমান রাস্তাগুলির দেখভালের কাজটি চসিকের।

এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় সংস্থাই চট্টগ্রাম মহানগরীতে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য তথ্য আদান-প্রদান এবং সমন্বয় করে কাজ করবে।

এই চুক্তি দুর্ঘটনার তথ্য আদান-প্রদান, ব্যবস্থাপনা এবং বিশ্লেষণ, রাস্তার ডিজাইন এবং তথ্য-উপাত্ত যথাযথভাবে ব্যবহারের জন্য একটি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করবে। এর ফলে প্রতিটি সংস্থা কার্যকরভাবে তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে সড়ক নিরাপত্তায় শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। এছাড়া সড়ক অবকাঠামোর নকশা, নির্মাণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে উভয় সংস্থা একে অপরের সঙ্গে পরামর্শ করবে।

এই চুক্তির অধীনে, চসিক ও সিএমপি দুর্ঘটনার তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে শহরে দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা কমিয়ে আনতে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তারা তথ্য বিশ্লেষণ করবে এবং যৌথভাবে বার্ষিক সড়ক নিরাপত্তা প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।

সংস্থাগুলি শহরের সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং রোডগুলি চিহ্নিত করতে একত্রে কাজ করবে, যেখানে নকশা পরিবর্তন, পরিমার্জন করা দরকার। বৃহত্তর অর্থে, এই চুক্তিটি সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য চসিক ও সিএমপির মধ্যে একটি সমন্বিত পদ্ধতির বিকাশ ঘটাবে।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাহাদুর, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আকবর আলী, ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের এমবেডেড কর্মকর্তারা।

   

‘কিরগিজস্তানে হামলার স্বীকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে গুরুতর আহত নেই’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কিরগিস্তানে শিক্ষার্থীদের উপর যে হামলা হয়েছে সে ঘটনায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী কেউ গুরুতর আহত হয়েছে এমন খবর নেই। আমাদের কিরগিস্তানে আমাদের দূতাবাস নেই। উজিবেগিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে সেখানে যেতে বলেছি।

রোববার (১৯ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সংগঠন ওভারসিস করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ওকাব) ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘রোহিঙ্গা সংকট: ভবিষ্যৎ পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলন, ইতিমধ্যে কিরগিস্তান প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বাংলাদেশি কোনো শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর নেই। যে কোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের উজবেকিস্তানের দূতাবাসে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে৷‌

জানা গেছে, গত ১৩ মে একদল মিশরীয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে কিরগিজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে কী নিয়ে তাদের মধ্যে এই বিরোধ বেঁধেছিল তা নিশ্চিত নয়। তবে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে কিরগিজ রাজধানীতে বেশকিছু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ও বেসরকারি আবাসনে হামলা চালায় স্থানীয়রা। এসব হোস্টেল ও ভবনে মূলত বিদেশি শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন।

;

এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বনানী সেলস অফিস উদ্বোধন করলেন সাদিয়া ইসলাম মৌ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বনানী সেলস অফিস উদ্বোধন করলেন সাদিয়া ইসলাম মৌ

এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বনানী সেলস অফিস উদ্বোধন করলেন সাদিয়া ইসলাম মৌ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের নবীনতম বেসরকারি এয়ারলাইন্স এয়ার এ্যাস্ট্রা আজ ১৯ মে বনানীতে এয়ারলাইন্সটির নতুন সেলস অফিস এর যাত্রা শুরু করলো। সেলস অফিসটির উদ্বোধন করেন নন্দিত নৃত্যশিল্পী, মডেল ও অভিনেত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ। তার সাথে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এয়ার এ্যাস্ট্রার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ইমরান আসিফ, চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সোহেল মজিদসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মকর্তারা। উদ্বোধনের পর মিলাদ এর আয়োজন করা হয়, যেখানে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি’র প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাদিয়া ইসলাম মৌ বলেন, এয়ার এ্যাস্ট্রা’র এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত বোধ করছি। এরই মধ্যে এয়ারলাইনটি তাঁদের ভাইব্রেন্ট লুক ও প্রিমিয়াম সার্ভিস দিয়ে যাত্রীদের মন জয় করেছে। আমি আশা করি তারা তাদের সার্ভিস ও নিরাপদ ফ্লাইট পরিচালনার মধ্য দিয়ে যাত্রীদের সেবা দেওয়া চলমান রাখবে।

এটি এয়ার এ্যাস্ট্রা’র চতুর্থ সেলস অফিস। সেলস অফিসটির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এখন থেকে যাত্রীরা বনানী সেলস অফিস থেকে সরাসরি টিকিট ও হলিডে প্যাকেজ ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও যাত্রীদের টিকিট রিফান্ড, ফ্লাইটের সময় পরিবর্তনসহ অন্যান্য যাবতীয় সুবিধা এই সেলস অফিস থেকে প্রদান করা হবে।

এয়ার এ্যাস্ট্রা বর্তমানে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা, ঢাকা-চট্রগ্রাম-ঢাকা, ঢাকা-সিলেট-ঢাকা এবং ঢাকা-সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বহরে বর্তমানে তিনটি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে, যা ফ্রান্সে নির্মিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টার্বোপ্রপ এয়ারক্রাফট এবং ৭০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম। খুব শিঘ্রই আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট শুরু করবে এয়ার এ্যাস্ট্রা।

;

বগুড়ায় হঠাৎ একই বিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থী অসুস্থ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
বগুড়ায় হঠাৎ ২২ শিক্ষার্থী অসুস্থ

বগুড়ায় হঠাৎ ২২ শিক্ষার্থী অসুস্থ

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ায় একটি বিদ্যালয়ে হঠাৎ করেই একে একে ২২ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে তাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে ছুটি ঘোষণা করা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। অসুস্থদের অধিকাংশই ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

রোববার (১৯ মে) দুপুর ২টার দিকে কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে এই ঘটনা ঘটে।

বগুড়া কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আল মামুন সরদার জানান, দুপুরে টিফিন চলাকালে ৬ষ্ঠ শ্রেণির রুজাইফা নামের এক শিক্ষার্থী মাঠে খেলতে গিয়ে অসুস্থ বোধ করে। এরপর সে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যায়। কিন্তু সেসময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ফলে সে আরও অসুস্থ বোধ করলে তাকে অফিস কক্ষে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এবিষয়টি অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে একে একে তারাও অসুস্থবোধ করতে শুরু করে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই জানায় তাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তখন পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে তাদের মাধ্যমে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠানো হয়, সেইসাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়।

খবর পেয়ে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু।

তিনি বলেন, গরমের কারণে হয়তো একজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছিল। তার দেখাদেখি অন্যরাও অসুস্থ হতে থাকে। এটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ‘মাস সাইকোজেনিক ইলনেস’ বলে। মানসিক চাপ ও ভয় থেকে এটি হয়ে থাকে। এনিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তারা বিশ্রাম নিলেই সুস্থ হয়ে উঠবে বলেও উল্লেখ করেন ডা. মিশু।

;

‘৪৬ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবার মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় সরকারি সুবিধার ২০ শতাংশও ভোগ করতে পারে না। ৪৬ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা খরচ মেটাতে কোনো না কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। দরিদ্র জনসংখ্যার চাহিদা পূরণের জন্য সরকারের বরাদ্দও অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে দেশের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে এসডিজি অ্যাকশন এলায়েন্স বাংলাদেশ।

রোববার (১৯ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি হলে আয়োজিত ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার অধিকার প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের অবস্থানপত্র শীর্ষক’ এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এসডিজি অ্যাকশন এলায়েন্স বাংলাদেশ, গ্লোবাল কল টু অ্যাকশন এগেইনস্ট পোভার্টি ও নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এনআরডিএস)।

এসডিজি অ্যাকশন অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক ও এনআরডিএস'র প্রধান নির্বাহী আবদুল আউয়াল বলেন, কোভিডের আগের ধারাবাহিকতায় বাজটে স্বাস্থ্য খাত অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। মহামারির সময়ই স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দুরবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছিল। কিন্তু এরপরও বাজেটে এই খাত প্রত্যাশিত মনোযোগ পাচ্ছে না। টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লেও বাজেট ও মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় বরাদ্দ খুব একটা বাড়ছে না। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় করে, যা বৈশ্বিক গড় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে অনেক কম। সবার জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের সক্ষমতা তৈরির ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বাধা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে আব্দুল আউয়াল বলেন, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে একজন বাংলাদেশির বছরে ৮৮ ডলার খরচ করা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে মাথাপিছু খরচ হয় ৫৮ ডলার, যার বড় অংশই নাগরিকরা নিজেরা সংস্থান করেন। বাংলাদেশের জনগণ তাদের স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭০ শতাংশ নিজেরাই সংস্থান করতে বাধ্য হয়।

তিনি আরও বলেন, এটি অনেক পরিবারের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য আর্থিক সংকট এবং এটি মানুষের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবাকে বিলম্বিত করে। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশের নাগরিকরা তাদের স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭০ ভাগ নিজেকে ব্যয় করতে হয়।

এসডিজি অ্যাকশন অ্যালায়েন্স ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় অভিগম্যতা, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের হার এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে নোয়াখালী, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশালের ৬০০ নাগরিকের ওপর মতামত জরিপ পরিচালনা করে। এতে দেখা গেছে ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ কমপক্ষে একটি ডোজ পেয়েছেন, ২১ দশমিক ৩ শতাংশ কোনো টিকা নেননি।

প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার জন্য সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে প্রান্তিক মানুষের অভিগম্যতার হার ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু অনেক প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছিল । সমীক্ষায় দেখা যায়, ৪৬ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা খরচ মেটাতে কোনো না কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্পর্কে প্রান্তিক মানুষের সচেতনতার হার ভালো ৮৩ শতাংশ থাকা সত্বেও দুর্নীতি, স্বজনতোষন, হয়রানির কারণে বিপদাপন্ন মানুষের তালিকায় নাম লেখাতে পারেননি।

লিখিত বক্তব্যে বেসরকারি সংস্থা বন্ধনের নির্বাহী পরিচালক আমিনুজ্জামান মিলন ৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য সেবায় অভিগম্যতা সম্প্রসারণে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো অপরিহার্য। স্বাস্থ্য বিমা কর্মসূচির আওতা প্রসারিত করে এবং স্বাস্থ্যসেবা খরচের জন্য ভর্তুকি প্রদান করে স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যয় কমানো যায়। সরকার আরও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা তৈরি করে, আরও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ ও পরিষেবাগুলোকে আরও সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারে। সরকার সব নাগরিকের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য শিক্ষা, কৃষি, এবং পানি ও স্যানিটেশনের মতো অন্যান্য সেক্টরের সাথে কাজ করে স্বাস্থ্যের সামাজিক নির্ধারকগুলোর সমাধান করতে পারে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত নারী অধিকার জোটের সদস্য সচিব মনোয়ার আক্তার মিনু।

;