ঝড়ে ডুবল ফিশিং বোট, ক্যাপ্টেনের সহায়তায় প্রাণে বাঁচল ১২ জেলে
বুধবার সকাল। হঠাৎ দমকা হাওয়াসহ বর্জ্য বৃষ্টির কবলে পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্রবন্দর। এই বৈরী আবহাওয়ায় চট্টগ্রাম বাঁশখালী উপকূলের কাছাকাছি এসে ঝড়ের কবলে পড়ে মাছ ধরার বেশ কয়েকটি ট্রলার। ডুবে যায় ফিশিং বোট। প্রাণে বাঁচতে বোট ধরে দীর্ঘ সময় ভাসতে থাকেন ১২ জেলে।
ওই পথ ধরে ফিরছিলেন অন্য বোটের যাত্রী ক্যাপ্টেন হাসনাত। দূর থেকে হাত ভাসতে দেখে তাদের উদ্ধার করেন তিনি।
বুধবার (০৭ মে) বার্তা২৪.কমকে এসব জানান ক্যাপ্টেন সৈয়দ হাসনাত।
ক্যাপ্টেন হাসনাত বলেন, আজকে সকালে ৭ টার দিকে হঠাৎ করে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ঝড় থাকে। আমার একটা প্রোগ্রাম ছিল। আমরা মূলত মাদার ব্যাসেলে গিয়ে বড় জাহাজ চিটাগাংয়ে নিয়ে আসি। এমনই একটা প্রোগ্রাম ছিল আজ। সকাল ৭টার আগে রওনা হওয়া কথা থাকলেও ঝড়ের কারণে দেরী হয়। সমুদ্র কিছুটা স্বাভাবিক হলে আমরা রওনা দেই। ছোট একটা বোটে করে যাচ্ছিলাম জাহাজের (মাদার ব্যাসেলের) দিকে। জাহাজটা তখন কুতুবদিয়া থেকে আসছিল। একটা নির্দিষ্ট পয়েন্ট আছে যেখান থেকে জাহাজে উঠি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, বাঁশখালী উপকূলের কাছাকাছি গেলে দেখতে পাই- পানির উপর হাত। কাছে গিয়ে দেখি বোট উল্টে গেছে। জেলেরা কাঠের বোট এবং কাঠ ধরে ভেসে আছে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করলাম। তার কিছুক্ষণ পরেই দেখি আরেকটা বোট। সেই বোটটিও উল্টে আছে। সেখানেও ৪/৫ জন ভেসে আছে। সব মিলিয়ে দুইটা বোট থেকে ১২ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়। জেলেদের আমরা পরে ডাঙ্গায় নামিয়ে দিয়ে কাজে যাই।
‘উদ্ধার হওয়া লোকজন মৎস শিকারি। ঝড়ের কবলে পরে তাদের বোট ডুবে যায়। আর সেই সময় থেকেই তারা প্রায় দুই আড়াই ঘণ্টা ভেসে ছিল। প্রচুর নোনা পানি খেয়েছে। যখন উদ্ধার করি তখন তাদের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। এদের মধ্যে একজন সাঁতার জানতো না। সে প্রচুর লবণ পানি খেয়েছিল। বমি করছিল। প্রথমে তাকে নিয়ে একটু টেনশনে ছিলাম কিন্তু পরে সে আস্তে আস্তে সুস্থ হয়।’ এই বলছিলেন এই ক্যাপ্টেন।
জেলেদের কাছ থেকে কোন নিখোঁজের তথ্য পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওখানে ১০ থেকে ১২টা বোট ডুবেছিল। তার মধ্যে আমরা ২টি বোট উদ্ধার করেছি। এর মধ্যে কোন নিখোঁজ আছে কিনা জানি না। তবে এই দুইটা বোটের সবাইকে ভালোভাবে উদ্ধার করতে পেরেছি। কোন নিখোঁজ নেই।