বাবার স্বপ্নপূরণে দেশে ফিরে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌজন্য: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌজন্য: ফোকাস বাংলা

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল এ দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলায় পরিণত করা। বাবার সেই স্বপ্নপূরণের জন্যই এদেশে ফিরে এসেছি।

তিনি বলেন, মানুষের যদি রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা না থাকে, দেশপ্রেম না থাকে, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় না থাকে, তাহলে সেটা এগুতে পারে না। সামনে আরও বদলাতে হবে। কারণ আমার বাবার একটাই স্বপ্ন ছিল দেশটাকে গড়ার। আমাদের পরিকল্পনা সেটাই আছে। জনগণকে সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে।

শুক্রবার (১৭ মে) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতারা শুভেচ্ছা জানাতে গেলে এসব কথা বলেন তিনি।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগে বিদেশ যাওয়ার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করেছিলাম আমরা খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসব। কিন্তু সেই ফিরে আসা আর হয়নি।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি জানতাম না যে, আমাকে এতবড় একটা দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমি কখনো এটা ভাবতে পারিনি।

ছোটবোন শেখ রেহানার বিয়েতে অংশ নিতে পারেননি বলে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কিন্তু যখন তার বাচ্চা হবে, মিসেস গান্ধী আবার ক্ষমতায় এলেন, তিনি সব ব্যবস্থা করে দিলেন, আমি গেলাম। এরপর আবার দিল্লিতে ফেরত এলাম।

তখন আমাকে লন্ডন থেকে আওয়ামী লীগের নেতা মাহবুবুর রহমান টেলিফোন করে বললেন আপনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। আমি তাকে বললাম আমি তো আওয়ামী লীগের সভাপতি হতে চাই না, আমাকে কেন করবে? আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আছে।

এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। ঝড়-ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ সেই দিনে বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে লাখ লাখ জনতা তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানায়।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গণভবনে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা

শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরেন তখন যুদ্ধাপরাধী ও জাতির পিতার হত্যাকারীরা ক্ষমতায় ছিল। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমার পাশে ছিল বাংলাদেশের জনগণ। আমি জানতাম আমাকেও আমার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে। কিন্তু দেশবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আমার আস্থা ছিল। 

সরকারপ্রধান বলেন, প্রতিবার নির্বাচনের সময় চক্রান্ত হয়, সেটা মোকাবিলা করে আমরা বেরিয়ে আসি। আমাদের তা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে যে অধিকারগুলো আদায় করেছিল, সেটা আমরা সমুন্নত করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, আমি আমার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলবো- আমার সব শক্তি ও সাহস মা-বাবার কাছ থেকে পেয়েছি। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় এত বড় সংগঠন চালানোর অভিজ্ঞতা আমার ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ এখন দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী, বৃহত্তম এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ পঞ্চম মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছিল। দেশের কোনো উন্নতি করতে পারেনি। তারা বরং শত শত সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অমানবিক নির্যাতন ও হত্যা করেছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, কী পেলাম, না পেলাম সেই চিন্তা করেনি। ভবিষ্যৎ কী সেই চিন্তাও করি না। চিন্তা করি দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ যেন আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলে দিয়ে যাব। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

নেতাদের আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, এটাই মনে রাখবেন একটা দল করি শুধু নেতা হওয়ার জন্য নয়, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কী দিতে পারলাম, কী দিয়ে গেলাম। এটাই রাজনৈতিক মানুষের জীবনের বড় কথা। এই কথা মাথায় রাখতে পারলে দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা যেতে পারে।

সংগঠনকে শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আর যেন যুদ্ধাপরাধী, খুনিরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, এই ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।

দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে যে অধিকার পেয়েছিল, তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছি উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, দেশের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা হয়েছিল ও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার ও জয় বাংলা স্লোগানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু জয় বাংলা স্লোগান আবার ফিরে এসেছে এবং জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিলে যেমন স্থান করে নিয়েছে। তেমনি অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

এর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গণভবনে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

   

পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ: গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শূন্য চার গ্রাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কোরবানির পশুর হাট বসানোকে কেন্দ্র করে পুলিশ-জনতার সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলায় নামীয় ৩৩ জন ও অজ্ঞাতনামা ৭০ থেকে ৮০ জনসহ ১১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই মামলার ছয় অভিযুক্তকে। ফলে গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে উপজেলার চার গ্রাম। দুদিন বাদেই আনন্দের ঈদুল আজহা হলেও অবুঝ সন্তান নিয়ে নানা শঙ্কা ও আতঙ্কে দিন কাটছে ওইসব গ্রামের গৃহবধূদের।

গত বুধবার (১২ জুন) বিকেলে উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের মজুমদার বাজার সংলগ্ন জমিতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় চার পুলিশসহ অন্তত ১২ জন আহত হন। এ সময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিন রাউন্ড গুলিও বিনিময় করেছে পুলিশ। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ওই সময় ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করে ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য দেন হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা, ইজারাদার ও পুলিশ।

ঘটনার দিন রাতেই (১২ জুন) ওই এলাকার ৩৩ জন নামীয় ও ৭০ থেকে ৮০ জন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে দেওয়ার অভিযোগে সুন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। মামলার পর ওই রাতেই উপজেলার শান্তিরাম এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে রুবেল মিয়া (২৯), সতীরজান এলাকার লাল মিয়ার ছেলে মজিবুর রহমান (৫১) ও উত্তর ধর্মপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মামুন অর রশিদ (২৯)সহ তিন গ্রামের তিনজকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পরদিন বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতে গ্রেফতার করা হয় আরও তিনজনকে। পুলিশের এমন তৎপরতায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে পাঁচগাছি শান্তিরাম, খামার ধুবনী, সতীরজান ও উত্তরধর্মপুরসহ চার গ্রাম। তারা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে রয়েছেন। বাড়িতে রয়েছে কেবল নারী-শিশু ও বৃদ্ধরা।

শান্তিরাম গ্রামের সত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধা রোকেয়া বেওয়া জানান, হাটের ঘটনায় প্রতিদিন রাতেই পুলিশ আসছে। এরমধ্যে তিন গ্রাম থেকে নাকি ছয়জনকে ধরেও নিয়ে গেছে। সেজন্য এই গ্রামে কোনো পুরুষ মানুষ নাই, সবাই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কাল বাদে ঈদ। যাদের বাড়িতে পুরুষ নাই, তারা কেমনে ঈদ করবে?

হাট ইাজারাদার সংশ্লিষ্টদের দাবি, তারা সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এক বছরের জন্য মজুমদার হাটটি ইজারা নিয়েছেন। সেখানে কোরবানি ঈদ উপলক্ষে পশুর হাট বসানোর জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে অনুমতি চায় তারা । অনুমতি না পেয়ে হাট বসানোর জন্য হাইকোর্টে আবেদন করলে গত ১১ জুন হাইকোর্টের আইনজীবী মো. নূরনবী উপজেলা প্রশাসন বরাবর একটি উকিল নোটিশ পাঠায়। যার প্রেক্ষিতে প্রশাসন তাদের মৌখিভাবে সেখানে পশুরহাট বসানোর নির্দেশ দেন বলেও দাবি তাদের।

তাদের অভিযোগ, হাট বসাতে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ তাদের কাছে ১ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। পুলিশের দাবির প্রেক্ষিতে ইজারাদারের পক্ষ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলেও পুলিশ সর্বশেষ ৫০ হাজার টাকা চেয়ে বসেন। পরে এ নিয়ে বারবার দেন-দরবারের এক পর্যায়ে গত বুধবার বিকেলে হঠাৎ পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং পশুর হাট অবৈধভাবে বসানো হয়েছে জানিয়ে, বিভিন্ন মহলের অভিযোগের কথা তুলে ধরে হাট পণ্ড করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশের এমন কাণ্ডের একপর্যায়ে হাটে থাকা উপস্থিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এতে পুলিশ ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের ছত্রভঙ্গ করতে তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। একপর্যায়ে ইজারাদারের লোকজন, হাটের ক্রেতা-বিক্রেতা, দালাল ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় নগদ প্রায় ৩০ লাখ টাকাসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০টি গরু-ছাগল হারিয়ে গেছে।

পুলিশের দাবি, ‘৯৯৯’ নম্বরে বিভিন্ন মহলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে কোরবানির পশুরহাট না বসানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। কিন্তু হাট ইজারাদার সংশ্লিষ্টরাসহ উপস্থিত জনতা পুলিশের সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করেন। তাদের আক্রমণে পুলিশের এসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই মাসুদ রানা, কনস্টেবল মনির হোসেন ও সোলায়মান হোসেন আহত হয়েছেন।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, মজুমদার হাটে সরকারি কাজে বাঁধা এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ওই দিন রাতেই ৩৩ জন নামীয় এবং ৭০ থেকে ৮০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত এজাহার নামীয় ছয়জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এসময় হাট ইজারাদারের কাছে উৎকোচ চাওয়ার বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, কেবল ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। কোনোভাবেই নিরপরাধ কোনো মানুষকেই হয়রানি করতে গ্রেফতার করা হবে না। যারা অপরাধ করেনি বাড়িতে থাকতে তাদের কোনও ভয় নেই।

এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, মজুমদার হাটে পশুর হাট বসাতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অনুমতি দেওয়া হয়নি।

পরে কেন মজুমদার হাটের ইজারাদার কোরবানির পশুর হাট বসাতে পারবেন না, সে মর্মে হাইকোর্ট থেকে একটি লিগ্যাল নোটিশ সুন্দরগঞ্জ ইউএনও বরাবর পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপির মতামতের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞ পিপি মহোদয়ের মতামত পেলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;

ঈদুল-আজহা

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে শীর্ষে ইকোনো-ঢাকা এক্সপ্রেস, লাল সবুজ-হিমাচল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রিয়জনদের সঙ্গে কোরবানি দেওয়া ও ঈদ পালন করতে ঢাকা ছাড়ছেন রাজধানীবাসী।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজধানীর শেষ কর্মদিবস হওয়ায় শুক্র ও শনিবার বাস টার্মিনালগুলোতে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে।

এই সুযোগে ঢাকার চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলের বিভিন্ন পরিবহন কাউন্টার পয়েন্টে যাত্রীদের ভিড়কে পুঁজি করে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।

এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে, ঢাকা-লক্ষ্মীপুর রুটের ‘ইকোনো পরিবহন’ ও ‘ঢাকা এক্সপ্রেস’। একই অভিযোগ ঢাকা-নোয়াখালী রুটের ‘লাল সবুজ’ ও ‘হিমাচল’ পরিবহনের বিরুদ্ধে।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে যাত্রীদের অভিযোগ, কয়েকটি পরিবহনে ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। প্রতিবছর ঈদকে কেন্দ্র করে এই রুটে বাস মালিকদের চাঁদাবাজি বেশি হয়। প্রতি টিকিটে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩শ থেকে ৪শ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে কাউন্টারগুলো। বিশেষ করে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর রুটের ইকোনো ও ঢাকা এক্সপ্রেস ৫শ ৫০ টাকার টিকিট শনিবার ৮শ থেকে ৯শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে।

একই অভিযোগ, নোয়াখালী রুটের বাস কোম্পানি মালিকদের বিরুদ্ধেও। এই রুটের বাস ‘লাল সবুজ’ ও ‘হিমাচল’ পরিবহনও নির্ধারিত ভাড়া থেকে ৩শ থেকে ৪শ টাকা বেশি ভাড়া আদায় করছে।

ঈদ এলেই বেড়ে যায় বাস ভাড়া, ছবি- সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল হুজুর বাড়ি এলাকায় ইকোনো পরিবহনের বাস যাত্রী শামীম হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঈদ এলেই বাড়তি ভাড়ার বোঝা নিতে হয় আমাদের। কয়েক সপ্তাহ আগেও ইকোনো পরিবহনে যে টিকিট ৫শ ৫০ টাকা ছিল, সে টিকিট এখন ৮শ টাকা নিয়েছে।

গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন যাত্রী বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সরকারি অফিসের পাশাপাশি বেসরকারি অনেক অফিসও ঈদের ছুটি হয়েছে। ভেবেছিলাম, বৃহস্পতি বা শুক্রবারের পরে গেলে ভাড়া কমবে। এখন উল্টো ভাড়া আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

‘ইকোনো’ কাউন্টারের ম্যানেজার বার্তা২৪.কমকে বলেন, যে বাসগুলো এখন ঢাকা থেকে ছেড়ে যাচ্ছে, এই বাসগুলো ঢাকার আসার পথে খালি আসবে। সে কারণে তেলের টাকা ওঠানোর জন্য ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। কিছু যাত্রী আবার খুশি হয়ে বকশিশ দিচ্ছেন।

‘লাল সবুজ’ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা তো কম রেখেছি। অন্যরা তো আরো বেশি রাখছে। তার দাবি, বছরের অন্যান্য সময় মূল্য তালিকার চেয়ে ভাড়া কম রাখা হয়। সে কারণে ঈদে তারা সামান্য বেশি নিয়ে থাকে।

এদিকে, শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বা যাত্রী হয়রানি বন্ধে বাস মালিক সমিতি ও বিআরটিএ’র কাউকে দেখা যায়নি।

যাত্রীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় বাস মালিকেরা যে যার মতোন করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।

;

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট হচ্ছে কৃষি: পলক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্বে স্মার্ট হচ্ছে কৃষি, এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।

শনিবার (১৫ জুন) চলনবিলের সাতপুকুরিয়ায় পৌনে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএডিসি’র ফসল সংগ্রহ ও মজুদ কেন্দ্র এবং থ্রেশিং ফ্লোর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

পলক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের সূচনা করেন। বঙ্গবন্ধুর দর্শন অনুসরণ করেই আজ আমরা কৃষিতে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে মাটি আর মানুষের শক্তিকে কাজে লাগানোর কথা বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে। সার, বীজ আর সেচ ব্যবস্থাকে সহজলভ্য করে দেওয়া হয়েছে।বিভিন্ন শস্য উৎপাদনে নিয়মিত প্রণোদনা পাচ্ছেন দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা। কৃষিতে শ্রম সংকটের নিরসনে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে হারভেস্টর, পাওয়ার থ্রেসারসহ প্রয়োজনীয় কৃষিযন্ত্র প্রদান করা হচ্ছে। নতুন-নতুন প্রযুক্তি আর প্রশিক্ষণ প্রদানের ফলে কৃষির উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণে। চলনবিল পরিণত হয়েছে শস্য ভান্ডারে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষিসহ দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের মানুষকে সুশাসন উপহার দিয়েছেন। শতভাগ বিদ্যুৎ আর দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা গ্রহণ করে গ্রামীণ জনপদ এখন অর্থনৈতিকভাবে অনেক সুসংহত। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের কারনে জীবনযাত্রার মান এখন সহজ ও সুন্দর। এখন আর চলনবিল অনগ্রসর জনপদ নয়, বিদ্যুৎহীন আর নিরাপত্তাহীনতায় মানুষকে আর অসহায় জীবন যাপন করতে হয় না। দেশের উন্নয়নের সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে দেশ।

বিএডিসি নাটোরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার হা-মীম তাবাসসুম প্রভা এবং সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শেখ ওহিদুর রহমান।

এরআগে প্রতিমন্ত্রী সাতপুকুরিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে ৬ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রতিমন্ত্রী ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে পুনঃনির্মিত ডাহিয়া বাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন করেন।

প্রতিমন্ত্রী দিনব্যাপী কর্মসূচিতে সকালে সিংড়াতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির ১৪৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেন।

;

অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই লঞ্চকে ধাওয়া করলেন ম্যাজিস্ট্রেট, জরিমানা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,লক্ষ্মীপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নিয়ম অমান্য করে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে লক্ষ্মীপুরে এমভি পারিজাত-১ নামে একটি লঞ্চের মালিককে ১০ হাজার টাকার জরিমানা করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে সদরের মজু চৌধুরীর হাটের লঞ্চ ঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এ জরিমানা আদায় করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মুজিবুর রহমান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিআইডব্লিউটিএ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আবদুর রহমান, নৌ-পুলিশের সহকারী উপ পরিদর্শক মো. সাইফুজ্জামান।

জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে লক্ষ্মীপুর ভোলা-বরিশাল নৌ-রুটে যাত্রীদের উপচে পরা ভিড় থাকে। এ সুযোগে লঞ্চগুলো সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করে থাকে। এমন অভিযোগে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাট এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এমভি পারিজাত-১ নামে একটি লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করে ভোলার উদ্দেশ্য রওনা হয়। এসময় বারবার বারণ করা সত্ত্বেও লঞ্চটি না থেমে চলতে থাকে। পরে স্পিডবোডে ধাওয়া করে মাঝ নদীতে লঞ্চটি থামানো হয় এবং ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ঈদ এলেই লক্ষ্মীপুর ভোলা-বরিশাল নৌ-রুটে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় থাকে। এ সুযোগে কিছু অসাধু লঞ্চ ঝুঁকি জেনেও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নদীপথে যাতায়াত করে। যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

;