বাংলাদেশে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ আটকে রয়েছে। এই অর্থ ৪০ মাস ধরে আটকা পড়ে আছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ ৮টি দেশে আটকে রয়েছে বিদেশি এয়ারলাইন্সের ৮৭ শতাংশ রাজস্ব আয়ের অর্থ।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসেসিয়েশনের (আইএটিএ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের এয়ারলাইন্সগুলোর ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন হচ্ছে আইএটিএ, যা ৩০০ এয়ারলাইন্সের একটি সংস্থা।
এই দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানে আটকে রয়েছে ৪১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আলজেরিয়ায় ২৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, এক্সএএফ জোনে (মধ্য আফ্রিকার ৬টি দেশ) ১৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ইথিওপিয়ায় ১৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, লেবাননে ১২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ইরিত্রিয়ায় ১১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও জিম্বাবুয়েতে ৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসব দেশে এয়ারলাইন্সগুলোর আয় করা অর্থ ৩৭ মাস থেকে ১১৬ পর্যন্ত আটকা পড়েছে। যা প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
যেসব দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোর সব থেকে বেশি অর্থ আটকে রয়েছে তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। এর মধ্যে শুধু পাকিস্তানেই আটকে আছে ৪১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর বাংলাদেশে সেই অর্থের পরিমাণ ৩২০ মিলিয়ন।
আগে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর রাজস্ব সবচেয়ে বেশি (৮৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আটকে ছিল নাইজেরিয়াতে। তারা গত এপ্রিলের মধ্যে এর ৯৮ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করেছে।
আইএটিএ এর মহাপরিচালক উইলি ওয়ালশ বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে অবশ্যই এসব অর্থ অবিলম্বে ছাড় করতে হবে, যাতে এসব দেশগুলোতে যেসব এয়ারলাইন্স যাত্রী পরিবহন করছে তারা যেন প্রয়োজনীয় আকাশ যোগাযোগ চলমান রাখতে পারে।
বাংলাদেশে সমস্যাটির সমাধান দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (বাংলাদেশ ব্যাংক) হাতে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে আইএটিএ। আইএটিএ বলছে, আন্তর্জাতিক চুক্তির বাধ্যবাধকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিদেশি মুদ্রায় আকাশপথে উড়োজাহাজ চলাচলের এক্সেসকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
পাকিস্তানের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, অডিট ও কর অব্যাহতি সনদের বিকল্প খুঁজে বের করতে হবে, কারণ এই বিষয়গুলো প্রক্রিয়াটিকে দীর্ঘায়িত করছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে বৃহৎ এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে রয়েছে; এমিরেটস, কাতার, এয়ার এরাবিয়া, সাউদিয়া, ফ্লাই দুবাই।
বিদেশি এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, অর্থছাড় পরিস্থিতির উন্নতি হলে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সেক্রেটারি জেনারেল আফসিয়া জান্নাত সালেহ এর আগে বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছিলেন, বিষয়টি সুরাহার জন্য আমরা বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কেও জানিয়েছি। সমস্যাটি যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা যেমন ঝুঁকির মুখে পড়বেন, তেমনি দেশও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে।