অনশনরত শ্রমিকদের পাশে তাদের সন্তানরা



মানজারুল ইসলাম,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,খুলনা
অনশনে থাকা শ্রমিকদের সন্তানরাও রাজপথে নামে/ ছবি: বার্তা২৪.কম

অনশনে থাকা শ্রমিকদের সন্তানরাও রাজপথে নামে/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

“পিতার চাকুরির নিশ্চয়তা চাই; পিতার মজুরি কমিশন চাই; বাঁচার মতো বাঁচতে চাই; আমি শ্রমিকের সন্তান এটাই কি আমার অপরাধ; পিতা কেন অনশনে, জবাব চাই” এসব কথা কাগজে লিখে রাজপথে নেমে স্লোগান দিয়েছে খুলনায় আমরণ অনশনে অংশ নেয়া পাটকল শ্রমিকের সন্তানেরা।

বুধবার (১ জানুয়ারি) বছরের প্রথম দিনেও শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছে। পাটকল শ্রমিকদের দ্বিতীয় দফার আমরণ অনশনের ৪র্থ দিনেও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে শ্রমিকরা ছিলেন সোচ্চার। তবে অনশনে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অসুস্থ শ্রমিকের সংখ্যা। একদিকে শীত আরেকদিকে অসুস্থতা নিয়েও অনশন ছাড়েননি শ্রমিকরা।

পাটকল শ্রমিকদের অনশন/ছবি: বার্তা২৪.কম

শ্রমিকদের আমরণ অনশনের কারণে খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে খালিশপুর, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, দৌলতপুর, আলিম ও ইস্টার্ন জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ আছে। এতে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দিনরাত এক করে প্রতিটি মিলের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চলেছেন শ্রমিকরা। বাবার অনশন দেখে সন্তানরাও রাজপথে নেমে আসে।

শ্রমিক নেতারা জানান, বছরের শুরুতে অর্ধলক্ষ শ্রমিকের জীবন এখন অনিশ্চিত। পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে আছে সবাই। প্রতিশ্রুতি অনেক হয়েছে, এবার আর কোনো প্রতিশ্রুতি শুনতে চাই না। এবার শ্রমিকরা মজুরি কমিশন না নিয়ে ঘরে ফিরবে না। জীবনের বিনিময়ে হলেও মজুরি কমিশন মেনে নিতে হবে। দাবি মেনে না নিলে অনশনের ৫ম দিন বৃহস্পতিবার থেকে পরিবার-পরিজন থেকে আন্দোলন শুরু করার কথাও বলেন শ্রমিক নেতারা।

অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা/ ছবি: বার্তা২৪

শ্রমিক নেতা খলিলুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে অসুস্থ শ্রমিকের সংখ্যা। বছরের প্রথম দিনেও দেশজুড়ে যখন আনন্দ উৎসব, তখন শ্রমিকরা একটু মজুরির আশায় আমরণ অনশন করছে। ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে অসংখ্য শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

বিজেএমসি সূত্র থেকে জানা যায়, খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে ৭টির উৎপাদন বন্ধ আছে। বন্ধ থাকা পাটকলগুলোতে প্রতিদিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। শুধুমাত্র যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলে উৎপাদন চালু আছে। মিল দুটিতে প্রতিদিন উৎপাদিত পাটপণ্যের পরিমাণ ৮৬ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন। বাজার হিসাব অনুযায়ী, পাটকলগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি টাকার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

অনশনে থাকা শ্রমিকদের সন্তানরাও রাজপথে নামে/ ছবি: বার্তা২৪.কম 

বিজেএমসির খুলনার আঞ্চলিক সমন্বয় কর্মকর্তা বনিজ উদ্দিন মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে মাত্র ২টি পাটকলে পাটপণ্য উৎপাদন হচ্ছে, যা স্বাভাবিক সময়ের চার ভাগের একভাগ। বন্ধ থাকা ৭টি পাটকলে প্রতিদিন ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন পাটপণ্য উৎপাদিত হতো। চারভাগের একভাগ পাটপণ্য উৎপাদিত হওয়ায় প্রতিদিন কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

   

নাটোরে আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নাটোরের লালপুরের গোপালপুর পৌরসভার আজিমনগর রেলস্টেশন সংলগ্ন রবিউল ইসলাম কনফেকশনারী দোকানের সামনে প্রকাশ্যে পৌর আলীগের সহ-সভাপতি মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু বাহাদিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের সন্তান।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপালপুর পৌরসভার আজিমনগর রেলস্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন রবিউল ইসলাম কনফেকশনারির সামনে বসেছিলেন মঞ্জু। এসময় দুই মোটরসাইকেলে চার-পাঁচজন এসে মঞ্জুর মাথায় এবং পেটে গুলি করে দ্রুত সটকে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মঞ্জু মারা যান।

উল্লেখ্য বিগত ২৮ নভেম্বর ২০১৮ সকালে নাটোরের নর্থবেঙ্গল সুগার মিলস গেটে লালপুর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিরুল ইসলাম হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিরা জানান। জাহিরুল মরার পরে দীর্ঘ ৪ বছর যাবত একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল।

এ ব্যাপারে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ জানান মরদেহ এখন পর্যন্ত তাদের পরিবারের কাছেই রয়েছে।ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কয়েকটি দল মাঠে কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মঞ্জুর প্রতিপক্ষরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

;

খাগড়াছড়িতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ল ২৪ দোকান



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খাগড়াছড়ি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

খাগড়াছড়ি শহরের শান্তিনগর এলাকায় ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে ২৪টি দোকান। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে শান্তিনগরের জাফর তালুকদার মার্কেটে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে পোড়া দোকান গুলোর মধ্যে ওয়ার্কশপ, মোটরপার্টস, ব্যাটারীর সার্ভিস ও কুলিংকর্ণার ছিল।

এ ছাড়া ওয়ার্কশপের সামনে থাকা দুইটি ট্রাক্টরও পুড়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে আগুনে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

মার্কেট মালিক জাফর তালুকদার বলেন, আগুনে ২৪টি প্লটের সব পুড়ে গেছে। আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেগ পেতে হয় বলে জানান তিনি।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আগুনে ২৪টি দোকান পুড়ে গেছে তবে কোন হতাহতের ঘটনা নেই।

;

পোশাক শ্রমিকের ১২ হাজারের জীবন, নিজেই চলতে পারিনা, বউরে খাওয়ামু কি!

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



গুলশান জাহান সারিকা, স্টাফ করেস্পন্ডেন্টম, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর পীরেরবাগের বাসিন্দা শানিনুর প্রতিদিন ৮টা-৫টা কাজ করে মাসে ১২ হাজার টাকা ঘরে আনেন। স্বামীও কাজ করেন। কিন্তু দুই জনের আয়েও চলেনা পাঁচজনের পরিবার। রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন শাহীনুর। বস্তির ছাপড়া ঘরের ভাড়া গোনা আর আনুসঙ্গিক বিল পরিশোধের পর, বাজারের দিকে পা বাড়ানোর আগেই দেখেন হাত খালি। তিন মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন এই মধ্যবয়ষ্ক নারী। কিন্তু এক মেয়েকে এরইমধ্যে স্কুল ছাড়াতে হয়েছে। এটাই পোশাক শ্রমিকের জীবন।

তৈরি পোশাক খাতের অর্থনীতির গতির সাথে সাথে এই খাতের শ্রমিকের জীবন-জীবিকা অতীতেও তেমন গতি পায়নি। এখনো পাচ্ছে না। গেল বছর পোশাক শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। যা আগে ছিল ৮ হাজার টাকা। এ বেতন বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা হলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সে স্বস্তির দেখা মেলেনি। শাহীনুর তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

জীবিকার তাগিদে জীবনে সফলতার স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর প্রায় ছয় লাখ মানুষ ঢাকা শহরে পাড়ি জমায় তাদের ভাগ্য বদলানোর আশায়। ঢাকায় আসা বিপুল সংখ্যক এ মানুষের মধ্যে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত বেশির ভাগেরই ঠাঁই হয় রাজধানীর বিভিন্ন পোশাক কারখানায়। গ্রাম থেকে উঠে আসা এসব মানুষ দৈন্যদশা থেকে মুক্তি পেতে অল্প আয়ে নিজের শ্রম বিলিয়ে দিচ্ছেন পোশাক কারখানায়। কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।

দৈনিক ৮-৯ ঘণ্টা কাজের বিনিময়ে ১২-১৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করেন অনেকে। তবে এ অল্প আয় দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন পোশাক শ্রমিকদের পরিবারগুলো।

বাসা ভাড়া, সংসার খরচ, দিয়ে কেমন কাটছে পোশাক শ্রমিকদের জীবন? এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বার্তা২৪.কমের এই প্রতিবেদক। বৃহস্পতিবার (২৫এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর এলাকার কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকের সাথে সরেজমিনে কথা বলে জানা গেছে তাদের অবস্থার কথা।

মিরপুর শেওড়াপাড়ান একটি কারখানার পোশাক শ্রমিক শাহিনুর বেগম থাকেন পীরেরবাগ এলাকায় । বার্তা ২৪ কে তিনি বলেন, "স্বামীর একার রোজগারে সংসার চলেনা। তাই নিজেও কাজে গেছি। কিন্তু তাতেও চলে না। সকাল ৮ টায় যাই আর বিকাল পাঁচটায় ফিরি। মাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা পাই। হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর যা পাই তা বাসা ভাড়া, কারেন্ট বিল, পানির বিল দিতেই শেষ হয়ে যায়।"

"আমার তিন মেয়ে। ছেলে নাই। তাদের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারি না। এক মেয়ের পড়া বন্ধ করে দিছি," বললেন শাহীনুর।

ভাগ্যের এই করুণদশার জন্য দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিকেই দায়ী করেন শাহীনুর। তিনি বলেন, একটু খেয়ে-পরে বাঁচার জন্য দুই জন কাজ করি। তাও তিনটা মেয়েকে নিয়ে এই শহরে চলতে পারি না। এইটাই দুর্ভাগ্য।"

আরেক পোশাক শ্রমিক আলাউদ্দিন বরিশালের পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানা থেকে জীবিকার সন্ধানে এসে যোগ দেন রাজধানীর একটি গার্মেন্ট কারখানায়। সেখানে আয়রন ম্যানের কাজ তার। মাসিক মজুরি ১২০০০ টাকা।

কাজের জায়গায় অনেক চাপ থাকে। ঘড়ির কাটার এদিক-ওদিক হওয়ার কোন সুযোগ নেই। সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট কাজ না করতে পারলে চাকরি চলে যাবে। বার্তা২৪ কে আলাউদ্দিন বলেন, "অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া বেশি দূর করতে পারিনি। গ্রামে যখন কিছু করতে পারলাম না ঢাকা শহর চলে আসলাম। গার্মেন্টসের আয়রন ম্যানের কাজ পাইলাম। এই গরমে খুব কষ্ট হয় সে কাজ করতে। কিচ্ছু করার নেই। শেওড়াপাড়ায় মেসে থাকি। খাওয়া-থাকা বাবদ নিজেরই মাসে ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বাকি টাকা বাড়িতে পাঠাই। তাতে মায়ের ওষুধ কিনতে হয়।

"মায় বলে সংসার শুরু করতে, বিয়া করতে। আমি বলি নিজেই চলতে পারিনা, বউরে খাওয়ামু কি!"

আরেক গার্মেন্টস কর্মী রোজিনা বলেন, "আগে আট হাজার টাকা ছিল এখন ১২ হাজার টাকা হইছে। কিন্তু এই যুগে আইসা এই টাকায় সংসার চলেনা। বাজারে মাছ-মাংসের আগুন ছোঁয়া দাম। ব্রয়লার মুরগিও প্রায় আড়াইশো টাকা কেজি। আমার স্বামীর নিত্য আয় নিত্যই ব্যয় হয়ে যায়। মাইয়া দুইটা বড় হইতাছে, বিয়া যে দিমু কিছুই সঞ্চয় নাই।"

তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান একটি খাত। অর্থনৈতিক চালিকা শক্তির এখাতে স্বল্পদরে শ্রম কিনে ভারী হয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আর মালিকপক্ষের বাড়ে শান-শওকত। কিন্তু দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেও শ্রমিকেরা দেখেননা সুখের মুখ। যতটুকু যাও বাড়ে আয়, সব শেষ হয়ে যায় বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ধাক্কায়। সুতরাং তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকের জীবনে নেই সামান্য পরিবর্তন।

;

রক্তদাতারা মানবিক গুণের অধিকারী: কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা



Sajid Sumon
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, 'রক্তদান মুমূর্ষুদের জীবন বাঁচাতে শ্রেষ্ঠ কাজ। একজন মানুষের মধ্যে মানবিক গুণ জাগ্রত হলেই রক্তদানের মতো এমন মহৎ কাজ করতে পারেন। আর রক্তদাতারা মানবিক গুণের অধিকারী।'

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্বেচ্ছা রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।

প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, রক্তের যেহেতু বিকল্প নেই। রক্তদাতারা সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই মহতী এ কাজটি করে যাচ্ছেন। রক্ত কাকে দিচ্ছেন সেটিও তাদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়। রক্তদানই আত্মত্যাগী- এটাই মানুষদের কাছে বড় কথা। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ভূপেন হাজারিকার গানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, মানুষ মানুষের জন্যে। সবাই একটু সহানুভূতি চায়।

তিনি বলেন, এরকম সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে রেখেছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জাতিকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাজগুলো স্বাধীনভাবে ভোগ ও পরিচালনা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ জাতিকে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট দেশ উপহার দিতে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, একজন মহৎ মানুষ, যার ভিতর গুণ আছে, মানবিক মূল্যবোধ আছে, প্রজ্ঞা আছে, যিনি অপরের জীবন বাঁচাতে স্বেচ্ছায় রক্ত দান করছেন, এর চেয়ে দুর্লভ দান আর কিছু হতে পারে না। আজ এ মহতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়াটাও আমার জন্য এক দুর্লভ মুহূর্ত। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, যারা স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন, যারা প্রজ্ঞাদ্যোতি জ্বালিয়ে অন্যের আলো জ্বালাচ্ছেন তাদের এই আলোকচ্ছটা অন্যের কল্যাণে আরও ছড়িয়ে পড়ুক। এটাই যেন হয় সকলের প্রেরণার উৎস। সবাই এগিয়ে আসুক। এ ধরনের মহৎ মানবিক কাজের সাথে সক্রিয় থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা জানান, দুই যুগে ১৬ লাখ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহ করে মুমূর্ষু মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছে দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী রক্তদানের সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। ২০০০ সালে ল্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ২৪ বছরে সংগঠনটি মোট সরবরাহ করেছে ১৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৩ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান। নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে কোয়ান্টামের স্বেচ্ছা রক্তদাতার সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি। দুই যুগে ১৬ লাখ ইউনিট রক্ত দিয়ে সেবা করতে পারার জন্যে কোয়ান্টাম ল্যাবের পক্ষ থেকে সকল স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তারা। একই সাথে কমপক্ষে ৩ বার রক্তদান করে লাইফ লং, ১০ বারের দানে সিলভার, ২৫ বারে গোল্ডেন এবং ৫০ বার রক্তদান করে প্লাটিনাম ক্লাবের সদস্য হয়েছেন- এমন তিন শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রধান অতিথি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এসময় তাদের হাতে সম্মাননা সনদ, ক্রেস্ট ও মেডেল তুলে দেন।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক নাহার আল বোখারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি দেশে রক্ত চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে তরুণ স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের মানবিক এ সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান আলোচকরা।

;