নারী সার্জেন্টের আত্মহত্যার চেষ্টা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনার রূপসা নদী থেকে আত্মহত্যার চেষ্টাকালে নারী পুলিশ সার্জেন্ট শিলাকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) গভীর রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সার্জেন্টকে রূপসা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। সে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে রূপসা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

কেএমপি সূত্রে জানা যায়, সার্জেন্ট শিলা আক্তার ৭ দিনের মেডিকেল ছুটিতে গিয়েছিলেন। গভীর রাতে সে রূপসা নদীতে ঝাঁপ দেয়। তাকে উদ্ধারের পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খুলনা মেডিকেলে কেএমপির ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে দেখতে যান। তবে কি কারণে সে এ কাজ করেছে, তা জানা যায়নি। বর্তমানে সার্জেন্ট শিলা আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, শিলা ২০১৭ সালে পুলিশ বাহিনীতে সার্জেন্ট পদে যোগদান করেন। বর্তমানে সে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) নারী সার্জেন্ট হিসেবে কর্মরত।

   

শ্রমিক বাঁচলে বাঁচবে দেশ

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শ্রমিক বাঁচলে বাঁচবে দেশ

শ্রমিক বাঁচলে বাঁচবে দেশ

  • Font increase
  • Font Decrease

বিখ্যাত হলিউড সিনেমা 'মডার্ন টাইমস' নির্মিত হয়েছিলো আধুনিক যান্ত্রিক শহরের সূচনালগ্নে মানুষদের অবর্ণনীয় এক যান্ত্রিক জীবনযাত্রার গল্প নিয়ে। সিনেমার শুরুতেই দেখা যায় একদল ভেড়া ছুটছে; কোনো একটা গন্তব্যে যাওয়ার জন্য যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে তারা। পরক্ষণেই দেখা মিলে কোনো কারখানায় ছুটে চলা একদল শ্রমিকের। ভেড়ার যাপিত জীবনের সাথে মানুষের জীবনের যোগসূত্র স্থাপন করে পরিচালক সে সময়কার কোনো উন্নত দেশের শ্রমিকদের পরিস্থিতিই যেন বোঝাতে চাইলেন। সেই বিংশ শতাব্দীর শ্রমিকদের যান্ত্রিক জীবনের তেমন কোনো বৈপ্লবিক পরিবর্তন একবিংশ শতাব্দীর এই অত্যাধুনিক জীবনে এসেও ঘটেনি। ঠিক এমনটাই ছিল শিল্পযুগের সূচনালগ্নেও। বর্তমানের এই  আধুনিক ও যান্ত্রিক বিশ্বে বিচ্ছিন্নতার বাড়বাড়ন্তে ক্রমেই প্রকট হচ্ছে মানবতা রক্ষার সংগ্রাম।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি দেশের মূল অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি হয় শিল্পখাতের উন্নয়নে। বাংলাদেশ শিল্পখাতে অনেকদূর এগিয়ে গেলেও শ্রমিকদের বেতন, ভাতা, নিরাপত্তা সেসব নিয়ে আসেনি আহামরি পরিবর্তন। চলতি বছরেও বেশ কয়েকবার শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি আদায়ে আন্দোলন করেছেন।

ধনীরা আরও ধনী হবে, আর গরিবরা আজীবন গরিবই থেকে যাবে এমন নীতিতেই চলছে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থা। শ্রমবিভাজন ও শ্রেণি বৈষম্য, ন্যায্য মজুরি পরিশোধ না করা, শ্রমিক আন্দোলন ও হতাহতের ঘটনা এবং নিরাপত্তার অনিশ্চয়তার চিত্র প্রতিদিনই প্রায় খবরের কাগজে ভেসে উঠে। বাজারব্যবস্থার মাধ্যমে টিকিয়ে রাখা এ বৈষম্য ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে বাংলাদেশেও।

চলতি এপ্রিল মাসের শুরুটাই হয়েছিলো গাজীপুরের মহানগরীর জরুন এলাকার কেয়া নিট কম্পোজিট পোশাক কারখানার  বকেয়া ও বোনাসের দাবিতে হওয়া শ্রমিক আন্দোলন দিয়ে। কাজ বন্ধ করে কারখানার ভিতরে অবস্থান করেন তারা; তুলে ধরেন নানারকম দাবি। তারা তখন বলেছিলেন, মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন করতে গিয়ে তাদের মোট চার জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের বদলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল প্রশাসন। নিহত পরিবারকে সামান্য কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টাও করা হচ্ছিল। দারিদ্রের কারণে নিহত শ্রমিকদের পরিবারের কেউ কেউ মামলা করার সুযোগ পাননি। মজুরি আন্দোলনে প্রাণ হারানো শ্রমিকের জন্য ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ, ন্যায্য মজুরি পরিশোধের দাবিতে তারা মাঠে নেমেছিলেন।

মাসের মাঝামাঝি সময়ে ২১ এপ্রিল বেতনের দাবিতে নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রফতানিমুখী অবন্তি কালার টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য রোজার মাসেই বিকোষাভ করেন তারা।

এভাবেই দেশের কোথাও না কোথাও, কোনো না কোনো পোশাক কারখানায় ক্রমেই বেড়ে চলেছে শ্রমিক বিক্ষোভ, আন্দোলন এবং অনিরাপত্তা। দেশের উদীয়মান অর্থনীতির সাথে তাল মিলিয়ে দ্রব্যমূল্য ও বিভিন্ন আসবাবপত্রের দাম চড়াও হলেও আশানুরূপ বাড়েনি বেতন, কমেনি বৈষম্য। প্রাপ্য মজুরি যথাসময়ে পরিশোধ না করার অভিযোগও অনেক।

গত বছরের নভেম্বরে শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়। চূড়ান্ত মজুরি প্রস্তাব অনুযায়ী, মোট মজুরির মধ্যে মূল বেতন হবে ৫৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। অর্থাৎ ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরির মধ্যে মূল বেতন হবে ৬ হাজার ৭০০ টাকা। আর মূল বেতনের অর্ধেক হচ্ছে বাড়িভাড়া। এ ছাড়া খাদ্যভাতা ১ হাজার ২৫০ টাকা, চিকিৎসাভাতা ৭৫০ টাকা ও যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা। প্রতিবছর মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে মজুরি বাড়বে। নতুন মজুরিকাঠামোতে সাতটি গ্রেডের বদলে পাঁচটি গ্রেড থাকবে। কিন্তু শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণের এই সরকারি ঘোষণা তখনই প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সাথে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় নারী শ্রমিক আঞ্জুয়ারা খাতুনের।

গত ডিসেম্বর থেকে সরকার নির্ধারিত নতুন মজুরি কার্যকর হওয়ার পর জানুয়ারি মাসে নতুন কাঠামো অনুযায়ী মজুরি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনেরি এই  শ্রমিক সমস্যার তেমন কোনো সমাধান নজরে আসেনি। বরং বিক্ষোভ, আন্দোলন, হতাহতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেই নিম্নআয়ের মানুষদের জীবন।

গত ৬-৭ মাসের দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত দাম বাড়ার সাথে সাথে ক্রমেই নাজেহাল হচ্ছিল   এসব শ্রমিকদের জীবন। মৌলিক চাহিদা পূরণ করতেই তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে যেখানে তাদের শ্রমেই বাড়ছে দেশের জিডিপি। তাই ধনীদের আরও ধনী হওয়ার গল্পে পিষে যাচ্ছে আমাদের এই বিশাল শ্রমিক সমাজ।

আজ মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওই দিন তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনটিকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে 'মে দিবস' হিসেবে পালন করা হচ্ছে। জাতির বিচ্ছিন্নতা ঠেকাতে শ্রমবিভাজনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি। সেজন্য প্রতিটি খাতেই সঠিক মজুরি, কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

;

রিকশার প্যাডেলে জীবনযুদ্ধ বৃদ্ধ ইব্রাহিমের

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
সত্তরোর্ধ্ব ইব্রাহিম ফকির

সত্তরোর্ধ্ব ইব্রাহিম ফকির

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া সত্তরোর্ধ্ব ইব্রাহিম ফকির।যে বয়সে অবসর সময় কাটানোর কথা, সেখানে রিকশার প্যাডেল চালিয়ে অবিরাম ছুটে চলছেন রাস্তা-ঘাটে। ব্যাটারিবিহীন এ রিকশায় যাত্রী নিয়ে চলতে কষ্ট হলেও পেটের তাগিদে ছুটছেন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তরে।

বুধবার (০১ মে) ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পশ্চিম গোবরাকুড়া গ্রামের সড়কে যাত্রী নিয়ে রিকশা চালাতে দেখা যায় বৃদ্ধ ইব্রাহিম ফকিরকে।

জানা যায়, ২০ বছর বয়সে ১৯৭২ সালে দেড়হাজার টাকা দিয়ে একটি প্যাডেলচালিত রিকশা কিনে চালাতে শুরু করেন তিনি। সেই রিকশা এখনও চালিয়ে সংসারের হাল সামলাচ্ছেন তিনি।

ইব্রাহিম ফকিরের কোন ছেলে সন্তান নেই। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। এখন স্বামী-স্ত্রী দুজনের সংসার তার। সারাদিন রিকশা চালিয়ে যা আয় করেন তা দিয়েই কোনমতে সংসার চালে বলে জানান তিনি।

ইব্রাহিম ফকির জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে এখন আর কেউ প্যাডেলচালিত রিকশায় উঠতে চায় না। যার কারণে সারাদিন রিকশা চালিয়েও ১০০ টাকা আয় হয় না। এখন প্রায় সব জিনিসের দাম বেশি, এতো অল্প আয়ে সংসার চালানো কষ্ট হয় বলে জানান তিনি।

প্যাডেলচালিত রিকশা চালানোয় তিনি এই বয়সেও অন্যদের থেকে সুস্থ এবং কর্মক্ষম আছেন বলে দাবি তার।

ইব্রাহিম ফকির জীবনের প্রায় শেষপ্রান্তে এসেও এই কাজে বেশ সন্তুষ্ট। পুরাতন রিকশা ছেড়ে একটি নতুন রিকশার মুখ দেখার স্বপ্ন দেখলেও টাকা জমিয়ে কেনার সামর্থ্য তার নেই।

;

ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ

ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ

  • Font increase
  • Font Decrease

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার রাজধানী বানজুলে শুরু হয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি) -এর ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন। দুই দিনব্যাপী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বৈঠকে যোগ দিয়েছে বাংলা‌দেশ। সম্মেলনটির এবারের প্রতিপাদ্যে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য সংলাপের মাধ্যমে ঐক্য ও সংহতি বৃদ্ধি’।

বুধবার (১ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, দুই দিনব্যাপী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। বৈঠকে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. জাবেদ পাটোয়ারী, নাইজেরিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও গাম্বিয়ায় বাংলাদেশের অনাবাসিক হাইকমিশনার মাসুদুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আন্তর্জাতিক সংস্থা) ওয়াহিদা আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বল‌ছে, বৈঠকটি ফিলিস্তিন এবং আল-কুদস আশ-শরিফ ইস্যুতে খসড়া রেজ্যুলেশন, খসড়া চূড়ান্ত ঘোষণা এবং বানজুল খসড়া ঘোষণা চূড়ান্ত করছে, যা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে গৃহীত হবে। গাজায় সাম্প্রতিক নৃশংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিন সম্পর্কিত ইস্যুতে আলোচনা প্রাধান্য পাবে।

বৈঠকে অর্থনৈতিক, মানবিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মুসলিম উম্মাহর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন নারী ও যুবকদের বিষয়ে আলোচনা হবে।

;

তাদের শ্রমে পরিচ্ছন্ন থাকে সড়ক

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



আশিকুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দাঁ হাতে সকাল শুরু হয় রোজিনা, আলেয়াসহ কয়েকজন নারী শ্রমিকের। কখনো ধারালো দাঁ দিয়ে সড়কের পাশের ঝোপঝাড়, আগাছা পরিষ্কার করেন। আবার কখনো কোদাল হাতে ভরাট করেন ছোট বড় গর্ত। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের এই কঠোর শ্রমে সড়ক পরিচ্ছন্নের কাজ করেন তারা। মাসে ৯ হাজার টাকা বেতনের এই শ্রমিকদেরও রয়েছে রঙিন স্বপ্ন। অল্প টাকা বেতনে চলে সংসার ও ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা। মায়েদের ঝড়ানো ঘাম আর কঠোর শ্রমে সুশিক্ষায় বেড়ে উঠবে সন্তান এমনটাই স্বপ্ন তাদের। 

গাজীপুরের সফিপুরে স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) এর তত্ত্বাবধানে একটি আঞ্চলিক সড়ক পরিচ্ছন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ১০ জন নারী শ্রমিক। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মোট ৮ ঘণ্টা কাজ করেন তারা। বিনিময়ে মাথা পিছু বেতন পান ৯ হাজার টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দাঁ হাতে নিয়ে সড়কের দুই পাশের আগাছা, ঝোপঝাড় পরিষ্কার করেন তারা। তীব্র তাপদাহে চারপাশ যখন হাসফাস করছে তখনো তাদের এই কর্মযজ্ঞ চলে। ঘাম ঝড়া ক্লান্ত শরীর নিয়ে কোন গাছের নিচে বিশ্রাম আর দুপুরের খাবার খেতে দেখা যায় তাদের।


তাদের একজন রোজিনা বেগম বার্তা২৪ কে বলেন, 'স্বামী অটোরিকশা চালায়। সংসারে দুই মেয়ে এক ছেলে। স্বামীর রোজগারে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যায়। তাই আমি এই কাজ নিছি। রোদে গরমে সড়কে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। তারপরেও কষ্ট গায়ে মাখি না। এই টাকায় বাচ্চাদের পড়ালেখা করাই। একটু ভাল জামাকাপড় কিনে দেই। সন্তানরা একদিন বড় হলে আমাদের এই কষ্ট দূর হবে।'

তাদের একজন আলেয়া খাতুন বার্তা২৪ কে বলেন, 'আমাগো কাছে মাসে ৯ হাজার টেকা অনেক মনে হয়। এই টেকা থাইকা পোলাপাইন লইয়া মাসে একদিন গরুর মাংস খাই। পোলা মাইয়া রে স্কুলে পড়াই। আমাগো মতো গরিব মানুষের তো এত বড় স্বপ্ন নাই। যা আছে তা কোন মতে চইলা যায়।'

শ্রমিক দিবসে তাদের কি দাবি জানতে চাইলে, আলেয়া খাতুন বার্তা২৪ কে বলেন, 'আমরা কোন দিবস বুঝি না। পেটের দায়ে ঘাম ঝড়াই। কাম করি টেকা পাই। যে দিন বন্ধ পাই ওই দিনটা ঈদের মতো লাগে। তয় আমাগো একটাই চাওয়া সরকার আমাগো মতো অল্প বেতনের শ্রমিকদের দিকে একটু দয়া করুক।'

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা কালিয়াকৈর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন হান্নান বলেন, 'আমাদের দেশে অনেক নারী শ্রমিক আছেন যারা পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করেন। তবে বেতনের ক্ষেত্রে কিছুটা বৈষম্য রয়েছে। শ্রমিক দিবসে আমাদের মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষ থেকে নারীদের বেতন বৈষম্য সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।'

;