বরিশালের কাশিপুর মৎস্য বাজারে অভিযান চালিয়ে ২৫ মণ জাটকা জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নৌপুলিশ ও জেলা মৎস্য অধিদপ্তর যৌথভাবে এ অভিযান চালায়।
জাটকা জব্দের বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করে বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সাঈদ জানান, সকালে বিভিন্ন জায়গায় থেকে কাশিপুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রির জন্য জাটকা আনা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে কাশিপুর মৎস্য বাজারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই বাজার থেকে ১০টি ব্যারেল ভর্তি ২৫ মণ জাটকা জব্দ করা হয়। তবে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে জাটকা বিক্রির সাথে জড়িতরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
পড়ে জব্দ করা জাটকাগুলো (ছোট ইলিশ) স্থানীয় বিভিন্ন এতিমখানা ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
একদিকে তাপপ্রবাহ অন্য দিকে পানির সংকট। চরম বিপাকে পড়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কৃষকরা। তাপপ্রবাহে পুড়ে যাচ্ছে মাঠের ফসল। পানির অভাবে অনাবাদি পড়ে আছে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
গত একমাসে তীব্র ছিল সারাদেশের তাপমাত্রা। বিশেষ করে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের দাবদাহ ছিল বেশ প্রখর। কুষ্টিয়াও এর ব্যতিক্রম ছিল না। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ ধানখেত শুকিয়ে যাচ্ছে। কিছু ধান গাছে শীষ বের হলেও চিটা হয়ে যাচ্ছে। ভুট্টাখেত শুকিয়ে গেছে। পানির অভাবে শতাধিক বিঘা জমিতে শাকসবজিসহ সব অন্যান্য ফসল নেতিয়ে পড়েছে। এসব ফসলে পানি দিতে না পেরে কৃষকদের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে। টাকা দিয়েও পানি মিলছে না বলে জানালেন কৃষকরা। টাকা খরচ করে ফসল ফলিয়ে তা ঘরে তুলতে পারছেন না। এমন সংকটের আগে কখনো পড়েননি বলেও জানান তাঁরা।
মিরপুর উপজেলার মশান এলাকার কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ধান আবাদ করেছি। আমাদের মাঠের পাশ দিয়ে গঙ্গা কপোতাক্ষ (জিকে) ক্যানেল থাকলেও সেখানে কোনো পানি নেই। জমি থেকে একটু দুরত্বে ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিন ছিল। সেখান থেকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে পানি নিতাম। কিন্ত কিছুদিন হলো স্তর নেমে যাওয়ায় সেখান থেকেও পানি উঠছে না। পানির অভাবে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর কয়েক দিন গেলে সব শুকিয়ে যাবে।’
একই এলাকার কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছিলাম। জমি চাষাবাদ ও সেচে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে। শেষের দিকে এসে তাপপ্রবাহে ভুট্টার গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছিলো তাই ওভাবেই ভুট্টা ক্ষেত থেকে তুলে এনেছি।’
মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের বাসিন্দা আবদুস সামাদ বলেন, ‘আগে মানুষ খাওয়ার চিন্তা করত। এখন এলাকার মানুষের বড় চিন্তা হয়ে উঠেছে খাওয়ার পানি। পানির অভাবে এলাকাবাসী গরু-ছাগল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।’
এদিকে পদ্মার শাখা নদীয় কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের কোনো নলকূপে পানি উঠছে না বলে জানান মিরপুর উপজেলার তালবাড়ীয়া গ্রামের শান্ত বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘বাড়ির টিউবওয়েলে ১৭০ ফুট পাইপ বসিয়েছি। এরপরও পানি উঠছে না। বিদ্যুৎচালিত মোটর বসানো আছে, সেখানেও পানি উঠছে না। সংকট ভয়াবহ। তীব্র খরায় বোরো খেতে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।’
কুষ্টিয়া জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী ইব্রাহীম মো. তৈমুর বলেন, ‘জিকে সেচ প্রকল্পে বন্ধ এবং আবহাওয়া এখন চরম উত্তপ্ত। কয়েক সপ্তাহ ধরে খরা চলছে। শুধু পৌর এলাকায় নয়, গ্রামাঞ্চলেও পানির সংকট চলছে। প্রতি বছরই এ সময় পানির স্তর নিচে নেমে যায়। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে। তবে প্রতি বছর দু-এক সপ্তারের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গেলেও এবার সময়টা বেশি লাগছে।’
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্পের পাম্প ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে তিনটি পাম্পটি বন্ধ রয়েছে। পাম্পগুলো সচল করার চেষ্টা চলছে। কবে নাগাদ সেচ কার্যক্রম চালু করা যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পানি সংকটের কারণে বোরো আবাদ ব্যাহত হয়েছে। সমস্যার দ্রুত সমাধান করা না গেলে আউশ উৎপাদনেও প্রভাব পড়বে। তবে ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলও পানির অভাবে ভালো ফলন হয়নি ‘
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ‘তীব্র তাপপ্রবাহ এবং পানি সংকটের কারণে উৎপাদনে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তবে এ সমস্যা থাকবে না। দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হলেই সংকট কেটে যাবে। জিকে সেচ প্রকল্প চালু করতেও কাজ চলছে।’
মোমবাতি হাতে শপথ নিলেন নার্সিং কলেজের নবীন শিক্ষার্থীরা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
জাতীয়
মানবসেবায় নিজেদের নিয়োজিত করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে মোমবাতি হাতে শপথ নিয়েছেন সাভারের সিআরপি নার্সিং কলেজের নবীন শিক্ষার্থীরা। আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন করতে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করে সিআরপি নার্সিং কলেজ।
রোববার (১২ মে) দুপুর ১ টার দিকে সাভারের চাপাইন এলাকায় সিআরপির প্রধান কার্যালয়ের রেডওয়ে হলে এ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, মানবসেবার উপরে কোনো ধর্ম নেই। আমি মনে করি নার্সরা ডাক্তারদের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যারা মানবসেবা করতে ভালোবাসেন তারাই এ পেশায় আসে। সারাবিশ্বে এখন এই পেশার ব্যাপক চাহিদা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিআরপি নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ রুনু চৌধুরী। আরও বক্তব্য রাখেন, সিআরপির হেড অফ মেডিক্যাল ডা. সাঈদউদ্দীন হেলাল, সিআরপির হেড অফ এডুকেশন অধ্যাপক ডা. ওমর আলী সরকার।
আলোচনা শেষে সিআরপি নার্সিং কলেজের নবীন শিক্ষার্থীদের ক্যাপ পরিয়ে দেন (শিরাবরণ) ঢাকা- ১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এরপর শপথ গ্রহণের মাধ্যমে মানুষের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করার অঙ্গীকার করেন সিআরপি নার্সিং কলেজের নবীন শিক্ষার্থীরা। তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান সিআরপি নার্সিং কলেজের সহকারী অধ্যাপক লীলা বিশ্বাস। পরে কেক কাটা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে এই আয়োজন শেষ হয়।
এ আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন সিআরপির নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন। তিনি বলেন, সিআরপি নার্সিং কলেজ থেকে পাশ করে দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এমনকি দেশের বাইরেও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা। সিআরপির চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবা দেশের সব জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের পাশাপাশি নার্সদের ভূমিকা অপরিসীম বলেও উল্লেখ করে তিনি।
আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে এমপিরা জটিল দায়িত্ব পালন করছে: স্পিকার
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
জাতীয়
বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সংসদ সদস্যরা জটিল থেকে জটিলতর দায়িত্ব পালন করছে বলে মন্তব্য করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
রোববার (১২ মে) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজার কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ পার্লামেন্টারি স্ট্যাডিজের পরিচালনা বোর্ডের সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, বর্তমান পরিবর্তনশীল বিশ্বে সংসদ সদস্যদের আপডেটেড তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ পার্লামেন্টারি স্ট্যাডিজ (বিআইপিএস) সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। অতীতের মত আগামীতে সংসদীয় গণতন্ত্রকে সমৃদ্ধ ও গতিশীল করতে বিআইপিএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ইনস্টিটিউট অফ পার্লামেন্টারি স্ট্যাডিজ আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত। শুরুর দিকে এই ইন্সটিটিউটের কাজের সঙ্গে বিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ানরা জড়িত ছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্সটিটিউটের কার্যক্রমকে চলমান রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
স্পিকার আরও বলেন, সংসদীয় কার্য সম্পর্কিত বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করা এবং সংসদীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করতে সংসদ সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির করার জন্য এ ধরনের ইন্সটিটিউটের প্রয়োজন রয়েছে। সেই সাথে এই ইন্সটিটিউটের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টারিয়ানদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ রয়েছে বলে জানান স্পিকার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এমপি, বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি, হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে. এম. আব্দুস সালাম, বিপিএটিসি'র রেক্টর মো: আশরাফ উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নুরুল হক।
দুই ভাই বোন, বাবা মা ও দাদুকে নিয়ে সুখী পরিবারের সদস্য ছিলেন মিফতাহুল জান্নাত নূর অহনা। চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে যতটা খুশি হয়েছে অহনা তার চাইতে বেশি খারাপ লাগছে তার দাদুর জন্যে। দাদুর স্বপ্ন ছিলো নাতনীর সাফল্যের এই দিনটিকে খুব উৎসব মুখর ভাবে পালন করবে। কিন্তু নিয়তি তার সেই ইচ্ছে পূরণ করার আগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ২০২১ সালে পারি জমান না ফেরার দেশে।
পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের পেছনের কারণ জানতে চাইলে অহনা জানায়, মায়ের যত্ন আর বাবার পরিশ্রম সেই সাথে দাদুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে মন দিয়ে পড়াশোনা করেছে অহনা।
এছাড়া শিক্ষকদের দিকনির্দেশনাও ভালো ফলাফলের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবে তার আক্ষেপ তার সবচেয়ে প্রিয় যে মানুষটি দাদু তার কাছে নেই।
কান্নাভেজা চোখে অহনা বললেন, দাদু থাকলে অনেক খুশি হতো।
ভবিষ্যতে পড়াশোনা শেষ করে একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট হবার স্বপ্ন তার মনে।
এবছর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে সর্বমোট ২১৯৫ জন পরিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে পাশ করেছে ২১৬১ জন আর ফেল করেছে মাত্র ৩৪ জন শিক্ষার্থী। সে হিসেবে পাশের হার ছিলো ৯৮.৪৫ ভাগ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৫২৮ জন শিক্ষার্থী।