বরগুনা সাহিত্য মেলার অব্যবস্থাপনা নিয়ে কবি মর্তুজা হাসান সৈকতের স্ট্যাটাস ভাইরাল

, শিল্প-সাহিত্য

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 15:00:54

বরগুনা জেলার সাহিত্যিকদের ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত অংশটির অংশগ্রহণ ছাড়াই বরগুনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলার লেখক ও পাঠকদের নিয়ে জেলা সাহিত্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকাল ৯ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে সাহিত্য মেলা শুরু হয়। এ মেলা নিয়ে বিশিষ্ট কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মর্তুজা হাসান সৈকত এর একটি স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়েছে। সেটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলোঃ

বরগুনা জেলার কবি সাহিত্যকদের ছাড়াই জেলা সাহিত্য মেলার নামে একটি হাস্যকর আয়োজন করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। মেলায় অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতির তালিকাটা আমার হাতে এসেছে- যেখানে দেখা যাচ্ছে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৫০ জনের ভেতরে সর্বোচ্চ হয়তো ৭-৮ জন সাহিত্যের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। যে ৭-৮ জন আছেন তারাও সাহিত্যটা বলার মতো করে করেন নি কখনও।

যারা জীবনে একটা ছড়া, কবিতা, গল্প কিংবা প্রবন্ধও লিখেন নি মূলত তাদেরকে নিয়েই সাহিত্য মেলার নামে একটা তামাশা পাতানো হয়েছে এখানে। কিন্তু কথা হলো যে জেলার সাহিত্য ভাণ্ডার এতোটা সমৃদ্ধ সেখানে সাহিত্য মেলার নামে এরকম হাস্যকর আয়োজন কেনো হবে?

এ জেলা থেকেই উঠে এসেছেন দেশবরেণ্য প্রখ্যাত কবি ও প্রাবন্ধিক মতিন বৈরাগী, ঢাকা ভার্সিটির উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, বহুমাত্রিক শব্দসৈনিক কবি মোশতাক আল মেহেদী, কবি ও কথাসাহিত্যিক জহিরুল হক, কবিতা লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করা কবি ও প্রাবন্ধিক আখতারুজ্জামান আজাদ, কবি প্রান্তিক জসীম, ‘পরমাণুকাব্য’ নামে কবিতার নতুন একটি ফর্মেট সামনে নিয়ে আসা কবি সুশান্ত পোদ্দার, কবি ও কথাসাহিত্যিক মাসুদ আলম, কবি তুহিন ওসমান, কবি ফরহাদ নাইয়া, প্রাবন্ধিক আবদুর রহমান সালেহ, কবি শাওন মুতাইত, কবি সুলতান মাহমুদ, কবি মিজান হাওলাদার, কবি শুক্লা দেবনাথ, কবি জাকিয়া সুলতানা শিরিন, কবি ও গল্পকার আরেফিন সায়ন্তী, কবি বিপ্লব কুমার শীল, কবি জাফর ইদ্রিস, কবি ও প্রচ্ছদ শিল্পী আল নোমান, কবি বেলীন্দা তুরকান শাহ, কবি নুরুল ইসলাম মনির মতো সাহিত্যিকরা। (এর বাইরেও আরও অনেক উল্লেখযোগ্য নাম আছে, যা এখন আমার মনে আসছে না।) এদের অনেকেই বরগুনায় অবস্থান করেই সাহিত্যচর্চা করে যাচ্ছেন অথচ এদের কাউকেই কিছু জানানো হয় নি। আমার কথা হচ্ছে, বরগুনা জেলার সাহিত্য ভাণ্ডারে এত রিসোর্স থাকার পরও এরকম ‘কাঙাল’ টাইপের সাহিত্য মেলার আয়োজন করে রাষ্ট্রের এতগুলি টাকার অপচয় করা হলো কেনো? এর কি উত্তর জেলা প্রশাসন দিবে?

মেলা বাস্তবায়ন কমিটির ব্যবস্থাপনা এতই খারাপ ছিল যে, তারা জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে প্রবন্ধ লেখার জন্য যে দুইজন ব্যক্তিকে নির্বাচন করেছিল তাদের ভেতরে একজনের প্রবন্ধের মান এতটাই খারাপ ছিল যে, বাংলা একাডেমীর দায়িত্বরত কর্মকর্তা সেটিকে বাতিল করতে বাধ্য হন।

আমি যতটুকু খবর পেয়েছি, সাহিত্য মেলা বাস্তবায়ন কমিটি সর্বোচ্চ গোপনীয়তা বজায় রেখেছিলো মেলা নিয়ে। ফলে জেলার সাহিত্যকরা জানতেই পারেন নি যে এরকম একটা আয়োজন হতে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি, মেলা বাস্তবায়ন কমিটি তাদের পছন্দের কিছু লোককে দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে। মূলত এই অংশটাই আজকের মেলায় অংশ নিচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর