একপাল সম্রাট

, শিল্প-সাহিত্য

এনামুল রেজা | 2023-08-31 21:29:24

Love casinos, Indian reservation/ But baby if yo love me take me to the gas station.. গানটার এ দু’লাইন খুব পছন্দ তার। মাঝরাতে, যখন আর সবাই স্মার্টফোনের পর্দায় কিছু না কিছু ছুঁয়ে যাচ্ছে, সে এই গানটা, কী নাম গায়িকার? লিজি? লানার আর কোনো গান সে শোনে না। শুধু কুইন অব দা গ্যাস স্টেশন তার পছন্দের। এই পশ্চিমের গায়িকা বিষণ্ণ কণ্ঠ আর লিরিকে তার মগজ, স্পাইনাল কর্ড, হৃদয়, যৌনাঙ্গ সবকিছুকে অবসন্ন করে দিয়ে যায়। কুইন অব দা গ্যাস স্টেশন, কুইন অব দা গ্যাস স্টেশন.. গানের কোথাও বাক্যটা নেই, নভেম্বরের সদ্য জন্ম নেওয়া শীতের রাত তিনটায় সে তবু বিড়বিড় করে, ‘হ্যাঁ, ওর নাম কী? সেই যে মেয়েটা?’

বিছানা ছেড়ে উঠে যাওয়ার সময় অন্ধকারে শুয়ে থাকা একজনকে মাড়িয়ে সে চলে যায়, বিশ্রিমতো কেমন একটা শব্দ হয় শুধু। শুয়ে থাকা জনাকে ঘুম কাতুরে কণ্ঠে সে বলে, হাইড্রোলিক মারলি নাকি?
তোর মতো ঢিলা আমি? হাউয়া।
জবাবটা আসে গালি হয়ে। তবু সে দরোজার দিকে না গিয়ে কথা চালাবার চেষ্টা করে।
কেন তুই হাইড্রোলিক মারিস না?
জবাব আসে, ধুরো কাওরা। যা না যেই কাজে যাবি।
দরোজা খুলতে খুলতে সে স্মরণ করতে চেষ্টা নেয়, এই যে কথায় কথায় গালি পাড়ছে ঐ লোকটা, ওর নাম খুব বিচিত্র। মুখ বড় আলগা লোকটার, কতদিন ধরে তাদের সঙ্গে আছে? দু’বছর, চার বছর? একসঙ্গে দলবেঁধে তারা থেকেই যাচ্ছে, পৃথিবী তবু বদলাচ্ছে না, কোনো কিছুই কি বদলায় না? সে নামটা মনে করবার চেষ্টা করে আর ব্যর্থ হয়, তাই জিজ্ঞাসাই ভরসা ভেবে প্রশ্ন করে।
এই তোর নাম কী যেন?
জবাব দেয় না কেউ।
তোর নাম কী? ভুলে গেছি। বল্ না।
জবাব আসে না।
কী রে কথা বলিস না কেন?
চারকোণা ঘরটার আরেক মাথায় একটা তোশকে পাশাপাশি আরো দুজন ঘুমায়। তাদের কথাবার্তায় সেদিক থেকে কেউ বিরক্ত কণ্ঠে খেঁকিয়ে ওঠে, ‘কাওরার দল, ঘুমাতে দিবি না নাকি?’ এরপর আবার সে আধো-আঁধারে দেখে, নতুন গালিদাতা তার স্মার্টফোনের পর্দাতে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলছে। দুই বছর কি চার বছর আগে সে তো এই খেলা খেলত না, মোবাইল ফোনটা কানে লাগিয়ে রাতভর গুটুর গুটুর করে কথা বলত কারো সঙ্গে।

Give me coffee king size cup, come on kitty cat fil her up/ Fill her up/ Up her fill/ Fill her.. পেশাব করতে করতে গানের এই অংশটা তাকে ভাবিয়ে তোলে। একটা কফি কাপ তাহলে এক যুবতী নারী? কফি ঢেলে ঢেলে ভরে দিতে হবে, এরপর কফি কাপটা ভরাট হয়ে একে তাকে ‘এসো কেউ খালি করো, এসো খালি করো’ ডাকতে থাকবে? হলুদ বর্ণের কেন হলো এই মাঝরাতের পেশাব, কফিমগ থেকে তার ভাবনার দখল নেয় কৌতূহলটা। রাতে কী খেয়েছিল? শরীর কড়া হবার কথা? খিচুড়ি খেয়েছে মনে পড়তে বেশ আনন্দ লাগে, কিন্তু সেও তো দুপুরে। কারো বউ মনে হয় রেঁধে পাঠিয়েছিল, ঢাকা থেকে যার গ্রামের দূরত্ব ঘণ্টা তিনেকের, জ্যাম আর ঝক্কি মিশিয়ে সাকুল্যে পাঁচ। বিয়ে করে এই যে দিনের পর দিন ঐ লোকটা শহরে থাকছে, ও থাকে কিভাবে? রাতে ঘুমায় কিভাবে? আর কাজেই বা মন কিভাবে বসে? প্রশ্নগুলোর জবাব কেউ দেয় না। তবে গ্রাম থেকে ওর বউয়ের রান্না বকের মাংস, রসে ডোবা পিঠা এইসব প্রশ্নের উত্তর না জেনেও সবাই খায় নির্মল আনন্দে, যেমন পাঁচঘণ্টার পথ ভ্রমণ করা খিচুড়িও সবাই পেটে পুরেছিল ইচ্ছেমতো। ফ্লাটে চারজন তো মোটে থাকে তারা। খিচুড়ির সঙ্গে মাংস ভুনা। আচ্ছা, পেট খারাপ না কি এক সমস্যা এজন্য একজন খেলো না। যার বউ ব্রাউন পেপারে মুখ বাঁধা হাঁড়িভর্তি এই সুখাদ্য পাঠিয়েছিল, সে দুপুরে আর ঘরেই ফিরল না। জিনিসটা বয়ে এনেছিল তার শালা। শালা চলে গেলে সে আর আরেকজন, কদিন বাদে যার বিয়ে হবে হবে এরকম শুনছে, খানিক আগে যার পেটে পাড়া দিয়ে গাল খেলো, এই দুজনে মিলে করেছিল হাঁড়ি সাবাড়। এত মজা লেগেছিল, কী আর করবে? যার পেট খারাপ, সে কিছু বলল না, যার বউ পাঠাল এই খিচুড়ি, সে তো রাতেও আর ফিরল না ফ্ল্যাটে।

রাত জাগতে জাগতে বেঁচে থাকা বিষয়ক ভাবনাটা কমে যাচ্ছে, তাই না? লিজি না লানা দেল রের গান শুনে বিষণ্ণ হতে হতে একরকম পার হয়ে যাচ্ছে রাতগুলো। শীত নামবার পর থেকে অবশ্য অফিসে যেতে আর ভালো লাগছে না তার। কে যেন ওদিন ফোন করে জানতে চাইল, কিসের চাকরি করে সে, বেতন-টেতন কেমন। সে জানিয়েছিল, ‘বেতন বেশ। কড়া কিয়া গণ্ডা কিয়া মাইনে।’ ফোনের ওপাশ থেকে সিরিয়াস কণ্ঠটি অবাক হয়ে তখন বলেছিল, ‘আমি তোমার প্রাইমারি স্কুলের টিচার, আমার সঙ্গে মজা করতে পারলে বাবা?’ নিজে কী উত্তর করছিল আর মনে পড়ে না। চাকুরিটাও আর তার ভালো লাগে না। এরচেয়ে ঐ যার পেট খারাপ, খিচুড়ি খেতে পারল না আজ, ও তো ভালো কাশতে পারে। সমাজে ওর কাশির একটা ভালো কদর আছে। সপ্তায় টানা তিনদিন কোথায় যেন কাশতে যায়, বেশ ভালো ক্যারিয়ার। বাকি তিনদিন ঘুমায় পাছা উল্টে, স্মার্টফোনে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলে। সেদিন বেঁটেমতো আর আধহাত হিল পায়ের এক মেয়েকেও নিয়ে এলো, চড়া মেকাপ কি পার্ফিউমের ঘ্রাণে ম-ম করছিল ফ্ল্যাট।

কমোডের ফ্ল্যাশ টেনে বেরিয়ে আসবার সময় মনে পড়ল, মেয়েটার চোখদুটো সুন্দর ছিল। না, একটা চোখ, বাঁ চোখটায় কেমন একটা কোমলতা, ডানচোখ সেজন্য আর খেয়াল করা হলো না। সে ছাড়া ঐ বিকেলটায় আর কেউ ছিল না ফ্ল্যাটে। কাশির সে কী রাগ তাকে দেখে।
তুই অফিসে যাসনি আজ?
সে বলেছিল, না।
কেন?
ইচ্ছে করছিল না।
এভাবে অফিস কামাই দিলে হবে? চাকরিটা খোয়াবি নাকি?
খোয়ালে খোয়াই, তোর বাপের কী?
শেষের প্রশ্নটায় কাশি কেমন একটু বিব্রত হলে, উদোম গায়ের নিচে পরা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টটা টেনে নাভি ঢেকে সে বলেছিল, ‘কে এইটা? ভাবি নাকি?’
মেয়েটা, বা কাশি, কেউ আর কথা বাড়াল না। ভিতরে ঢুকে দরোজা দিয়ে দিলো। একবার তার ইচ্ছে গেল কান পাতে। নয়তো দরোজার ওপরের ভেন্টিলেটর বরাবর স্মার্টফোনটা রেখে ভিডিও রেকর্ড করে। যদিও পরে আর কিছুই করা হয় না সেদিন। ডাইনিং রুমের সিঙ্গেল সোফাটায় বসে বসে ঝিমুতে থাকে, হয়তো ঘুমিয়েও যায়। ঘুম ভেঙে দেখে পুরো ফ্ল্যাটে সে একা, ওরা বেরিয়ে গেছে তাকে না জানিয়েই। পুরো ঘটনাটা যেন কাল্পনিক। কাউকে বললে বিশ্বাস করবে না। কাশির মতো ভদ্র-সদ্র ছেলে হয় না। সে আনবে ঘরে প্রস? অসম্ভব। মাঝেসাঝে ঐ যার বিয়ে হয়েছে, বউ খিচুড়ি পাঠায়, একেক রাত্তিরে তো রেড লেবেল কিংবা হাভানা ক্লাবের বোতল নিয়ে আসে, ও ছাড়া বারে আর কেউ যেতে চায় না, পুলিশ ধরবে এমন একটা ভীতি তাদের আছে। গরমে সবাই হাসফাস করে আর ঘামতে থাকে দু’পেগ করে মারবার পরেই। এমনকি ওসবও তো গেলে না কাশি।

ডাইনিং টেবিলের উপরে লালচে একটা ডিম লাইট জ্বলছে। মৃদু পায়ে সে এগিয়ে যায়, জগ থেকে উপুড় হয়ে থাকা কাচের গ্লাসে পানি ভরে, এরপর সেটা থেকে চুকচুক করে কণ্ঠ ভেজায়। মনে পড়ে, দুদিন গেলেই পরিষ্কার হয়েছিল, প্রস আনেনি কাশি। মেয়েটাকে সে লুকিয়ে বিয়েই করেছে। কী কারণে যেন মেয়েটা নিজের পরিবারকে জানাতে পারেনি বিয়ের ঘটনা। কাশি বুঝিবা তাদের যৌনক্রিয়াটাকে নিয়মিত ও স্বাভাবিক করতেই এইসব বলে। এরপর বহুবার ঐ মেয়ে এসেছে ফ্ল্যাটে, কাশির বউ, একচোখে কোমলতা, আধহাত উঁচু হিল পরে। একদিন তাকে ডেকে বলেছিল, ‘আপনার চোখ দুটো বিশ্বসুন্দরীদের মতো। অমন চোখ আমার থাকলে কাশিকে বিয়ে করতাম না।’ পাশ থেকে যার বউ গ্রাম থেকে খিচুড়ি না হয় পিঠা ইত্যাদি পাঠায়, সে ফোড়ন কেটেছিল, ‘কিন্তু দেখেন। এই শালাকে কিন্তু কেউ বিয়ে করতে রাজি হয় না’, সে প্রতিবাদে কিছুই বলেনি। ডাহা মিথ্যে অভিযোগের প্রতিবাদ আবার কী! একচোখ কোমল মেয়েটা বেশ, হেসেছিল মৃদু। কাশির বেঁটে বউ। পানি গিলতে গিলতে স্মৃতি থেকে উঠে এসে চড়া মেকাপ কী সেন্টের ঘ্রাণ তার নাকে ধাক্কা মারে।

ছয়তলা এই দালানের সর্বোচ্চ আর সর্বশেষ এই ফ্ল্যাট। এক রুম, একটা ছোট্ট ডাইনিং আর একখানা কিচেন, ডাইনিং লাগোয়া টয়লেট। দরজা খুললেই হুহু ফাঁকা ময়দানের মতো ছাদ। সে দরজা খোলে। এখন কয়টা হবে রাত? হেঁটে হেঁটে ছাদের আধামানুষ সমান রেলিং ঘেঁষে দাঁড়ায়, পা কেমন শিরশির করে। শহর ঝিমুচ্ছে, দূরে কোন এক বিল্ডিংয়ে মনে হয় বিয়ে লেগেছে, বাতি জ্বলছে ধুপধুপ করে, কোথাও বাজছে কাওয়ালি, বিহারিপট্টি এদিক থেকে বেশি দূরে না। নিচে তাকালেই কেমন ঝিমঝিম করছে মাথা। ঐ কোত্থেকে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে মহল্লায় ঢুকছে একটা ট্রাক, এমন মুহূর্তে দু’পায়ের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায় একটা সাদা বেড়াল। চমকে উঠে প্রায় পড়েই যেত সে, সামাল দেয় রেলিং ধরে। ইচ্ছে যায় জুতো খুলে ছুঁড়ে মারে বেড়ালটার দিকে, কিন্তু পায়ে জুতো কই? খালিগায় নগ্নপদে দাঁড়িয়ে থাকার ফলে নভেম্বরের সদ্য জন্মানো শিশু শীতের মৌসুম তাকে কাবু করে। কাঁপুনিটা ধরার আগেই অবশ্য ভিতর থেকে চেঁচিয়ে ওঠে কাশি, ‘শালা গেলি কই তুই? এদিকে আয়।’
বিরক্ত হয়ে সে ধীর পায়ে ভিতরে ঢোকে। কাশি তাদের শোয়ার ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে-মুখে বোধের অতীত কোন এক্সপ্রেশন, রাগ নাকি ক্লান্তি কিংবা অন্যকিছু? ডিমলাইটের মৃদু লাল আলোয় কাশিকে দেখে তার বড় হাসি পায়। সে প্রশ্ন করে, ‘কী ব্যাপার?’
কাশি পাল্টা তাকে জিজ্ঞেস করে, ‘বিছানা থেকে নামার সময় ওর পেটে পাড়া দিয়েছিলি নাকি বাঞ্চোত?’
তখন টয়লেটে উচ্চকিত ওয়াক ওয়াক শব্দে সেদিকে মনযোগ দিতে হয়। সেই যার বিয়ে হবে হবে এরকম কথা চলছে বাড়িতে, অনবরত বমি করছে। বাতাসে ভাসছে কড়া দুর্গন্ধ।
কাশি বলে, পেটে পাড়া দিলি। সেজন্য নাকি বমি হচ্ছে।
যেন কিছুটা ভয় পেয়েছে, এভাবে সে জানায়, আমি তো ভেবেছিলাম হেগে দিয়েছে।
শালার কাওরা, রাত দুপুরে তোমার হ্যান্ডেলমারা চাগে? চোখে আর কিছু দেখো না, লোকজনকে পাড়িয়ে গিয়ে টয়লেটে ঢোকো?
আরে ধুর।
ধুর কী? তোকে রোজ রাতেই তো দেখি। দেখি না?
তাদের তর্ক থামাতেই যেন কদিন পরে যার বিয়ে হবে, মেয়ে খোঁজা হচ্ছে বাড়ি থেকে, বেরিয়ে আসে বমি সেরে। ভেজা মুখ থেকে পানি গড়িয়ে তার হলদে টিশার্টের বুকে জমা হয়, ভারি কী মেকি বোঝা যায় না, তেমন কণ্ঠে সে বলে, ‘আমার বাচ্চাটা শালা নষ্ট করে দিলি? পেটে তো বাচ্চা ছিল। বমির সঙ্গে বেরিয়ে গেল।’
তখন লিজি গ্রান্ট অথবা লানা যেই গায়িকার নাম, এই তিনজন পুরুষের জীবনে নেমে আসে স্বর্গ থেকে। দেয়ালে দেয়ালে বাড়ি খায় তার ভিনটেজ কণ্ঠ—Look at you smoking in them neon lights/ Under the thunder, yo, you look so nice/ Made me wonder how you spend them nights/ Me, I spend them looking for men I might like..

এক লহমায় বুঝিবা ফ্ল্যাটের ডাইনিংরুমটা হয়ে ওঠে উনিশশো ষাট সনের ঘ্রাণমাখা উদাসী ঢাকা, যাকে এরা কখনো দেখেনি, তবে এমন রাতে, এমন মৃদু হিম বাতাস বইতে থাকা ঘোলাটে আলো-আঁধার শহর চিরকাল ষাটের দশকে আঁটকে আছে, তারা বিশ্বাস করে। বিষণ্ণতা গিলে খায় না তাদের, শরীরে কম্পন জাগায় না হাসির তোড় বরং খুব কান্না পায় আচমকা। রাতের শেষ প্রহরে যেমন মহল্লার কুকুরগুলো কেন বেঁচে আছে এই প্রশ্নের জবাব না পেয়ে করুণ ধরনের ডাক ছাড়ে থেমে থেমে, তারাও যে যার জায়গায় দাঁড়িয়ে শব্দ করে কাঁদে। প্রথমত কেউ বোঝে না কেন এই কাণ্ড তারা করছে, এরপর যত সময় গড়ায়, কারণ খুঁজে পাওয়াটাকে আর দরকারি মনে হয় না। ধীরে ধীরে এই কান্নার শব্দ মিশে যায় নভেম্বরের সদ্যজাত শীতের হাওয়ায়। যে হাওয়া আগামীকাল হয়তো অভিযান করবে দিনভর এবং সবাইকে ছুঁয়ে যাবে বলেই আগামীকাল থেকে কেউ আর হাসবে না এই শহরে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর