সন্ধ্যা থেকে কাঁদতে বসেছি। করোনাকরুণ দিনে আমার এই কান্নার কারণ অনুজপ্রতিম কবি, চ্যানেল আই’র বার্তা সম্পাদক আদিত্য শাহীন। সে প্রথম জানায়, ছড়াকার নাসের মাহমুদ আর নেই। ধক করে ওঠে মন। ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহ রাজেউন’ বলা ছাড়া যেন আর কিছু করার নেই। চোখের পানি আর বাধ মানে না। ফিরে যাই চল্লিশ বছর পেছনে।
১৯৮০ সালের এক শান্ত সকাল। কুষ্টিয়ার মিলপাড়ায় একটি পুরনো বাড়ি খুঁজছি। বড়স্টেশন ছাড়িয়ে মোহিনী মিলের সামনের রাস্তা-এখন তা লালনশাহ সড়ক দিয়ে ছেঁউড়িয়ার দিকে যাচ্ছি। বেকো সাইকেলে বের হয়েছি মিলপাড়ার বাড়ি খুঁজতে। পথ শেষ হয়ে আসে, পাইনা উদ্দিষ্ট ঠিকানা। রেলগেটে এসে বামে তাকাতেই দেখি- ‘স্বাক্ষর সাহিত্য সংসদ, মিলপাড়া’। বাড়ি না বলে ঘর বলা ভালো। করোগেট টিনের দোচালা ঘর, নিচে পাকা। লালরঙের দেয়াল। ঘরের সামনে পানি জমে বলে কয়েকটি ইট বিছানো। ইটের ওপর পা ফেলে ফেলে ঘরের বারান্দায় পৌঁছানো যায়। সামনে সমান্তরাল রেললাইন। কাঠের পুরনো দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে চৌকি, বিছানাপত্তর। একপাশে পড়ার টেবিল, ছোট্ট বেতের বুকশেলফ। মেঝেতে কিছু ওষুধপত্রের প্যাকেট। শেলফে সাজানো বই-পত্রপত্রিকার সম্ভার। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে যেসব লিটলম্যাগাজিন-সাহিত্য সংকলনের কথা শুনি সবই আছে। চোখ ছানাবাড় হয়ে যায়, এতো সংকলন যার সংগ্রহে, তিনি কতো বড় মাপের মানুষ! ফর্সা মুখের বেঁটে গড়নের সদাহাস্য যুবক এই মেসবাড়ির বাসিন্দা। হাত বাড়িয়ে বললেন, আমার নাম নাসের মাহমুদ।
নাসের মাহমুদ ছড়াকার হিসেবে নাম কুড়োচ্ছেন। স্বাক্ষর সাহিত্য সংসদ গড়ে তুলে বেশ কয়েকজন লেখক-ছড়াকারকে এক করেছেন। নিজে বের করা শুরু করেছেন ‘ঝিলিমিলি’ ছড়া পত্রিকা। আমি তখন এক উন্মাদনায় কুষ্টিয়ার সাপ্তাহিক ইস্পাত, জাগরণীতে সাংবাদিকতা শুরু করেছি, একই সঙ্গে লিখে যাচ্ছি ছড়া কবিতা। গ ম ম হাফিজুর রহমান নামের এই ছড়াকারের নাম অচিরেই তার কাছে পৌঁছে গেছে। তিনিই খবর পাঠিয়েছেন-স্বাক্ষর সাহিত্য সংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে, ভবিষ্যতের লেখাজোঁকা নিয়ে একসঙ্গে কাজ করা যাবে। এরই মধ্যে আরেক সে ঘরে আরেকজন এসে হাজির। শ্যামলা গড়ন, আমারচে’ কিছু ছোট হতে পারে। নাসের ভাই বললেন, এর নাম বিপুল বিশ্বাস। ভালো ছড়া চর্চা করে। শহরের সাহিত্য চর্চাকারীদের তখন অনেককেই চিনতে শুরু করেছি। বিপুলের নামটি আগে থেকে জানা ছিল বলে বলি, এই নাম জানি।
আমার পরনে পায়জামা, গায়ে কেণি ঝুলানো খদ্দরের পাঞ্জাবি, হাতে ডায়েরি, বুকপকেটে রেডলিফ ব্রান্ডের লাল আর কালো দুটি কলম। স্থানীয় সাহিত্যিক আবুল আহসান চৌধুরী, সাংবাদিক গ্রামের ডাক সম্পাদক এম আলমগীরকে আমি পায়জামা-খদ্দেরের পাঞ্জাবীতে দেখেছি, নিজেও নিয়েছি বেশ। ধারণা করেছি, সাহিত্য চর্চাকারী সমাজের আর দশজনের থেকে আলাদা। সে ভাবুক, চিন্তক। তার বেশভূষাও হতে হবে আলাদা। নাসের মাহমুদ বললেন-কথায় আছে ‘সাধু হও সাধু সেজো না’- হাফিজ আপনি আগে কবি হোন, কবি সাজবেন না। প্রথম দেখাতেই তিনি আধুনিকতার প্রথমটি ছবকটি দিয়ে দেন।
সেই থেকে শুরু। তারপর গুরু, অগ্রজপ্রতিম ভাই আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক আমাদের ক্রমশ:ই প্রগাঢ় হয়েছে। উল্লেখ প্রয়োজন, এই গল্প যখনকার, তখন নাসের ভাই ‘ঝিলিমিলি’ ছড়া পত্রিকার বিক্রি মূল্য একটাকা রাখতে গিয়ে বড় হিমশিম খেয়েছিলেন। আমার সম্পাদিত ‘বিবক্ষা’ সাহিত্যপত্রের দাম আটআনা করেছিলাম। তখন কুষ্টিয়ার রক্সগলির নামকরা নেয়ামত হোটেলে পাঁচটাকা চার আনা দিয়ে দিব্যি খাসির গোশত, ভাত ও ডাল খাওয়া যেতো। খাসির গোশত চারটাকা, ভাতের প্র্রথম প্লেট বার আনা,পরের প্লেট আট আনা, ডাল ছিল ফ্রি !
নাম ছাঁটাই
আমি নাসের ভাই’র নামের অর্ধেক নিয়ে লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছি। কুষ্টিয়া বড় স্টেশনে আমরা আড্ডা দিতাম। সে আড্ডায় হাসান মোস্তফা স্বপন, দেবাশীষ সান্যাল, বিপুল বিশ্বাস, আলী হাবিবসহ অনেকেই থাকতেন।
আড্ডায় নাসের ভাই বললেন, আপনার নাম হাফিজুর রহমান এর শুরুতে যে গ ম ম এর মানে কি? বললাম, গোলাম মোস্তফা মোহাম্মদ। বললেন, নাম ছেঁটে হাফিজ মাহমুদ করে ফেলুন। বললাম, তাহলে তো লোকে বলবে কবি আল মাহমুদ বা নাসের মাহমুদ এর ছোটভাই। নাসের ভাই বললেন, আপনি ভাইই তো! আপত্তি থাকলে উল্টে দিন। সেই এই নামে লিখে চলেছি। বিপুল বিশ্বাসের নামও তিনি শ্রী বিপ্রজিৎ বিশ্বাস বিপুল থেকে ছেঁটে দেন। নাসের ভাই অনুজ মানিক মফিজুর রহমান মানিক নামে ভাল ছড়া লিখতেন। তিনিও তার নাম ছেঁটে মানিক রহমান করে দেন।
গুরুর এই নাম ছোট করার অনুসরণে আমি আতিকুর রহমান হেলালের নাম ছোট করে আতি হেলাল, হেলাল উদ্দিন সাগরের নাম সাগর হেলাল, আনোয়ার হোসেন নেহাল এর নাম ছনেহাল আনোয়ার, মতিউর রহমান এর নাম মতিউল আহসান, মো. বদরুজ্জামান জোবায়ের এর নাম জোবায়ের বদরুজ্জামান করতে ভূমিকা রাখি।
৩১ কলাবাগান প্রথম লেন
কুষ্টিয়া শহরের পাঠ চুকিয়ে চুরাশি সালের পর ঢাকামুখী হওয়ার চেষ্টা করি। পঁচাশি-ছিয়াশি সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে ঢাকায় এসে আজিমপুরে এক বন্ধুর মেসে উঠি। সাহিত্যিক আবদুল মান্নান সৈয়দ, আলী ইমাম ওদিকেই থাকতেন। তাকে কেন্দ্র করে আজিমপুর এলাকার মাঠের কোণে আমরা দাঁড়িয়ে আড্ডা দিতাম। তখন আমীরুল ইসলাম, মাহবুব রেজা, এবরার হোসেন, ওবায়দুল গণি চন্দন এর সঙ্গে আড্ডা হতো। যাহোক, নাসের ভাই আমান ল্যাবরেটরিজ এর মালিক আলহাজ্ব আমান উল্লাহ’র কাছে একটা চিঠি লিখে দেন আমাকে কোন চাকরি-বাকরি দেয়ার জন্য। চিঠি নিয়ে আমান সাহেবের সঙ্গে দেখা করলে তাঁর প্রকাশিত মাসিক রওশন পত্রিকার লেখা জোগাড়, আনা প্রুফ ট্রুফ দেখা, লেখা সম্পাদনা করার মতো একটা অস্থায়ী চাকরি হয়। আমার ঢাকার প্রথম ঠিকনা হয় ‘৩১ কলাবাগান প্রথম লেন’। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ও পড়ার চাপে কয়েকশ টাকার সেই চাকরি কয়েক মাসের বেশি স্থায়ী না হলেও বহুদিন ৩১ কলাবাগানের ঠিকানাটা চিঠিপত্র, মানিঅর্ডারের জন্য ব্যবহার করতে পেরেছি।
ফুলপাখি
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলজীবন শুরু পর মাঝে মাঝে নাসের ভাই ঢাকা এলে হলে দেখা করে যেতেন। একবার হল থেকে নিয়ে গেলেন নিউমার্কেট সংলগ্ন শাহনেয়াজ হলের কাছের এক মেসে। সেখানে ঢাকাবাস শুরু করেছেন মানিক রহমান। মানিক তখন ‘ফুলপাখি’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নেন এবং কয়েক সংখ্যা প্রকাশও করেন। এই প্রকাশনার সঙ্গে কোনভাবে আমি যুক্ত হতে পারি কিনা, তা আলোচনার জন্যই নাসের ভাই আর আমি সেখানে যাই। নীলক্ষেতে মোখতার আহমেদ নামের এক ছড়াকার ও মাসিক পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে নাসের ভাই’র বন্ধুত্ব ছিল। তার ওখানে বহু শিশু সাহিত্যিক ছড়াকারের আড্ডা হতো। নাসের ভাই সেই আড্ডার সঙ্গে আমাকে পরিচিত করিয়ে দেন।
তোরা যে যা বলিস ভাই
ছিয়াশি-সাতাশি সালে ছাত্রধর্মঘট ও গোলযোগে ক্লাশ ও হল ঘন ঘন বন্ধ হতো। বাড়িতে থাকার সময় কবি সুকুমার দাশের ‘কুমারখালী মেডিক্যাল হল’ ওষুধের দোকানে লেখক- কবিদের আড্ডা বসাতাম। পেশাগত কাজে মাঝে মাঝে নাসের ভাই এখানে এলে আড্ডায় যোগ দিতেন। এসময় কুষ্টিয়ার কবিদের কবিতা নিয়ে সুকুমার দাশকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে ঢাকা থেকে বই প্রকাশের উদ্যোগ নিই। কুষ্টিয়ার এগারো কবির কবিতা সংগ্রহ। কবিরা হচ্ছেন- মিলি রহমান, কাজী আখতার হোসেন, শেখ মুহাম্মদ নজরুল, মতিউল আহসান, বিধান রায়, সৈয়দা রাশিদা বারী, অর্চনা মালাকার, নাসের মাহমুদ, ইকবাল আজিজ, মাহমুদ হাফিজ ও সুকুমার দাশ। এই বইয়ের নাম ও প্রচ্ছদের থিম ঠিক করতে শিল্পী হামিদুল ইসলামের কাছে যাই। এসময় নাসের ভাই তাঁর গবেষক বিলু কবীরের প্রথম যৌথ কাব্যগ্রন্থ ‘যে তুমি একমাত্র আমার’ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়ে আমার বইটির প্রচ্ছদশিল্পীর কাছ থেকেই সেটির প্রচ্ছদ করতে চান। হামিদ ভাই তখন সন্ধ্যায় এক নম্বর ঢাকেশ্বরী রোডের আজাদ অফিসে বসতেন। হেলাল হাফিজের কবিতা তখন ‘এখন যৌবন যার’ নাম ঠিক করে আমি, সুকুমার দাশ, নাসের ভাই দৈনিক আজাদ অফিসে যাই। হামিদ ভাইয়ের সামনে বইয়ের নাম নিয়ে আমাদের দোলাচলে তিনি বাইরে থেকে নাম ঠিক করে আসার পরামর্শ দেন। চত্বরে ঘাসে ছাওয়া বিশাল মাঠ। চায়ের অর্ডার দিয়ে সবাই ঘাসে বসে শলাপরামর্শ করি। বইয়ের কবি কাজী আখতার হোসেন (সাবেক সচিব) সুকুমার দাশ তথ্য দেন, কবি হেলাল হাফিজ এর কবিতার পঙতি’ এখন যৌবন যার’ দিয়ে কবি হাসান হাফিজ এর বই। এই নাম দেয়া যাবে না। নাম নিয়ে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি না। একপর্যায়ে নাসের ভাই বলে ওঠেন- নাম হোক ‘তোরা যে যা বলিস ভাই’। সমস্বরে আমরা তা সমর্থন করি। আমার নিজের নামই শুধু নই, প্রথম সম্পাদিত বইটির নামেও যুক্ত আছেন নাসের ভাই।
সংগ্রামী জীবন
নাসের ভাই ভরজীবনই সংগ্রাম করে গেছেন। আশির দশকে আমান ল্যাবরেটরিজ এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে কোম্পানি বদলে করে আরেক ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হন। সেখানেও খুব বেশি সুবিধে না হওয়ায মধ্য নব্বইয়ে তিনি পাড়ি জমান হংকংয়ে। ফিরে এসে আবার কুষ্টিয়ায় থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন। বইপত্র, কাগজ স্টেশনারীর দোকান দেন কাগজমেলা নামে। পাঠ চুকিয়ে ঢাকায় এসে স্থায়ী হন। জীবনসংগ্রামের ব্যস্ততায় কয়েকবছর পর পর দেখা হতো তাঁর সঙ্গে। তখন নিজের সম্পর্কে নতুন খবর দিতেন। ২০০৫ সালে আমেরিকা গিয়ে নাসের ভাই’র অনুজ মানিক রহমানের সঙ্গে দেখা করি। যাওয়ার সময় নাসের ভাইয়রও অনুরোধ ছিল। মানিক আপস্টেট পুগেপসিতে বাড়ি কিনে বসবাস করতেন। আমার আত্মীয় আবু মুসা ড্রাইভ করে এক দুপুরে তার বাড়িতে নিয়ে যান। দেশে আসার পর নাসের ভাই্ অনুজের খবর প্রতিষ্ঠার খবর নিতে জনকণ্ঠে ছুটে আসেন। সব খবর পেয়ে আশ্বস্ত হন।
নাসের ভাই’র সঙ্গে শেষ দেখা হয় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। এ দিন শিল্পকলা একাডেমীতে একটি অনুষ্ঠানে কাকতালীয়ভাবে বিচারকের আসনে বসি আমার সাংবাদিকতার আইডল আবদুর রশীদ চৌধুরী, সৃজনশীল লেখালেখির আইডল নাসের মাহমুদ এর সঙ্গে। তিনি জানান, তিনি এখন ঢাকায়, পারিবারিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসা দেখাশুনা করছেন।
পেশাগত ও বৈষয়িক জীবনে সংগ্রাম করে গেলেও লেখালেখি জীবন থেকে কখনো ছুটি নেননি নাসের মাহমুদ। ছড়া, কবিতা, গদ্য, সম্পাদনা মিলিয়ে তাঁর লেখা বইয়ের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। যে মুল্যায়ণ তাঁর প্রাপ্য, তা এখনও অপেক্ষমান।
কুষ্টিয়ার সাহিত্য ঘরানায় নাসের মাহমুদ
আশি-পঁচাশিতে কুষ্টিয়ায় কয়েকটি সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঘরানা সক্রিয় ভূমিকা রাখে। নাসের মাহমুদ নেতৃত্ব দেন মিলপাড়ার ঘরানা। স্বাক্ষর সাহিত্য সংসদ গড়ে তুলে তিনি এই ব্যানারে সমবেত করেন হাসান মোস্তফা স্বপন, দেবাশীষ সান্যাল, বিপুল বিশ্বাস, আলী হাবিবসহ প্রমুখকে। তাঁর সম্পাদিত ‘ঝিলিমিলি’ ছড়া পত্রিকা স্বাক্ষর সাহিত্য সংসদ থেকে বের হয়। বিপুল বিশ্বাস স্বাক্ষর থেকে বের করেন ‘সুন্দর’ নামে ছড়াকার্ড। তাঁর প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সমর্থনে আমি ‘রক্তিমাভা’, ‘বিবক্ষা’, ‘লালবেলুনের লুকোচুরি’, ‘আগুন ঝরানো ফাগুন’, ‘ঘাসের ডগায় রক্ত’ ইত্যাদি সাহিত্যপত্র সম্পাদনা এই ঘরানার বাইরে থেকে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা এমনকি পশ্চিমবঙ্গের অনেক সাহিত্যামোদীর সঙ্গে পত্রযোগাযোগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সে পত্রবন্ধুদের অনেকে আজ স্বনামখ্যাত কবি-লেখক-ছড়াকার-প্রকাশক। পশ্চিমবঙ্গের ভবানীপ্রসাদ মজুমদার, অমল ত্রিবেদীসহ বাংলাদেশের আসলাম সানী, লুৎফর রহমান রিটন, জাকির তালুকদার, আমীরুল ইসলাম, হাসনাত আমজাদ, সূচি সৈয়দ, সাঈদ বারী, আশরাফুল আলম পিন্টু প্রমুখ। কুষ্টিয়ার সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র হিসাবে গড়ে ওঠে লালিম হক এর নেতৃত্বাধীন রাজু আহমেদ স্মৃতি সংসদ। লেখক ওয়াকিল মুজাহিদ বিভিন্ন প্রকাশনার প্রচ্ছদ আঁকতেন- ব্লক করে দিতেন বলে আড়ুয়াপাড়ায় তাঁর কর্মস্থল কেন্দ্র করেও সাহিত্যমোদীদের আড্ডা হতো। এসব সাংস্কৃতিক আবহের সঙ্গে প্রথম আমাকে পরিচিত করানোর গুরু নাসের মাহমুদ।