বিদায় চবি অধ্যাপক ড. গাজি সালেহউদ্দিন

, ক্যাম্পাস

ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 14:16:52

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্পষ্টবাদী ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. গাজি সালেহউদ্দিন শুক্রবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় পরলোকগমন করেছেন। করোনায় আক্রান্ত হয় তিনি প্রথমে চট্টগ্রামে ও পরে ঢাকায় স্থানান্তরিত হন। কয়েক দিনের লড়াই শেষে হাসপাতালের শয্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নোয়াখালীর বাসিন্দা হলেও ড. গাজি ছিলেন চট্টগ্রামের পাহাড়তলি এলাকার রেল কলোনির সন্তান। পিতার কর্মসূত্রে এবং পরবর্তীতে চবিতে কর্মসূত্রে তিনি পাহাড়তলি ও চট্টগ্রামে জীবন অতিবাহিত করেন। নিজে ভাইদের সাথে নিয়ে অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। হানাদার বাহিনীর হাতে শহিদ হন তাঁর পিতা।

পাহাড়তলি বধ্যভূমি সংরক্ষণের আন্দোলনে ড. গাজি নেতৃত্ব দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায়ও সংগ্রাম করেছেন। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মুখোমুখি হয়েও তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বার্থের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র আপোষ করেন নি।

আপোষহীন চরিত্রের কারণে তাঁর যেমন মিত্রের সংখ্যা ছিল প্রচুর, তেমনিভাবে শত্রুর সংখ্যাও ছিল অগণন। তথাপি, তিনি চবি শিক্ষক সমিতিতে একাধিক বার নির্বাচিত হয়েছেন। সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হয়েছেন। সঙ্কটকালে প্রক্টরের স্পর্শকাতর দায়িত্ব সামাল দিয়েছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিরূপ পরিস্থিতি, বিরোধিতা ও প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তিনি সফলতার সঙ্গে পাড়ি দিয়েছেন। তাঁর নীতি ও আদর্শ সমুন্নত রেখেই তিনি সকল অবস্থানে নিজেকে উত্তীর্ণ করেছেন।

এসব কারণে ড. গাজি ছিলেন চবি ক্যাম্পাসে বিশেষভাবে পরিচিত, আলোচিত এবং উল্লেখ্যযোগ্য। বিশেষত, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং প্রগতি, অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ মতাদর্শের শিক্ষক সমাজের অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন তিনি।

১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদানের পর থেকেই নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে জড়িত থাকার সুযোগে হয়েছে। তিনি শিক্ষক ক্লাব (শহর)-এর দায়িত্বকালে নিয়মিত আলাপ-আলোচনায় যোগ দিয়েছি। তাঁর আমন্ত্রণে 'খেলাঘর' শিশু-কিশোর সংগঠনের একাধিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি। যেসব অনুষ্ঠানের অধিকাংশই হয়েছে পাহাড়তলি রেল অঞ্চলে বীরকন্যা প্রীতিলতার স্মৃতিবিজড়িত ইউরোপীয়ান ক্লাবের চত্বরে।

করোনাকালের আঘাতে চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাওয়া চবি'র অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থীর তালিকায় প্রফেসর ড. গাজি সালেহউদ্দিনের নামও পরবর্তী প্রজন্মকে শোকাহত করবে। তাঁর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর