শাবিপ্রবি ছাত্রীদের বিক্ষোভ, হল অফিসে তালা

, ক্যাম্পাস

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 22:45:21

হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ, হলের সমস্যা সমাধান এবং ছাত্রীবান্ধব হল প্রভোস্ট নিয়োগ এই তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় দ্বিতীয় দিনে বিক্ষোভ, প্রভোস্টের কক্ষের তালা ভেঙে নতুন তালা ঝুলানো, শনিবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। 

শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সাথে সাক্ষাৎ করে শিক্ষার্থীদের এক প্রতিনিধি দল।

এ সময় শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়নে একমাসের সময় চান উপাচার্য। এরপর শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের একমাস সময় না মেনে নিয়ে উপাচার্যের ভবনের সামনে অবস্থান করে হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করেন।

তারা তিনদফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- দায়িত্বহীন প্রভোস্ট কমিটিকে পদত্যাগ করতে হবে, অবিলম্বে হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা নির্মূল করতে হবে এবং সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে ও অবিলম্বে ছাত্রীবান্ধব এবং দায়িত্বশীল প্রভোস্ট কমিটি নিয়োগ দিতে হবে। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে দাবিগুলো মেনে না নিলে আবারো আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এরআগে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তারা।

বিক্ষোভ চলাকালে রাত দুইটার দিকে উপাচার্য বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের সমস্যার কথা শোনেন।

ছাত্রীরা এ সময় হলের অব্যবস্থাপনা নিরসন, প্রভোস্টের পদত্যাগ ও ক্ষমা চাওয়াসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। এ সময় অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন।

এরপর উপচার্য সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে রাত আড়াইটার দিকে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের পানি, সিট, ইন্টারনেট সংযোগ, খাবারসহ বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে হলের রিডিং রুমে ছাত্রীরা আলোচনা করেছিলেন। আলোচনা শেষে ছাত্রীরা হল প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদকে ফোন করে এসব সমস্যার কথা জানান এবং অল্প সময়ের জন্য হলে আসার অনুরোধ করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনেক অনুরোধের পরও প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ তাতে রাজি হননি উল্টো তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন “কেউ তো মরেনি। বের হলে বের হয়ে যাও, কোথায় যাবা? আমার এতো ঠেকা পড়েনি।”

শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জরুরি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, "কিসের জরুরি? কেউ তো আর মারা যায়নি।"

এ ঘটনার পর পরই ছাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রথমে রাত ৯টার দিকে হলের সামনে এবং পরে সাড়ে ১১টায় উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা।

হল প্রভোস্টরা বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এমন অভিযোগ করে ছাত্রীরা জানান, তাদের প্রায়ই শুনতে হয়, ‘দয়া করে তোমাদেরকে হলে থাকতে দিয়েছি, এটাই বেশি।’ বিক্ষোভে এসব কথার প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগানও দেয় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ বলেন, "এত রাতে হলে আসতে পারছি না। শিক্ষার্থীদের বলেছি তারা যেন হলে ফিরে যায়। আমরা সমস্যাগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে বসব

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা দিয়েছি আমরা তাদের দাবিগুলো পূরণ করবো। তারা হলে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সেসব সমস্যাগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করবো। সেজন্য আমরা কিছু সময় চেয়েছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর