ঢাবিতে দোকানি ছাড়া দোকান ‘বুকলেন্ডু’

, ক্যাম্পাস

আরিফ জাওয়াদ, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 07:55:53

 

একটি দোকানের পরিপূর্ণতা পায় পণ্য, দোকানি এবং ক্রেতা দিয়ে। কিন্তু বিক্রেতা ছাড়া দোকান দেশে নতুন নয়! তবে ‘বই’ কেন্দ্রিক দোকানি ছাড়া দোকান কিছুটা নতুনই বলা চলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মিলেছে এমন এক দোকান! বই, খাতা, করোনা সুরক্ষা পণ্য দিয়ে ‘বুকলেন্ডু’ নামে একটি দোকানের উদ্যোক্তা নীলফামারীর ছেলে নঈম আশরাফ।

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে এবং বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন নাঈম। পণ্য ক্রয়ের পর মোবাইল ব্যাংকিক সেবা ‘বিকাশ’ এর মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন ক্রেতারা।

বার্তা২৪.কম কে নাঈম আশরাফ বলেন, প্রথমের দিকে আমরা ক্যাম্পসে ফেসবুক ভিত্তিক পেজের মাধ্যমে অনলাইন বই বিক্রি শুরু করি। যেখানে একজন ক্রেতা জনপ্রিয় যেকোন বই ৭ দিনের জন্য বিক্রয়মূল্যের ১০% দামে, ১৪ দিনের জন্য বিক্রয়মূল্যের ২০% দামে ও ২১ দিনের জন্য বিক্রয়মূল্যের ৩০% দামে নিতে পারবেন। এমন অভিন্নতা নিয়ে যাত্রা শুরু করি। পরবর্তীতে দোকানি ছাড়া দোকানের মাধ্যমে পরিসর বাড়ানোর চেষ্টা করি। তবে কেউ চাইলে বিক্রিত মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে একেবারেও বই কিনতে পারেন। কেউ চাইলে কিস্তিতেও পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতে পারেন।


তিনি আরো জানান, দোকানের পাশাপাশি Booklendu - বুকলেন্ডু ফেসবুকেও ক্রেতা তাঁর পছন্দের পণ্য অর্ডার করতে পারবেন। ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে বই ফ্রি ডেলিভারি সুবিধাও রাখা হয়েছে। আপাতত দু’জন দিয়ে চলছে বুকলেন্ডুর কার্যক্রম।

এ পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা কিংবা হিসেব-নিকেশ গড়মিল হয়েছে কি’না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাঈম আশরাফ বলেন, আপাতত এমন কোন ঘটনার সম্মুখীন হয় নি। তবে এমন আশাও রাখি না। কারণ, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত নিরাপদ জায়গা কই পাব! শিক্ষিত এক তরুণ সমাজ, যাঁরা কি’না ভবিষ্যতের বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে। তাই এমনটা আমরা প্রত্যাশাও রাখি না।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে নাঈম আশরাফ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও ‘বুকলেন্ডু’ কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কিছু মুনাফা অর্জন হলেই আমরা শীঘ্রই ওই কার্যক্রম শুরু করতে পারব। এছাড়াও আরো কিছু অপ্রকাশিত পরিকল্পনা শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে বলে, তিনি বার্তা২৪.কম কে জানান।

কেন ‘Booklendu - বুকলেন্ডু’ নাম রাখা এ ব্যাপারে নাঈম জানান, ধার কথার ইংরেজি প্রতিশব্দ Lend থেকে শেষ অংশ নেয়া। আবার U যুক্ত করলে DU (Dhaka University) এর সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। সে থেকেই নামটি রাখা। তবে আমরা কিন্তু বই ধার দিচ্ছি না, ধার দিলে তো আর টাকা নিতাম বা ; এটা ধারা হয়ে যাচ্ছে! সব মিলিয়ে মনে হল, নামটি যখন মাথায় এসেছে, নামটি এটিই থাকুক। নামের সাথে কাজের যে যথেষ্ট মিল থাকতে হবে তেমনটাও না। ‘Booklendu - বুকলেন্ডু’ একটি ব্যান্ড হোক, একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়াক, সার্ভিস অনেক ধরনের হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা মনে করে- দোকানি ছাড়া দোকান, শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের মাঝে নৈতিক মূল্যবোধ চর্চাতে বেশ আগ্রহী করে তুলবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর