মাঝরাতে ঢাবির হলে সিট চাওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্লোগান

, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 10:04:06

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলে গত সোমবার মাঝরাতে ‘এক দফা এক দাবি, সিট চাই সিট চাই’ বলে স্লোগান দিয়েছে হলটিতে থাকা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। মাঝেমধ্যেই রাতে ‘এক দফা এক দাবি, সিট চাই সিট চাই’ বলে স্লোগান দেয় বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এ হলটিতে ১ হাজার ২৮৮টি আসনের প্রায় শতভাগই হল শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের নিয়ন্ত্রণে। গেল ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের ছাত্রলীগের হল সম্মেলন হয়। এতে নতুন আংশিক নতুন কমিটি পায় ১৮ টি হল। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলেও ছাত্রলীগের দুই সদস্যের (সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) কমিটি হয়। কমিটিতে জাহিদুল ইসলাম সভাপতি আর শরিফ আহমেদ ওরফে মুনিম হন সাধারণ সম্পাদক। এর পর থেকেই ছাত্রলীগের ‘প্রচলিত নিয়ম’ অনুযায়ী জাহিদুল ও শরিফ হলের কক্ষগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন।

তাদের আসন ভাগাভাগিতে সমতা না থাকার কারণে একটি পক্ষের অধীন হলে থাকা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন থেকে গণরুমে অবস্থান করছেন। যার কারণে মাঝেমধ্যেই তাঁরা স্লোগান দেন, বলে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষার্থীদের একটি সূত্র।

দ্বিতীয় বর্ষের কয়েক শিক্ষার্থীর সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে, তাঁরা বর্তমানে হলের দুটি বর্ধিত ভবনের গণরুমে থাকছেন। ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাঁরা নিয়মিত বাধ্যতামূলকভাবে অংশ নিচ্ছেন। এর বিনিময়ে তাঁদের গণরুম থেকে হলের বিভিন্ন কক্ষে ‘শিফট’ করার কথা জাহিদুল ইসলামের। কিন্তু তিনি তা করছেন না। বেশ কয়েকবার এ বিষয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কাজ হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা কিছুদিন পরপর ‘এক দফা এক দাবি, সিট চাই সিট চাই’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এতেও কোনো ফল হচ্ছে না।

দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের এখনো গণরুমে থাকতে হচ্ছে। যার ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। আসন বণ্টনে হল প্রশাসনের কোনো ভূমিকা না থাকায় তাঁরা প্রশাসনের কাছে যাচ্ছেন না, বলে জানায় ওই শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়টি জানেন না ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ মুহাম্মদ জাবেদ হোসেন। তিনি বলেন, প্রশাসনিকভাবে অন্য কারও হল নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের অনেকেই এলাকার “বড় ভাই” বা পরিচিতদের মাধ্যমে হলে আসন বরাদ্দ পাওয়ার আগেই থাকা শুরু করে দেন। অনেকে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসেন। ঢাকায় থাকার সামর্থ্য থাকে না। আমরা তো তাঁদের বের করে দিতে পারি না। আসন বরাদ্দ পাওয়ার পর হলে ওঠার নিয়ম থাকলেও অনেকেই ওঠার পরে আবাসিক হন। হলে আসনসংখ্যা ১ হাজার ২৮৮, কিন্তু থাকেন আরও বেশি। এখন তাঁদের কে কোন সংগঠন করে বা কী করে, তা তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না৷

যদিও হলের আসন নিয়ন্ত্রণ ও নিজের পক্ষে আসনসংকটের বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেননি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘সিনিয়রদের অনেকে হলে আছেন। মানবিক বিবেচনায় তাঁদের একটু সময় দিতে হয়। তবে সিট সংকট দ্রুতই কেটে যাবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর