শাবিপ্রবি ছাত্র আত্মহত্যার বিচারের দাবিতে ঢাবিতে মানববন্ধন

বিবিধ, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 10:22:58

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ছাত্র তাইফুর রহমান প্রতীকের আত্মহত্যার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং প্ররোচনাকারীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷

মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ এ দাবি জানান তারা৷ 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ' ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন৷

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, 'বাজার অর্থনীতির এই যুগে শিক্ষকতাটাকেও আমরা বাজারজাত করে ফেলেছি এবং শিক্ষার্থীদেরও সেদিকেই উৎসাহিত করছি৷ এর ফলে যে ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হচ্ছে, সেটি প্রশমনের ক্ষেত্র আমরা তৈরি করছি না৷ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতীকের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা শিক্ষক সুলভ ছিল না৷ আমাদের যেন এমন আর কোনো প্রতীককে দেখতে না হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন৷ শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া এবং তাদের মনের মধ্যে যে আরও অনেক কিছু উঁকিঝুঁকি দেয়, এ জায়গাটা আমাদের উপলব্ধি করা দরকার৷'

কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, 'একটা ট্র্যাজিক অবস্থায় প্রতীকের জীবনাবসানের দুঃখ অবর্ণনীয়৷ তার পরিবার, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের দুঃখটা আমরা ঠিক বুঝব না৷ সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও অবক্ষয়ের কার্যকারণ আমাদের গভীরভাবে অনুসন্ধান করা দরকার৷ গত ২০-৩০ বছরে আত্মহত্যা ও অপরাধের হার বেড়েছে৷ এর কারণ, বিচ্ছিন্নতা ও আইনের শাসনের অভাব৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ বিষয়ে গবেষণা করে অনেক তথ্য বের করা দরকার, যাতে সরকার চাপ অনুভব করে এবং কতগুলো তথ্য ও প্রশ্নের মুখোমুখি হয়।'

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, 'রাজনৈতিক মতাদর্শ, এলাকাপ্রীতি আর ব্যক্তিগত আনুগত্যের ভিত্তিতে এখন শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা চলে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রচুর দলীয় ও এলাকা বিবেচনায় নিয়োগ হয়েছে৷ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকা দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে৷ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম প্রতীকেরা গুমরে গুমরে মারা যাচ্ছে৷ একজন শিক্ষকের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে : তিনি তার শিক্ষার্থীদের কতটা ভালোবাসেন, তাদের কতটা ভালো চান৷ এই মূল্যায়নে আমার বিবেচনায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতীকের শিক্ষকেরা শূন্য নম্বর পেয়েছেন৷'

বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাকিম আরিফের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক সালমা নাসরীন, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক তাজিন আজিজ, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কে এম সাইফুল ইসলাম খান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তব্য দেন৷

এ সম্পর্কিত আরও খবর