কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষদের গণহারে গ্রেফতার, মামলা, জুলুম ও নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নিপীড়ন ও বৈষম্যবিরোধী সচেতন শিক্ষক সমাজ।
শনিবার (৩ আগস্ট) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা ১১টায় একত্রিত হতে থাকে শিক্ষকবৃন্দ। এসময় মাথায় লাল কাপড় বেঁধে ‘নিপীড়ন ও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষক সমাজ’র ব্যনারে একটি মিছিল বের করেন শিক্ষকরা।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বর হয়ে প্রধান ফটকে অবস্থান করে এবং পরবর্তীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিক্ষকরা। এসময় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. একেএম মতিনুর রহমান, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, অধ্যাপক ড. মো. তোজাম্মেল হোসেন ও অধ্যাপক ড. জাকির হুসাইনসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, 'কোটা আন্দোলনের সময় রাজধানীতে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে এ সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির এই কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আমি মিরপুর যে হত্যাকাণ্ড দেখেছি তার বাংলাদেশে অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। বাংলাদেশে না হতে পারালে ছাত্রসমাজ তার ভাইয়ের প্রতি শতভাগ বেইমানি করবে। এ জন্য আমি এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি।'
সমাবেশে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. একেএম মতিনুর রহমান বলেন, 'শিক্ষার্থী প্রদানকৃত ৯ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলকে আহ্বান জানাচ্ছি। যদি সেটি করতে আপনি ব্যর্থ হন তাহলে সকল দায়িত্ব ছেড়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করুন। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও ছাত্ররা এতো প্রাণ দেয় নাই আজকের ছাত্রসমাজ যতটা প্রাণ দিয়েছে। ২৬৬টি প্রাণের বিনিময়ে আপনি কোটা মেনে নিলেও আপনি তাদের এই রক্তঝরা তাজা প্রাণের সাথে নাটক করছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি গত ১০ টা দিন ধরে ঘুমাতে পারছি না। আমার সন্তান যখন আমাকে বলে আমাকে কেনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামতে দিচ্ছো না, তখন আমার উত্তর দেয়ার জায়গা থাকে না। আমরা জাস্টিস চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।'