কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে যুবলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে পাঁচজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) শিক্ষার্থীর জিলা স্কুল থেকে কান্দিরপাড়ের পূবালী চত্বরে এসে গণমিছিল করতে এলে সাউন্ড গ্রেনেড মেরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এরপর কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে গুলি চালান ও মারধর করেন।
সরেজিমনে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে সকাল ১০টায় প্রতীকী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে সকাল ১১টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ও গণমিছিল করার জন্য শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকলে শিক্ষার্থীদের প্রথমে নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে বাসায় পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। তারপরেও তারা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ প্রথমে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হলে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামীপন্থী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়েন। এছাড়া এ সময় তাদের হাতে রামদা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা পূবালী চত্তর থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে পুলিশ লাইন্সের দিকে জড়ো হয়ে শাসনগাছার দিকে মিছিল নিয়ে এগুতে থাকলে সেখানে আরেক দফায় হামলা করে। পুরো সময়জুড়ে সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহের কাজে বাধা দেওয়া হয়। স্থানীয় দৈনিক কুমিল্লার কাগজের এক সাংবাদিককে মারধর ও মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয়েছে।
কুমিল্লা সদর হাসপাতালের রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আবদুল করিম জানান, ৬ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন। দুইজন ছররা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সকলে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।
এছাড়া কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ড. ফজলে হাসান রাব্বি জানান, হাসপাতালে মোট ৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা করা হয়েছে।
কুমিল্লার দুই হাসপাতাল মিলিয়ে মোট পাঁচজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে আরও আহত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নিহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের মো. সাইফুল ইসলাম সোহান নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা নিয়ে বাসায় গিয়েছেন।