জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) পদে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম মাহফুজুর রহমান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) পদে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ এবং কোষাধ্যক্ষ পদে গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রব যোগদান করেছেন৷
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনে শর্ত সাপেক্ষে যোগদানের তারিখ হতে ৪ বছরের জন্য তাদের নিয়োগ প্রদান করা হয়৷ পরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে তাদের যোগদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়৷ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার (রুটিন দায়িত্ব) ড. এ বি এম আজিজুর রহমান৷
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান যোগদান অনুষ্ঠানে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর একটা পরিবার৷ যোগদানের পর আমাদের প্রথম কাজ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে চাই৷ শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আমরা শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য করণীয় সকল কাজই করবো৷ শিক্ষার্থীদের এক্সট্রা ক্লাসের মাধ্যমে হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হবে৷ শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলব। যথাযথ সমস্যা চিহ্নিত করে সমস্যার উদ্যোগ নেবো৷ দল মত নির্বিশেষে আমাদের এই প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে কাজ করে যাবে৷ সকলের প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে রুপান্তর করতে চাই৷
কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে যোগদান অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রে মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছিল। জনগণ ভোটের অধিকার হারিয়েছিল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংস হচ্ছিল। এ সকল অবস্থা হতে উত্তরণের জন্যই শহীদেরা জীবন দিয়েছে। তারা রাষ্ট্রের সংস্কার চেয়েছে। আমরা ব্যর্থ হলে যারা শহীদ হয়েছে তাদের আত্মদান বৃথা যাবে৷ তাদের পরিবর্তনের চাওয়ার উপর, আকাঙ্ক্ষার উপর আমরা দাঁড়িয়ে আছি৷ এ দায়িত্ব এখন আমাদের কাঁধে। আমরা অংশীজনদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলব। যাদের আত্মদানের উপর আমরা দাঁড়িয়ে আছি তাদের ভুলে যাওয়া যাবে না। তাদের স্বপ্নকে আমাদের মনে রাখতে হবে। সকল অস্থিতিশীলতা, বিশৃঙ্খলা যাতে দ্রুত কেটে যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের যত বিশৃঙ্খলা আছে, সংকট আছে তা দূর করতে পারব বলে দৃঢ় বিশ্বাস। সর্বক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দিব৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বক্ষেত্রে যোগ্যতা, জ্যেষ্ঠাতার গুরুত্ব সবসময় থাকবে।
গাণিতিক ও পদার্থ অনুষদের নবনিযুক্ত ডিন প্রফেসর আব্দুর রব বলেন, ২০২৪ থেকে স্বৈরাচারী রেজিমকে হটিয়ে এ অবস্থায় আসতে পেরেছি৷ ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা আমরা ধারণ করি৷ আমরা সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করে যাবো৷ অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে এনে যেখানে একান্তই ব্যয় দরকারি সেখানে ব্যয় করা হবে৷ ব্যক্তিজীবনের চর্চা দিয়ে এই আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করার চেষ্টা চালাবো। ইতোমধ্যেই অংশীজনদের সাথে কথা বলেছি৷ গবেষণা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দ্দেওয়া হবে৷ কোনো ভুল হলে আমাদের ধরিয়ে দিবেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মো. মোতাহার হোসেন, অধ্যাপক শামসুল আলম, প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল রাকিবসহ অংশীজনেরা।