হাতে ঢোল, তবলা, গিটার, চলছে মিছিল, গানের তালে তালে স্লোগান ওঠছে অধিকার আদায়ের। স্লোগানে উচ্চারিত হচ্ছে অচল জাকসু সচল করো, জাকসুর পরিবেশ ফিরিয়ে আনো। অবিলম্বে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গানের মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।
বৃহস্পতিবার (৭ই ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে মিছিলটি শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, শহীদ মিনার, নতুন কলা ভবন, পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ করে জাকসু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল চলাকালে সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীসহ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা গান গাইতে থাকেন। কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে ‘আমাদের সংগ্রাম চলবেই, জয় বাংলা বাংলার জয়, আলোর পথযাত্রী, মুক্তির মন্দির, ঢেউ উঠছে কারা টুটছে, দুর্গম গিরি কান্তার মরু’ প্রভৃতি সংগ্রামী গানসমূহ।
মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট। স্মারকলিপিতে অবিলম্বে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানান তারা।
গানের মিছিলের বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘গত ২৬ বছর আমরা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত আছি। আমরা বারবার অধিকার আদায়ের জন্য কণ্ঠ তুলেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা সর্বদা উপেক্ষা করে আসছে। বর্তমান উপাচার্য একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন নির্বাচনের পরেই জাকসুর আয়োজন করবে। কিন্তু সেটার প্রতিফলন দেখছি না। তবে আমরা উপাচার্যের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে আশাবাদী। আমরা মনে করি উপাচার্য প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন। এছাড়া ক্যাম্পাসে জাকসুর আয়োজনে তৎপর হবেন। সেই লক্ষ্যে আমাদের আজকের গানের মিছিল। আমরা চাই আমাদের এই লড়াইয়ে সবাই এগিয়ে আসবে।'
গানের মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু, কোষাধ্যক্ষ মারুফ মোজাম্মেল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সভাপতি নজীর আমিন চৌধুরী জয়, জাবি বিতর্ক সংগঠনের সভাপতি ফয়সাল মাহমুদ শান্ত সহ সাংস্কৃতিক জোটভুক্ত অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুযায়ী প্রতিবছর জাকসুর কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছরে মাত্র ৯ বার জাকসু নির্বাচন হয়েছে। এছাড়া গত ২৬ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে জাকসু নির্বাচন।