ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রাজশাহী হেলথ টেকনোলজি বন্ধ ঘোষণা

বিবিধ, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেসপন্ডেট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 04:25:23

ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রতিষ্ঠানের অফিস ও ছাত্রাবাসে বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

নোটিশে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের সকল প্রকার ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এছাড়া রাত ৮টার মধ্যে ছাত্রদের এবং বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের ছাত্রাবাস ছাড়তে হবে। আইএইচটির অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুরুতর আহত অবস্থায় ১১ জন শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরবর্তী অবস্থার আরও অবনতি এবং সংঘর্ষের আশঙ্কায় ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

আইএইচটির শিক্ষার্থীরা জানান, সকালে তৃতীয় বর্ষের তিনজন শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানের দুই নম্বর গ্যালারিতে কঙ্কাল বিক্রির জন্য প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। এই তিনজন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের আইএইচটি শাখার সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামানের অনুসারী।

সেখানে সভাপতির অনুসারী প্রথম বর্ষের ছাত্র সাইফুল ইসলামের সঙ্গে ওই তিন শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটি হয়। এটি মীমাংসা করতে বৈঠকের নামে শামীম ছাত্রাবাসে দুই পক্ষের মধ্যে দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত ছাত্রলীগের ১১ নেতাকর্মীকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিউল ইসলাম, মাসুদ রানা, ডেন্টাল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আসমাউল হোসেন, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের রাফি সরকার, একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আল আমীন ও ফিজিও থেরাপি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জ্যোতি সিদ্দিক। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

নাফিউল ইসলাম ও আসমাউল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আসমাউলের মাথায় ২৪টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের আইএইচটি শাখার সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান বাদী হয়ে নগরীর রাজপাড়া থানায় সভাপতিসহ আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আর আহত শিক্ষার্থী নাফিউল ইসলামের মা শরীফা বানু বাদী হয়ে একই ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

আইএইচটি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান বলেন, আমি ঘটানস্থলে ছিলাম না। সভাপতির সমর্থকেরা তার উপস্থিতিতেই ছাত্রাবাসে ঢুকে আমার সমর্থকদের তিনটি কক্ষ ও মসজিদের জানালার কাচ ভাঙচুর করেছে। তারা আমার কক্ষের টেবিলের ড্রয়ার ভেঙে নগদ টাকা ও ল্যাপটপ লুট করে নিয়ে গেছে।

তবে আইএইচটি শাখার সভাপতি আসলাম সরকার বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরাই আহত হয়েছেন। এখানে ভুল বোঝাবুঝি থেকে এসব ঘটনা ঘটেছে। আশা করছি, বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যাবে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। সেখান থেকে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর