ডাকসুতে রাব্বানীর বিরুদ্ধে একক আধিপত্যের অভিযোগ

, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 23:32:48

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) গঠনতন্ত্রের নাম ব্যবহার করে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার অভিযোগ উঠেছে জিএস গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে। সকল সাংস্কৃতিক কাজে প্রতিনিধি প্রেরণে ডাকসু একক এখতিয়ার রাখেন বলে স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন তিনি।

বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। এটাকে স্বেচ্ছাচারিতা বলে উল্লেখ করেছেন ডাকসুর সহ সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ডাকসু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহশিক্ষা কার্যক্রমে (যথা-বিতর্ক, নাটক, গান, নৃত্য, বক্তৃতা, আবৃত্তি ইত্যাদি) তত্ত্বাবধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সকল অংশীজনের সহায়তা কামনা করে। আপনারা ইতোমধ্যে জানেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান যেকোনো অংশগ্রহণ এবং প্রতিযোগিতামূলক সহশিক্ষা কার্যক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি প্রেরণে ডাকসু এ বিষয়ে একক এখতিয়ার রাখে।’

সেখানে আরও বলা হয়েছে, ‘এ বিষয়ে ডাকসু সংশ্লিষ্ট সম্পাদকগণ অতি দ্রুত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। এর আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হয়ে যেকোনো সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পূর্বে ডাকসুর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুরোধ করা হল।’

অথচ ডাকসুর গঠনতন্ত্রে এমন কোন নিয়ম নেই। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, একক এখতিয়ার ডাকসুকে দেওয়া হয়নি। কোথাও বলা নেই যে, ডাকসুর কাছে জানিয়ে কোনো প্রতিযোগিতায় যেতে হবে। সেখানে বলা হয়েছে, 'সম্ভব হলে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক ও শিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে প্রতিনিধি প্রেরণ করতে পারবে ডাকসু।' কিন্তু কোথাও বলা নেই, এ ধরনের অনুষ্ঠানে ডাকসুর অনুমতি নিয়ে প্রতিনিধি প্রেরণ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক মনা শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, যদি এই নিয়ম গঠনতন্ত্রে থাকত তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ত। ডাকসুর একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা পেলে, যে কেউ যে কোন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না। ডাকসু যাকে মনোনয়ন দেবে, কেবল সে-ই মনোনয়ন পাবে। এতে এসব জায়গায় সাধারণ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে সীমাবদ্ধতা তৈরি হবে বলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেকে জানান।

এদিকে বিজ্ঞপ্তিতে ভিপি নুরুল হক নুরের স্বাক্ষর না থাকায় আরও বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছেন ডাকসুর জিএস গোলাম রব্বানী। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা যে তার একক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা, সেটা ভিপির স্বাক্ষর না থাকাটাই নির্দেশ করে।

বিষয়টি সম্পর্কে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘এই বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে কোন আলোচনা ডাকসুতে হয়নি। টিএসসির সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য এটা তাদের একান্তই ব্যক্তিগত উদ্যোগ। এ ব্যাপারে ডাকসুতে কোন আলোচনা হয়নি। এটি আসলে তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়া কিছুই নয়।'

তবে বিষয়টি নিয়ে ডাকসুর এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) সাদ্দাম হোসেন বলছেন ভিন্ন কথা। 'তিনি বলেন, 'বিজ্ঞপ্তি নিয়ে যদি কারও কোন কথা থাকে তাহলে সেটি নিয়ে তো আলোচনা করার সুযোগ আছে।’

অন্যদিকে এ ব্যাপারে ডাকসুর জিএস গোলাম রব্বানীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর