দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ক্যানসারজয়ী শাহনাজ

, ক্যাম্পাস

ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 22:35:19

মনোবল, অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রমের মাধ্যমে যে অসাধ্য সাধন করা যায়, তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত শাহনাজ কবীর। মরণব্যাধি ক্যানসারজয়ী এ লড়াকু শিক্ষিকা পেশাগত জীবনেও অর্জন করেছেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা। নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীর জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯ উপলক্ষে এ সম্মাননা পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর তাকে সারা দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে সেরা প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচিত করে।

আগামী ২৬ জুন জাতীয় ভিত্তিক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে দেশসেরা প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে তাকে পুরস্কৃত করা হবে।

শাহনাজ কবীরের অসামান্য সংগ্রাম প্রচেষ্টা নিয়ে বার্তা২৪.কম ১৮ মার্চ ২০১৮ তারিখে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তা জাতীয় ক্ষেত্রে স্বীকৃতি লাভ করলো এই সম্মাননার মাধ্যমে।

আরও পড়ুন: ‘কিশোরগঞ্জের বেগম রোকেয়া’ শাহনাজ কবীর

শাহনাজ কবীর কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, জেলা, ময়মনসিংহ অঞ্চলের সেরা প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচিত হয়ে জাতীয় পর্যায়েও শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন।

শাহনাজ কবীর ২০০৬ সালের ৬ মার্চ কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বিদ্যাপীঠ এসভি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের গৌরবময় ফলাফল ও সাফল্য সূচিত করেন তিনি। ১৯৭০ সালের ১৮ মার্চ হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার কুমড়ি-দুর্গাপুর গ্রামের শাহনাজ পুলিশ অফিসার বাবার অধ্যাবসায় ও নিষ্ঠায় কিশোরগঞ্জের নারী শিক্ষায় নবজোয়ার আনেন।

২০১০ সালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর ২০১২ ও ২০১৩ সালে টানা দু’বার এসএসসি পরীক্ষায় ফলাফলে এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় জেলার সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে। ২০১৫ সাল থেকে শতভাগ পাশ ও সর্বাধিক জিপিএ-৫ এর কৃতিত্ব দেখিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলায় ধারাবাহিকভাবে প্রথম স্থান দখল করে আছে এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলেও এই ধারা অব্যাহত ছিল। এসভি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের মোট ২৩৯জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩৬ জন জিপিএ-৫ সহ শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করে।

একাডেমিক এই ফলাফলের বাইরে শিল্প-সংস্কৃতি ও সাহিত্য অঙ্গণেও প্রতিষ্ঠানটি তার কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে।

দুই কন্যা সন্তানের গর্বিত জননী হলেও স্কুলের সকল ছাত্রীরই তিনি মা। ক্যানসারজয়ী এই শিক্ষাবিদের স্বামী ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের একজন উপসচিব। শিক্ষার পাশাপাশি সমাজসেবা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও তার সরব পদচারণা লক্ষণীয়। লেখক হিসাবেও তিনি সুপরিচিত। কর্ম ও যোগ্যতার স্বীকৃতি স্বরূপ দেশসেরা প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়ে তিনি শত বিরূপতার মধ্যেও নিরন্তর সচল থাকার আশাবাদী উদাহরণ স্থাপন করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর