বাড়তি ভর্তি আবেদন ফি আদায়ের প্রতিবাদে জাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিল

, ক্যাম্পাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-26 10:09:40

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্নাতক সম্মান ২০১৯-২০ সেশনের ভর্তি ফরমের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং ফরম বিক্রির উদ্বৃত্ত টাকা সুষ্ঠু নীতিমালার মাধ্যমে ব্যয় করার দাবিতে আবারো বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোট ও প্রগতিশীল ছাত্র জোট।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে মুরাদ চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় জনসাধারণের, এখানকার প্রতিটা সম্পদ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের টাকায় গড়ে তোলা। কিন্তু সাধারণ মানুষের সন্তানেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারছে না। দিন দিন ফরমের মূল্য বৃদ্ধি করে শিক্ষাকে বাণিজ্য হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। শিক্ষা আর বাণিজ্য একসাথে চলতে পারে না।'

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ শুধুমাত্র ফরম বাণিজ্যর মাধ্যমে আয় করে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি বাবদ আয়ের ৪০ শতাংশ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের জন্য তহবিলে রাখতে বলা হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্বৃত্ত ৯ কোটি টাকা নিজেরাই ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। আমাদের দাবি ছিল উদ্ধৃত টাকা থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বাস ক্রয় করার। তারা সেটা না করে আমাদের দাবিকে উপেক্ষা করে শিক্ষকদের বিলাসী এসি বাস ক্রয় করেছে।'

মিছিল ও সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জাবি শাখার আহ্বায়ক শাকিল উজ-জামান বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতি বছর ভর্তি ফরমের মূল্য অনৈতিকভাবে বৃদ্ধি করছে। গত আট বছরে ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি খরচ বাদে ৯ কোটি প্রশাসন আত্মসাৎ করেছে।'

অতিরিক্ত অর্থ আদায়কে চুরি নয় বরং স্পষ্টত ডাকাতি আখ্যা দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, 'বাংলাদেশে যারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে এরা কোনো চোর নয় এরা ডাকাত। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে দাম্ভিকতার সুরে। আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিতে চাই অযাচিত অর্থ আদায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না।'

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে আশিকুর রহমান বলেন, 'ভবিষ্যতে যদি শিক্ষার্থী স্বার্থ বিরোধী কোন সিদ্ধান্ত নেন তাহলে সুস্থমতো গদিতে থাকতে পারবেন না।'

উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ সেশনে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদনে বি, সি, ডি এবং ই ইউনিটের ভর্তির ফরমের মূল্য গত বছরের চেয়ে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সি১, এফ, জি, এইচ এবং আই ইউনিটের ফরমের মূল্যও ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই মূল্য বৃদ্ধির পর থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর