জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে

ভর্তিযুদ্ধ, ক্যাম্পাস

হারুনুর রশিদ, জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-09-01 21:17:43

প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ২০১৮-১৯ সেশন থেকে লিখিত ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এমসিকিউ'র পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা নেয়া হবে। লিখিত পরীক্ষায় কেমন প্রশ্ন আসে, কিভাবে উত্তর করতে হয় এ নিয়ে সংশয় অনেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মাঝে। তাদের জন্য পরমার্শ দিয়েছেন গত বছর জবি'তে লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থীরা। লিখেছেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হারুনুর রশিদ।

জীবনে সফল হওয়ার জন্য কোনো শর্টকাট পথ নেই, তবে কৌশলী হতে হবে। পরীক্ষার যেহেতু বেশিদিন বাকি নেই তাই গৎবাঁধা না পড়ে কিছুটা কৌশলী হয়ে পড়তে হবে। কেননা অনেকেই ভালোভাবে পারা বিষয় কিভাবে লিখবে তা বুঝতে না পেরে পরীক্ষায় খারাপ করে। লিখিত পরীক্ষা হওয়ায় অনেকেই হয়তো দুশ্চিন্তা করছো। তাই তোমাদের জন্য কিছু কথা -

লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য নির্ধারিত জায়গা থাকে। তাই অপ্রাসঙ্গিক উত্তর না লিখে অবশ্যই মূল কথাগুলো লিখতে হবে। পরীক্ষায় যেহেতু বিকল্প প্রশ্ন থাকবে না নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবশ্যই সকল প্রশ্নের উত্তর সঠিক ও সুন্দরভাবে লিখতে হবে। যেহেতু এটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, তাই ০.১ পয়েন্টের জন্যই অনেকে চান্স পাবে না বা সিরিয়ালে অনেক ব্যবধান বেড়ে যাবে। পড়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই পাঠ্যবইকে গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা বেশিরভাগ প্রশ্নই পাঠ্যবই থেকে হয়ে থাকে। সাধারণ জ্ঞানের জন্য বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, সাম্প্রতিক বিষয়াবলী ও বুদ্ধিমত্তার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তাছাড়া প্রত্যেকটি বিষয়ের নির্দিষ্ট কিছু টপিক আছে যেগুলো থেকে প্রশ্ন প্রায়ই আসে। বিষয়গুলো বারবার পড়ো এবং লিখো। দেখবে বিষয়গুলো আয়ত্তে চলে আসবে। সকল বিষয় সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুম ও খাওয়া-দাওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ সবকিছুর আগে তোমার সুস্থতা। সময় একদমই অপচয় করবে না। ভর্তিযুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। তাই আত্মবিশ্বাস রেখো। পরিশেষে বলতে চাই, সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রেখে সৎভাবে পরিশ্রম করলে অবশ্যই সফল হবে।

নাজিয়া আফরোজ
সেশন ২০১৮-১৯, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় ভর্তি পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিও। নিশ্চয় ব্যস্ত আছো ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টা মোটেই হেলায় কাটিয়ে দেয়া যাবেনা৷ পরীক্ষার আগ পর্যন্ত এই কয়েকদিনের উত্তম প্রস্তুতিই তোমার স্বপ্নপূরণ করতে পারে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সম্পূর্ণ লিখিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। লেখার সময় প্রতিটি প্রশ্নোত্তর নির্দিষ্ট পৃষ্ঠার মধেই লিখতে হবে৷ পৃষ্ঠা পূর্ণ করে অনেক বেশী লিখতে পারলেই ভালো নাম্বার পাওয়া যাবে- এই ভুল ধারণা পোষণ না করে, মূলভাব নিজের ভাষায় প্রকাশ করবে। স্পষ্ট করে লিখার চেষ্টা করবে। তথ্যপূরণ, বিষয় নির্বাচনের সময় অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে, বুঝে বিষয় নির্বাচন করবে৷ যে যে বিষয়ে পড়তে আগ্রহী, সে বিষয়গুলো ক্রমানুসারে আগে নির্বাচন করবে। এসব কাজ সম্ভব হলে নিজে করাই ভালো।
সব মিলিয়ে অনেক পরীক্ষার্থী, অচেনা অঙ্গন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করা এসব নিয়ে মোটেও ঘাবড়াবেনা, বিচলিত হবেনা। আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে৷ আত্মবিশ্বাসের মাত্রা এমন হওয়া চাই, এই কক্ষ থেকে যদি একজন পরীক্ষার্থীও চান্স পায়, সে হবো আমি। শুভকামনা রইলো।

আব্দুল্লাহ আলম নুর
সেশন ২০১৮-১৯, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় চেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রশ্নের ধরন কিছুটা আলাদা। কারন এখানে লিখিত পরীক্ষা হয়, বহুনির্বাচনি প্রশ্ন থাকে না! তাই তোমাদেরকে কৌশলী হতে হবে। লিখিত ভর্তি পরীক্ষার জন্য সর্বপ্রথম মেইন বইয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এই সময়ে তোমরা শুধু রিভিশন দেয়ার চেষ্টা করবে। আর নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখবে। সবমিলিয়ে বলা চলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য সময়ের দিকে একটু সচেতন থেকে উত্তরগুলো দিতে হবে।

উত্তর ছাড়া অতিরিক্ত কিছুই লিখা যাবে না। এতে মার্ক তো পাবেই না, সময় নষ্ট হবে এবং সবগুলো উত্তর দিতে পাবে না। সুতরাং মনে রাখবে, উত্তরটা বুঝানোর জন্য যতটুকু লিখা দরকার ঠিক ওইটুকুই লিখবে। এর বেশি কিছু নয়। আশা করি তোমারা ভালো করবে এবং টিকে থাকবে স্বপ্ন সার্থক করার লড়াইয়ে।

আরাফাত সবুজ
সেশন ২০১৮-১৯, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জুনিয়রস, আশা করি সবাই ভাল আছো। শেষ মুহুর্তে পুরোদমে প্রস্তুতি নিয়ে নিজেকে এগিয়ে রাখতে সবাই ব্যস্ত। আজ আমি লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে কিছু পরামর্শ শেয়ার করবো। আশা করি তোমাদের কাজে লাগবে। আমি মানবিক অর্থাৎ ইউনিট '২' নিয়ে কথা বলব। অনেকেই ইতিমধ্যে বেশকিছু তথ্য জেনেছো, তবুও অনেকে সন্দিহান থাকে। এতো টেনশন নেয়ার কোনো কারণ নেই। এবার মূল কথায় আসি।

২০১৮-১৯ সেশনে বাংলা অংশে ৬টি, ইংরেজি ৬টি এবং সাধারণ জ্ঞান ও বিশ্লেষণ দক্ষতা মিলিয়ে ৬টিসহ মোট ১৮টি প্রশ্ন ছিলো। মোট ৭২ নম্বর এবং সময় ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট। এবারও ব্যতিক্রম হবে না। প্রতিটি প্রশ্ন হালকা ব্যাখ্যা করার জন্য বলা হবে। তোমরা যেভাবে সৃজনশীলের অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর দিতে একই রকম। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য নির্ধারিত পৃষ্টা থাকবে এবং সেখানেই সমাধান করতে হবে। যেহেতু পরীক্ষা একেবারেই দরজায় কড়া নাড়ছে সুতরাং এখন শুধু রিভিশন দেয়ার পালা। লিখিত পরীক্ষার জন্য রিভিশনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হলে হাতের লেখার গতি খুব দরকার। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য কত সময় ধরে উত্তর করবে সেটা ঠিক করতে হবে। ভালোভাবে খাতায় উত্তর লিখার চেষ্টা করতে হবে। মনোযোগ সহকারে লিখতে হবে, তাহলেই সময়মতো সব উত্তর করতে পারবে। মেইন বই পড়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভাল করে বাংলা রিডিং, শব্দার্থ, ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পড়তে হবে। ইংরেজিতে ভোকাবুলারি, ট্রান্সলেশন, কোন বিষয়ে আলোচনা এইসব ভাল করে লিখতে হবে। গত বছরের প্রশ্ন দেখলেই বুঝতে পারবে। সাধারন জ্ঞানও একই রকম হবে। কোনো বিষয় নিয়ে ব্যাখা করতে হবে। মানসিক দক্ষতার দুইটি প্রশ্ন নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে করতে পারলে দিনশেষে লাভটা তোমারই।

সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা থাকবে। শেষ মুহুর্তে নিজেকে তৈরি করতে সময়কে গুরুত্ব দাও। আশা করি সবাই ভালো পরীক্ষা দিবে।

আবুল হাসনাত নান্নু
২০১৮-১৯ সেশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

এ সম্পর্কিত আরও খবর