শাবিপ্রবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে বেনামে শ্বেতপত্র প্রকাশ

, ক্যাম্পাস

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-22 13:44:10

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বজনপ্রীতিসহ ৫৩টি অভিযোগ এনে বেনামে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।

শ্বেতপত্রের বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- শাবিপ্রবি’র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কম যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সিজিপিএ ৩.৮৪ ধারীকে বাদ দিয়ে ৩.৫০ ধারী বর্তমান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামের মেয়েকে নিয়োগ দেওয়া এবং তার জামাতাকে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা, অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে ছাত্রলীগের মেধাবী গ্রুপকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া, ইনস্যুরেন্সের নামে আর্থিক অনিয়ম, নিজ জেলা কুমিল্লার প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া।

শ্বেতপত্রটির পেছনে লেখা রয়েছে, প্রচারে: 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার শাবিপ্রবি'র শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ'। শ্বেতপত্রটি ডাকযোগে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ক্যাম্পাসে আসে। সিলেটের জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত মেঘনা প্রকাশনী থেকে এটি পাঠানো হয়। তবে, খোঁজ নিয়ে এমন প্রকাশনীর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

এদিকে এই শ্বেতপত্র প্রকাশকে একটি চক্রের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে চক্রটি হরিলুট করতে চায় বলে দাবি করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, 'অভিযোগকারীদের নৈতিক ভিত্তি অনেক দুর্বল থাকার কারণেই তারা বেনামে এটি প্রকাশ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১২০০ কোটি টাকার দুটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। তার মধ্যে একটির কাজ চলছে। আর এই কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এবং লুটপাট করার জন্য একটি মহল এই শ্বেতপত্র বের করেছে।'

শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতম প্রার্থীদের নেওয়া হয় দাবি করে তিনি বলেন, 'আমি শাবিপ্রবি বিদ্বেষী নই, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি ধারণ করি। আমি আসার পর ৭৮জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে ৪৭ জন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দাবির প্রেক্ষিতেই ইনস্যুরেন্স করা হয়েছে। আর ছাত্রলীগের কিছু বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগই ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা তাদের বহিষ্কার করিনি।' বিশ্ববিদ্যালয়ে কুমিল্লা প্রীতি তৈরি হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে, শ্বেতপত্রে বর্তমান ভিসিকে 'ভিজিটিং ভিসি' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং তিনদিনের বেশি নিয়মিত অফিস করেন না বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণকে অহেতুক বলে উল্লেখ করা হয়। এই অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, 'আমি নিয়মিত অফিস করি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই সীমানা প্রাচীর করা হচ্ছে।'

তবে কে বা কারা এই শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে এবং তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে ক্যাম্পাসে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি এখন শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মাঝে 'টক অব দ্য ক্যাম্পাস' এ পরিণত হয়েছে।

প্রকাশিত ২৪ পৃষ্ঠার এই শ্বেতপত্রটিকে প্রথম কিস্তি বলা হয় এবং দ্বিতীয় কিস্তিটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর