পদত্যাগ করে জাবিকে বাঁচান, উপাচার্যকে আন্দোলনকারীরা

, ক্যাম্পাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-23 15:38:29

জাবি উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে কালো পতাকা প্রদর্শন করে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর'র ব্যানারের আন্দোলনকারী শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা বলেছেন, 'দুর্নীতির দায় নিয়ে নিজে পদত্যাগ করুন, বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচান। দিন দিন স্বৈরাচারী হয়ে উঠছেন, স্বৈরাচারী আচরণ করে আপনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না।'

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে 'দুর্নীতিবাজ' আখ্যা দিয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও পদত্যাগের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে তারা এসব কথা বলেন।

কর্মসূচিতে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় এখন একটি কলঙ্কময় সময় পার করছে। উপাচার্য আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আমরা কেন আন্দোলন করছি? বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদটি যখন কলঙ্কিত হয় তখন আন্দোলন ছাড়া উপায় কী? পদ ও ক্ষমতার চর্চা করে আপনি স্বৈরাচার হয়ে গেছেন। গণতান্ত্রিক দেশে স্বৈরাচারী আচরণ করে আপনি টিকে থাকতে পারবেন না। পদত্যাগ করে আমাদের বাঁচান, নিজে বাঁচুন। অন্যথা ১ অক্টোবরের পরে, আপনাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে।'

কর্মসূচিতে ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, 'ছাত্রলীগকে টাকা ভাগবাটোয়ারা করার দায় উপাচার্য কীভাবে অস্বীকার করবেন? আমরা চাই না, উপাচার্যের বাসভবন (হাওয়া ভবন) হোক। উপাচার্যের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো রাগ নেই। কিন্তু দুর্নীতির দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদটি যে আপনি কলঙ্কিত করেছেন সে দায় নিয়ে সসম্মানে পদত্যাগ করুন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের কথা শুনে পদত্যাগ করুন।'

 পদত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচান

কালো পতাকা প্রদর্শন শেষে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন। কর্মসূচিতে রয়েছে আগামীকাল (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপাচার্যকে তিরস্কার ও মানববন্ধন, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ।

কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল রানা, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ, অধ্যাপক জাকির হোসেন, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক ফজলুল করীম পাটোয়ারী, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, অধ্যাপক তারেক রেজা, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ প্রমুখ।

এছাড়া কর্মসূচিতে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার নেতা কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অপরিকল্পনার অভিযোগ এনে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলা অবস্থায় চাপের মুখে গত ১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনায় তোপের মুখে দুটি দাবি মেনে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তবে দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিটি অমীমাংসিত রেখেই শেষ হয় সেদিনের আলোচনা সভা। পরবর্তীতে ১৮ সেপ্টেম্বরে আবারও আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আলোচনা সভা ফলপ্রসূ না হওয়ায় উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের দাবি জানান তারা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর