ঢাবির একাডেমিক কমিটির সভায় হট্টগোল!

বিবিধ, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-25 02:56:53

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ফোরাম একাডেমিক কাউন্সিলের (এসি) সভায় তুমুল বাকবিতণ্ডা ও হট্টগোল হয়েছে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে বৈঠক শুরুর পর বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার একপর্যায়ে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাবিতে অবৈধভাবে ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দল এবং বিএনপি সমর্থিত সাদা দলের শিক্ষকদের মাঝে তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়েছে বলে জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ থেকে পদচ্যুত ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী অবৈধভাবে এমফিলে ভর্তি হয়েছেন এই ইস্যুতেও বাকবিতণ্ডা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সোমবার বিকেল তিনটার দিকে ঢাবির সিনেট ভবনে একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অধ্যাপক, বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা উপস্থিত হন।

ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রায় দেড়শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বিভিন্ন বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়।

সভায় কথা বলার জন্য একাধিকবার সুযোগ চান ঢাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। তবে সভার শেষ দিকে তাকে সুযোগ দেওয়া হয়। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনকে বিশেষ সুবিধা দানের উদ্দেশ্যে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ব্যাংকিং বিভাগের অধীনে পরিচালিত ‘মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে’ ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তির প্রতিকার না হতেই ডাকসুর নির্বাচিত জিএস এর অপরাধ বিজ্ঞান বিষয়ে এমফিল ভর্তি সংক্রান্ত অনিয়মের কথা প্রকাশিত হয়েছে। আমরা মনে করি এটি ঢাবির ঐতিহ্য ও সুনামের জন্য অত্যন্ত হানিকর ঘটনা।

তিনি আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ৩৪ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল ও সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন, ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেও আমরা এর কোনো প্রতিকার পাইনি। এ বিষয়ে সম্প্রতি আমাদের বক্তব্য ও অবস্থান তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকের কাছে আমরা খোলা চিঠিও প্রদান করেছি। আর এরই মধ্যে আমরা ডাকসুর বর্তমান জিএস এর (গোলাম রাব্বানী) বিধি বহির্ভূতভাবে এমফিল ভর্তির সংবাদ জেনে বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। আমরা আবারো এর তীব্র নিন্দা এবং ভর্তি বাতিল, একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আজকের এই একাডেমিক কাউন্সিলের সভা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বডির সভা। এই সভায় মোট ৩৫ জন অবৈধ ভর্তি প্রক্রিয়ার তদন্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব করছি। এই তদন্ত কমিটির কাজ হবে উক্ত ভর্তির অনিয়ম তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যের পরই আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের বহু শিক্ষক হট্টগোল শুরু করেন। তারা বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। এসময় ভিসি বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা এখানে রাজনীতি করতে এসেছেন। এখানে তো রাজনৈতিক দলের নেতাও আছে! তুমুল বাকবিতণ্ডা আর হট্টগোলের মধ্যেই অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলামের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার ঘোষণা দেন ভিসি আখতারুজ্জামান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর