কুয়াশা চাদরে জড়ানো সকাল, হিম শীতল বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসা কিচিরমিচির আওয়াজ, যেন ছোট এক জলাশয়ের গল্প।
'ময়নার দ্বীপ' নাম তার। শীত কালে যে জলাশয়ে উচ্ছ্বাস তুলে অতিথি পাখির দল। হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এসব পাখি আসে শুধু একটু উষ্ণতার জন্য।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বিবি খাদিজা হলের পাশ ঘেরেই ময়নার দ্বীপ। লাল ইটের রাস্তা পার করলেই দেখা মিলে ময়নার দ্বীপের অতিথি পাখিদের। এ সময় যেন ক্যাম্পাস অন্য এক রূপ ধারণ করে। মুগ্ধতার আরেক রূপ। প্রতিটা মুহূর্তই যেন নতুন।
শীতের সকাল অথবা পড়ন্ত বিকেলটুকু উপভোগ করতে প্রায়শই এখানেই দেখা মিলে শিক্ষার্থীদের। দল বেঁধে তারা পাখি দেখতে আসে, চলে আড্ডা। অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সাহিদা ইসলাম অধরা জানান, ‘শীতকাল বেশ উপভোগ্য এখানে। নানা রকম পাখি আসে আমাদের ক্যাম্পাসে ব্যাপারটা আমাদের আনন্দ দেয়। তাছাড়া পাখিগুলো বেশ নিরাপদে থাকতে পারে।’
খণ্ডকালীন সব স্থির চিত্র ধারণ করতে ক্যাম্পাসের ছবির কারিগররাও বাদ যান না। তাদেরও ভিড় জমে এখানে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটোগ্রাফি ক্লাবের অন্যতম সদস্য আশরাফুল ইসলাম শিমুল বলেন, ‘বর্ষার শেষে শীতের আগমনে ময়নাদ্বীপ মুখরিত হয়ে ওঠে অতিথি পাখির ঝাঁকে। ক্যামেরা নিয়ে ছুটে চলতে চলতে পাখির কলরবে মুখরিত প্রান্তর ধরে হেঁটে যেতে যেতে তুলে রাখি নোবিপ্রবির এ অবারিত মনোহরা স্নিগ্ধ সৌন্দর্যকে। কখনো ভোরের কুয়াশা প্লাবিত সৌন্দর্য, কখনো রাতের কখনো বা সমস্ত দিনের নোবিপ্রবিকে ফুটিয়ে তুলে রাখতে অনিমেষ ভালোলাগা লেগে থাকে। আর অপেক্ষা করি শীতের আগমনের, অপেক্ষা করি অতিথি পাখির এই অবারিত মুগ্ধতাকে তুলে রাখতে। স্নিগ্ধ ভোরের শিশিরের আলো খুলে রোদের স্নান দেখতে। ক্যামেরার চোখের চেয়ে বেশি সৌন্দর্য যে কেবল চোখেই ধরা পড়ে।’
এখানে আসা বেশির ভাগ পাখিই হাঁস জাতীয়। বিচিত্র সব নাম আর রূপ তাদের। একসময় শীত শেষ হয়। সবটুকু মুগ্ধতা ছড়িয়ে পাখিগুলোও বিদায় জানায় প্রকৃতিকে। প্রকৃতি জুড়ে শীতের প্রস্তুতি এখনো যে বাকি অতিথি পাখির দল তাই উড়ে যায় নিজ বাসভূমে।