নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অবহেলিত রোকেয়া

বিবিধ, ক্যাম্পাস

আদিব হোসাইন, বেরোবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 10:26:13

নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে-বেরোবি) অবহেলিত নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ১১ বছর অতিক্রম করলেও তার নামে নির্মিত হয়নি কোনো ম্যুরাল বা স্থায়ী প্রতিকৃতি।

২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে এটি যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে মহীয়সী নারী রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সম্মানার্থে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করেন। তবে তার নামে কোনো ধরনের স্মৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে দৃশ্যমান নেই।

এদিকে, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য নির্মাণ এবং রোকেয়া স্টাডিজ কোর্স চালু করার ঘোষণা দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। শুধুমাত্র ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে সকল কার্যক্রম। প্রতিবছর রোকেয়া দিবসে (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়ার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে দায়সারাভাবে দিনটি উদযাপন করে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী লাভলী সুলতানা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বেগম রোকেয়া নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে রোকেয়ার নামে কোর্স থাকবে, তার প্রতিকৃতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১১ বছরেও তার কোনো প্রতিকৃতি নেই। সত্যি এটি আমাদের জন্য লজ্জার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছি, খুব শিগগিরই যেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়।’

এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কখনো তার নামের সামনে বেগম কথাটি ব্যবহার করেননি। তার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কম মনোযোগ থাকার কারণে রোকেয়া স্টাডিজ নামে একটি কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত হলেও আজ অবধি তা
বাস্তবায়ন করা হয়নি। এতদিনে রোকেয়ার একটি প্রতিকৃতি বা ভাস্কর্য গড়ে উঠতে পারতো। কিন্তু সে কাজটিও করা হয়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রোকেয়ার জীবন দর্শন নিয়ে আরও যত্নশীল হওয়া উচিত।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রোকেয়ার প্রতিকৃতি অবশ্যই থাকা দরকার এবং এটার উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে।’

বর্তমানে এই উদ্যোগের অগ্রগতি কতটুকু এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি উপাচার্য
স্যারই ভালো বলতে পারবেন।’

রোকেয়া স্টাডিজ কোর্স চালুর বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি এটি এখনো ইমপ্লিমেন্ট হয়নি। তবে ইমপ্লিমেন্টের পথে।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করা সম্ভব হয়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর