এক বছরের জন্য গঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটির তিন বছর পূর্ণ হচ্ছে কাল। দীর্ঘদিন ধরে নতুন নেতৃত্ব না থাকায় কমিটির অধিকাংশ নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ চাকরির সুবাদে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেছেন অনেক আগে। আবার অনেক নেতাকর্মী হতাশ হয়ে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। এছাড়া শুধু তাই নয়, মেয়াদোত্তীর্ণ এ কমিটির প্রথম সারির অনেক নেতারও নেই ছাত্রত্ব।
এদিকে, দীর্ঘ দিন মেয়াদোত্তীর্ণ থাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যে নেই গঠনমূলক রাজনীতির চর্চা, নেই নিয়মিত মিছিল-মিটিং। সব মিলিয়ে স্থবির হয়ে পড়েছে সংগঠনটির কার্যক্রম। এমতাবস্থায় নতুন কমিটি দিয়ে ছাত্রলীগের এ শাখাটিকে গতিশীল করার দাবি জানিয়েছে পদ প্রত্যাশী নেতারা।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর রাবি শাখা ছাত্রলীগের ২৫তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও ১১ ডিসেম্বর গোলাম কিবরিয়াকে সভাপতি ও ফয়সাল আহমেদ রুনুকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট এক বছর মেয়াদী আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় ছয় মাস পর ১৯ জুন ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির স্থলে ২৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সেসময় কমিটিতে অন্তত ১৮ জন বহিষ্কৃত, অছাত্র ও অনুপ্রবেশকারীদের পদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই সঙ্গে অভিযোগ ওঠে কমিটিতে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের পদ বঞ্চিত করার।
গত ১৯ জুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর প্রথম দিকে বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক কাজ করলেও এখন পর্যন্ত এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি রাবি ছাত্রলীগ।
সংগঠনটির কয়েকজন নেতা বলেন, দীর্ঘ দিন নতুন নেতৃত্ব না থাকায় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে নেতাকর্মীরা। যে যার মতো আচরণ করছে। এছাড়া যেসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে তাদের মধ্যে অপকর্মের মাত্রা বেড়েই চলেছে। এছাড়া অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় চাকরি করলেও তারা পদে বহাল আছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পদ প্রত্যাশী একাধিক নেতা বলেন, চট্টগ্রাম ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নতুন কমিটি পেয়েছে। অথচ দুই বছর আগে রাবি ছাত্রলীগ কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও এখানে নতুন নেতৃত্ব দেওয়া হয়নি। কমিটি না হওয়ায় অনেক নেতাকর্মী রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়েছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নতুন কমিটি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েও কমিটি দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই কেন্দ্রীয় নেতারা যেন দ্রুত রাবিতে নতুন কমিটি দেন সেই দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, মেয়াদোত্তীর্ণ থাকায় কমিটির অধিকাংশ নেতাকর্মী বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থী মারধর, সিট বাণিজ্যের মতো নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগ নিজেদের জরিয়ে ফেলেছেন বলে অনেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তারা রিসিভ করেননি।