ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) চলছে নির্বাচনী মৌসুম। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি থেকে শুরু করে কর্মকর্তা সমিতি ও সহায়ক কর্মচারী সমিতির সমিতির নির্বাচন চলতি মাসেই অনুষ্ঠিত হবে। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা ও অন্যান্য কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এই ব্যস্ততার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বিভিন্ন বিভাগে পূর্বনির্ধারিত কোর্স ফাইনাল পরীক্ষা ছাড়া নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এছাড়া কর্মকর্তারাও নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, আগামী ১৫ ডিসেম্বর (রোববার) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২০ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী ও প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যে দুটি এবং জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের মধ্যে একটি প্যানেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।
এছাড়া স্বতন্ত্রভাবে সভাপতি এবং সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন দুইজন শিক্ষক। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনী প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ৮ ডিসেম্বর পৃথকভাবে সাধারণ সভা করে প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম, বিএনপিপন্থী ও ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক সংগঠন জিয়া পরিষদ। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক মিটিংয়ে প্রায় সারাদিন ব্যয় করেন। ফলে ওইদিন ক্লাস হয়নি অধিকাংশ বিভাগে। এর পর থেকে প্যানেল (প্রার্থী) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিকবার সভা করে সংগঠনগুলোর কার্যনির্বাহী কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিভিন্ন প্যানেল থেকে মনোনয়ন জমা দেন প্রার্থীরা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির নির্বাচন-২০২০ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ ডিসেম্বর। এ নির্বাচনে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে দুইটি প্যানেল এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া দুই প্যানেলে সহায়ক কর্মচারী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তিন সমিতির (শিক্ষক, কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মচারী) নির্বাচনকে সামনে রেখে জোর প্রচারনা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী ১৫ দিনের ছুটিতে আমেরিকায় থাকায় একডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যে অনেকটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম বলেন, 'এই মাসের ২৩ তারিখ থেকে শীতকালীন ছুটি শুরু হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যে বিজয় দিবসের ছুটি ও শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে শিক্ষকরা ব্যস্থ থাকায় ঠিকমতো ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। এর ফলে নির্ধারিত ছুটির আগেই অনেকে বাড়িতে চলে যাচ্ছে।'
প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতার বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী শাসছুল ইসলাম জোহার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রত্যেক কর্মকর্তা তার দায়িত্ব পালন করছেন। তবে নির্বাচনী কাছে যারা অংশগ্রহন করছেন, তারা এর পাশাপাশি মাঝে মাঝে অফিসও করছেন। এর মাধ্যমে খুব বেশি যে প্রভাব পড়ছে তা নয়।'
একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতার বিষয়ে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একটি প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বপন বলেন, 'যেহেতু নির্বাচন আগামী ১৫ ডিসেম্বর, এর মধ্যে আমরা শুধুমাত্র আজকে (বুধবার) নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ পাচ্ছি। যেসব বিভাগে পরীক্ষা চলছে আমরা সে বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।'