নুর ক্যাম্পাসে আন্দোলন আন্দোলন খেলা চালু করেছে: সাদ্দাম

বিবিধ, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 08:37:45

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ সাম্প্রতিক সময়ে ভিপি নুরের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে আন্দোলন-আন্দোলন খেলার রীতি চালু করেছে। এরই অংশ হিসাবে পরিকল্পিত এই সংঘর্ষ ঘটিয়ে নিজেদের বিপ্লবী ভূমিকা জাহির করার ও সিমপ্যাথি পলিটিক্সে নিজেদের ভাবমূর্তি গড়ার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক এই ঘটনা ঘটাতে পারে বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১১টায় ডাকসু ভবনে বহিরাগতদের নিয়ে ভিপি নুরুল হক নুর সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া, সংঘর্ষ পরবর্তী ঘটনা পরম্পরায় ডাকসু নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার আবেদন, নুরের সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদানসহ সামগ্রিক বিষয়ে ডাকসু আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ডাকসুতে ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা।

এসময় লিখিত বক্তব্যে সাদ্দাম বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ২২ ডিসেম্বরের ঘটনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত কোন ডাকসু প্রতিনিধির বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। উল্লেখিত সংঘর্ষ, হামলা-প্রতি হামলার সঙ্গে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এর কেউ কোনোভাবেই জড়িত নয়। আমরা আরও বলতে চাই যে, এ সংঘর্ষের শুরুতে ডাকসু ভবনের নিচ থেকেই যদি ভিপি নুর ও তার বহিরাগত সঙ্গী-সাথিদের নিয়ে অন্যত্রে চলে যেতেন তাহলে এই সংঘর্ষের যবনিকাপাত সম্ভব হতো এবং কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি, ভাঙচুর, আহতের ঘটনা ঘটতো না।

সিনেট সদস্য সনজিত এবং এজিএস সাদ্দাম এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ যেমন পিছু হটেছিল, তেমন একই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভিপি নুর যদি পিছু হটতো তাহলেও সংঘর্ষ এড়ানাে যেতো বলে মনে করেন সাদ্দাম।

সাদ্দাম বলেন, সিনেট সদস্য সনজিত চন্দ্র দাস, এজিএস সাদ্দাম হােসেন, সদস্য রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, সদস্য মুহা, মাহমুদুল হাসান সর্বাত্মকভাবে সংঘর্ষ থামানাের চেষ্টা করার পরও ভিপি নুর পুলিশের কাছে এদের নামে মামলার আবেদন করে। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকার পরও মামলার আবেদনে তার নাম যুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এই মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের জন্য ভিপি নুরের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছে।

সংঘর্ষে লিপ্তদের প্রকৃত নাম, পরিচয় গােপন করার জন্য ডাকসু ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ গায়েব করা হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ পরিকল্পিতভাবে যারা গায়ের করেছিল সেই একইপক্ষ সেদিন মূল ফটক বন্ধ করে ডাকসু ভবনে অবস্থান করছিল। এবং তারাই সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সাদ্দাম দাবি করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ভিপি নুরের টেন্ডারবাজি, তদবির বাণিজ্য, পার্সেন্টেজ আদায় ইত্যাদি অনৈতিক কর্মকাণ্ড সবার সামনে উন্মোচিত হওয়ার বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানাে হয়েছে কি না তা অনুসন্ধানের দাবি রাখে বলে মনে করি।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলন থেকে সাদ্দাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বেশ কিছু দাবি করেন। সেগুলো হচ্ছে- ডাকসু নেতৃবৃন্দ, সিনেট সদস্য, হল সংসদের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলার অভিযােগ প্রত্যাহার করতে হবে, ডাকসু ভবনের ভিতরে অবস্থিত নুরের সহযোগী বহিরাগতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, ডাকসু ভবন ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত উভয়পক্ষের সদস্যদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, ডাকসু ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিতকরণ ও আইনের আওতায় আনতে হবে, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ডাকসু ভিপিকে পদত্যাগ করতে হবে, নুরের দুর্নীতি তদন্তে কমিটি গঠন করতে হবে, সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করায় নুরের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে, অন্যথায় তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর