আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সাইয়েন্স (ইউআইটিএস) এর কিছু বিষয় তুলে ধরলাম। ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়টি এরমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে।
আমি ইউআইটিএস-এ সিএসই থেকে বিএসসি ডিগ্রি শেষ করি ২০১১ (স্বর্ণপদক প্রাপ্ত)। এরপর এখানে শিক্ষকতা শুরু করি ২০১২ সালে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে যা প্রায় অকল্পনীয় ছিল। আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে ঠিকই কিন্তু অনেক যাচাই-বাচাই এর পরই আমাদের নিয়োগ দেয়া হয়। মান নিয়ে কখনোই ছাড় দিতে দেখি নাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
নকলকে কখনোই প্রশ্রয় দেই না আমরা, ২০১৪/১৫ সালের দিকে প্রায় ১০০ এর উপরে শিক্ষার্থী অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায় শুধু এই কারণে, তাও কর্তৃপক্ষ কোন ছাড় দেয় নি।
এখানে টিউশন ফিস অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক কম, এরপরও তারা এই টাকা তিন ভাগে দেয়ার সুযোগ পায়।
ইউজিসি- এর নির্দেশ অনুসারে আমারা ২০১৮ থেকে ডুয়েল সেমিস্টার (ছয় মাসে) শুরু করি। যা হাতে গোনা গুটি কয়েক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানা হয়। আমাদের বাৎসরিক মোট ভর্তি কিন্তু আগের তুলনায় বেড়েছে।
২০১৮ সালে আমার নেতৃতে যাত্রা শুরু করে ইউআইটিএস অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। তাদের অনেকেই দেশে-বিদেশে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
আমিই মনে হয় একমাত্র ব্যক্তি যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বুয়েটে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছি।
২০১৯ এর শেষের দিকে আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসের যাত্রা শুরু হয়। এখানে আছে খেলার মাঠ আর যুক্ত হচ্ছে আধুনিক সব ব্যবস্থা।
আমাদের সিএসই ডিপার্টমেন্ট এর জন্য নতুন ৫ টি আধুনিক ল্যাব হচ্ছে, যার কাজ প্রায় শেষ। এর মাঝে আছে গবেষণা ধর্মী কাজের আছে একটি রিসার্চ ল্যাব, যেখানে আছে ৫০ টি কম্পিউটার (core i7, 16GB RAM, 21'' monitor)।
এই করোনার মহামারিতেও আমরা এবং আমাদের ছাত্ররা ভালো আছে বলাই যায়। আমরা অনলাইনের ক্লাসের ব্যবস্থা করি। বিভাগীয় প্রধান হিসাবে আমি প্রতিটি ব্যাচের সাথে তাদের নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করি।
আমাদের কম্পিউটার ক্লাব, যাদের বাসা থেকে বের হতে সমস্যা হচ্ছে তাদের রি-চার্জের ব্যবস্থা করেছে।
এখন আমাদের কিছু ট্রি সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আছে, তাদের সিলেবাস শেষ করার কর আমরা ইজিসির-এর নির্দেশ অনুযায়ী ফল প্রকাশের ব্যবস্থা করছি।
আর যারা ডুয়েল সেমিস্টার-এর শিক্ষার্থী তাদের ক্লাস চলছে, ঈদের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তাদের পরীক্ষা কিভাবে নেয়া যায় সেটা।
এর মাঝে যারা পরীক্ষা দিতে পারছে না বা যারা আরও ভালো ফলাফল করতে চায় তারা ভবিষ্যতে আবার বিনা ফিতে পরীক্ষা দিতে পারবে।
শিক্ষার্থীদের কোন লেট ফি নেয়া হবে না , এমনকি তারা যেন অনলাইনে টাকা জমা দিতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যা আগে ছিল না ।
আমরা শিক্ষকরা নিয়মিত সম্মানী পাচ্ছি। এমনকি এপ্রিল মাসের টাকা তো এপ্রিলের ২৮ তারিখেই পেয়েছি ( যা আগে কখনোই হয় নি, এই বিপৎকালীন সময়ে আমাদের কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা ভাবে।
আমরা সি এস ই বিভাগের সবাই এক দিনের বেতনের টাকা দিয়েছি এবং একই সাথে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরাও এগিয়ে এসেছে। সবাই মিলে আমরা সবার পাশে থাকতে চাই।
কি কি সমস্যা হচ্ছে এবং তার সমাধান কি হতে পারে, এ নিয়ে নিয়মিত অনলাইনে আমাদের মিটিং হচ্ছে আমাদের।
সামনে ঈদ, আমরা সবাই পাচ্ছি ৩ টি বোনাস। যারা স্থায়ী নিয়োগ পায়নি তারাও পাচ্ছেন একটি বোনাস।
এই সব কিছুর পিছনে আছেন আমাদের ইআইটিএস-এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রধান একুশে পদক প্রাপ্ত আলহাজ্ব সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, একই সাথে তিনি 'পিএইচপি ফ্যামিলি'র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
আমরা হয়তো খুব পরিচিতি পাই নাই। কিন্তু ইউআইটিএস এর একজন ছাত্র এবং শিক্ষক হিসাবে আমি গর্বিত।
আশা করি, সুন্দর এক আগামী আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। সবাই সাবধানে থাকবেন। সবাই আমার এবং আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দোয়া করবেন।
লেখক: আল-ইমতিয়াজ, শিক্ষক ও প্রাক্তন ছাত্র, ইউআইটিএস