দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি রেমিট্যান্সের পর প্রাণঘাতী করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রফতানি খাতও। ফলে করোনায় বিপর্যস্ত রফতানি খাতে নতুন ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রফতানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ।
বুধবার (৫আগস্ট) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী,বিদায়ী জুলাই মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৪৪ কেটি ৯০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৯১ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রথম মাসেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। একই সঙ্গে অর্জিত রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ।
জুলাইয়ে তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। আয় হয়েছে ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কম হয়েছে।
দেশের রফতানির আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। কিন্তু করোনার প্রভাবে চলতি বছরের মার্চ থেকে এ খাতের রফতানি কমতে শুরু করে এপ্রিলে পোশাক রফতানিতে ভয়াবহ ধস নামে। মে মাসেও তা অব্যাহত থাকে। তবে জুন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে খাতটি।
আলোচিত সময়ে প্লাস্টিকজাত পণ্য রফতানি কমেছে। জুলাইয়ে প্লাস্টিকজাত পণ্য রফতানি লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৩ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৯৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ২৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।
এছাড়াও তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং প্লাস্টিকসহ বড় বড় খাতের রফতানি আয় কমলেও কৃষি, পাট ও পাট জাত পণ্যের রফতানি বেড়েছে।
ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে পাট ও পাটজাত পণ্যে রফতানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার কিন্তু এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে ৩৮ দশমিক ২৩ শতাংশ।
কৃষিপণ্য খাতে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেড়েছে ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে ৩০ দশমিক ৯২ শতাংশ।
অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে জুলাইয়ে মাসে প্রবাসীরা ২৬০ কোটি ইউএস ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর আগে কোনো একক মাসে এত রেমিট্যান্স কখনও আসেনি। রেকর্ড রেমিট্যান্সের কারণে ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৭২৯ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ তিন লাখ ১৬ হাজার ২০৪ কোটি টাকা।