ভোক্তাপর্যায়ে ১২ কেজি এলপিজির (লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) মূল্য ৯৭৫ টাকা এবং সরকারি এলপিজির মূল্য ৫৯১ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। অটোগ্যাসের লিটার প্রতি ৪৭.৯২ টাকা দর ঘোষণা করেছে বিইআরসি।
এই দর ১২ এপ্রিল থেকেই কার্যকর হবে। আদেশে প্রপেন বিউটেনের অনুপাত করা হয়েছে যথাক্রমে ৩৫ ও ৬৫ শতাংশ হারে। এই দর মানতে বাধ্য। না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোক্তারা সচেতন এর চেয়ে বেশি দামে ক্রয় করবেন না আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিইআরসি চেয়ারম্যান।
সোমবার (১২ এপ্রিল) ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এ দর ঘোষণা করে বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন)। এতে অংশ নেন বিইআরসি’র চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল কমিশনের সদস্য, মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী, মোহাম্মদ আবু ফারুক, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ। সরকার প্রথমবারের মতো এই এলপি গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করলো।
সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে প্রতি মাসের ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছে। মার্চের দর কেজি প্রতি ৫১.৩৫ টাকা ধরে ঘোষিত দর। অপরেশনার ব্যায় যুক্ত করে প্রতি কেজি ৭৬.১২ টাকা ও মুসকসহ খুচরা মূল্য ধরা হয়েছে ৮১.৩০ টাকা। সৌদির দর উঠা-নামা করলে ৫২.৩৫ টাকার স্থলে উঠা-নামা করবে। অন্যদর অপরিবর্তিত থাকবে।
প্রতিমাসে সৌদি সিপির ভিত্তিতে পুনঃনির্ধারণ করার জন্য বিইআরসির একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আরামকো ঘোষিত দর সংগ্রহ পুর্বক ২৫ তারিখের মধ্যে সুপারিশ প্রদান করবে পরবর্তী মাসের দরের। অন্যদিকে কোম্পানিগুলো প্রতি মাসের পনের তারিখের মধ্যে সৌদি সিপির দর লিখিতভাবে কমিশনে দেবেন।
অটো গ্যাসের আদেশে বলা হয়েছে, মার্চের সৌদি সিপি অনুযায়ী যথাক্রমে প্রোপেন বিউটেন দর ৬২৫ ও ৫৯৫ ডলার। ৮৪.৮০ টাকা ডলার মূল্য বিবেচনায় অটোগ্যাসের ভিত্তি মূল্য (লিটার) ২৮.৫২ টাকা, এরসঙ্গে জাহাজ ভাড়া ৪.৪৮ টাকা, অন্যান্য চার্জ .৩০ টাকা, মজুদকরণ চার্জ ২.৬৩ টাকা, মুসক ২.৭৪ টাকা, পরিবহন চার্জ ১.২৫ টাকা ও স্টেশন চার্জ ৮ টাকা বিবেচনায় ৪৭.৯২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, বিইআরসির আইন অনুযায়ী বিদ্যুৎ এনার্জি ও পেট্রোলিয়াম এনার্জির মূল্যহার নির্ধারণ করার এখতিয়ার। পেট্রোলিয়াম পণ্যের আপস্টিম ও ডাউনস্টিম দুটি বিষয় থাকে। আমরা ডাউনস্টিমের দর নির্ধারণ করি। ৩টি প্রবিধানমালা খসড়া করেছি, প্রবিধানমালা এখন চূড়ান্ত হয় নি। আমাদের আইনি অধিকার বাস্তবায়নের জন্য ক্যাব একটি রিট দায়ের করে। কোটের আদেশের প্রেক্ষিতে গণশুনানি নেওয়া।
এতোদিন এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। দর নির্ধারণের বিষয়ে অনেকদিন ধরেই কথা হলেও জ্বালানি বিভাগ, বিইআরসি নাকি বিপিসি করবে সে নিয়ে ছিল রশি টানাটানি। সর্বশেষ ক্যাবের এক রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোট এলপিজির দর নির্ধারণ না করায় বিইআরসিকে শোকজ করে। সে মোতাবেক দর চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় অংশ হিসেবে ১৪ জানুয়ারি গণশুনানি গ্রহণ করে বিইআরসি।
লাফিয়ে বাড়ছে দেশের এলপি গ্যাসরে ব্যবহার। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে চাহিদা ছিল ৪৪ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন। কয়েক বছরে চাহিদা বেড়ে ১২ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। জাইকার এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে ২০২৫ সালে ৩০ লাখ মেট্রিক টন ও ২০৪১ সালে চাহিদা হবে ৬০ লাখ টন।