গোয়েন্দা সংস্থার কালো তালিকায় দারাজসহ ২৩টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে। চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার মালিকানাধীন দারাজসহ ২৩ প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
গত সোমবার (১ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিন গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা তালিকা দেওয়া হয় বিএফআইইউকে। সেসব কালো তালিকায় দারাজসহ নতুন করে এই ২৩টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে। বুধবার (৩ নভেম্বর) বিএফআইইউ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এসব প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেনের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ। প্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাকাউন্টের লেনদেন, গ্রাহকদের পাওনা, অ্যাকাউন্টে জমার পরিমাণসহ বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে আগামী ১১ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দেওয়া হবে। গ্রাহকদের অর্থ ফেরতসহ বিভিন্ন বিষয়ে সেখানে আলোচনা হবে।
ব্যাংক হিসাব তলব করা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে দারাজ ও এর স্বত্বাধিকারী আলিবাবা ডটকম এবং প্রিয়শপ ও প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আশিকুল আলম খান। এছাড়া রয়েছে বাংলাদেশ ডিল এবং এ কোম্পানির ফারজানা কবির ইশিতা ও ফিদা মাহমুদ আশফাক, ইনফিনিটি মার্কেটিং ও এর চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম।
অন্যদের মধ্যে রয়েছে ওয়ালমার্ট ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ ফরিদ আহম্মদ, আলীফ ওয়ার্ল্ড ও এর এমডি রাশেদুল ইসলাম রেয়ন, পরিচালক মিজানুর রহমান, সাজ্জাদ ও সাইফ; অ্যামস বিডি ও এর এমডি আশেকুল ইসলাম তানজীল, চেয়ারম্যান কায়সার হাবিব, পরিচালক মো. আবদুর রউফ বারেক, আহনাফ তাহমিদ নাহিয়ান ও মো. কামরুজ্জামান; অ্যানেক্স ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী রিমন, এমডি মোহাম্মদ জুলফিকার আলী, পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন ও মো. ফিরোজ আলম এবং ব্রাইট হ্যাশ ও এর মালিক মো. ছালেকিন।
এছাড়াও রয়েছে স্বাধীন ও এর পরিচালক শাদমান ওয়াই, শামীরা ও ডেডরিক ভ্যান ওম্মেরেন; আকাশ নীল ও এর এমডি মসিউর রহমান এবং পরিচালক ইফতেখার উজ জামান রনি; গেজেট মার্ট ডটকম ও এর মালিক হারুন অর রশিদ। শেরেস্ত ডটকম ও এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান ইমরান রাসেল, পরিচালক মো. শামীম রেজা, ইরফান হোসাইন, জুনায়েদ হোসাইন, রাহাত হোসাইন চৌধুরী ও শেখ আহমেদ; আস্থার প্রতীক ও এর মালিক রুশো তালুকদার; টিকটিকি, শপ আপ ই-লোন, বাড়ি দোকান ডটকম, ই-শপ ইন্ডিয়া, বিডি লাইক, সান টিউন, চলন্তিকা, সুপম প্রোডাক্ট এবং নিউ নাভানা।
এর আগে ইভ্যালিসহ ১০টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করেছেন গোয়েন্দারা। ওই ১০ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কালো তালিকায় যোগ হলো এই ২৩ প্রতিষ্ঠান। ফলে কালো তালিকাভুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৩টিতে। উচ্চ ছাড়ে প্রলোভন দেখিয়ে পণ্য বিক্রি, গ্রাহকের অর্ডার নিয়েও পণ্য সরবরাহ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
অবশ্য বিতর্কিত ই-কমার্স ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, কিউকমের মতো অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছে বিএফআইইউ। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ ও মালিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে।