বিএডিসির তথ্যমতে দেশে মাত্র ৭ শতাংশ বীজ উৎপাদিত হয়। বাকি ৯৩ শতাংশই আমদানি করতে হয়। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করতে নিজস্ব বীজ উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ এসেছে এফবিসিসিআই’র কৃষি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিভিত্তক শিল্প সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে।
বুধবার (৬ এপ্রিল) সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এসময় তিনি বলেন, যে কোন দেশের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোভিড মহামারিকালীন কৃষির উৎপাদনে ভর করেই বাংলাদেশের অর্থনীতি তূলনামূলক ভালো অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে।
সরকার কৃষিভিত্তিক শিল্পকে রফতানিমুখী শিল্পে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিখাতের উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান সভাপতি। তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রফতানি হলেও সেগুলোর ক্রেতা মূলত প্রবাসী বাংলাদেশীরাই। মূল বাজারে কেন এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে না তা জানতে লন্ডনের বাজারে গবেষণার জন্য পিডব্লিউসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গবেষণার তথ্য পাওয়ার পর, বিদেশের বাজারে বাংলাদেশি কৃষিপণ্য রফতানি আরও বাড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসিভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে হালাল খাবার নিতে আগ্রহী। তাই এই খাতেও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে, কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ ড. ফেরদৌসী বেগম বীজের ক্ষেত্রে আমদানি নির্ভরতা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বীজ উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ প্রয়োজন। তাই এ খাতে সরকারি সহযোগিতা আহ্বান করেন ড. ফেরদৌসী।
কমিটির কো-চেয়ারম্যান তাসফিয়া জসিম বলেন, কৃষিখাতে শ্রমশক্তির ৫৪ শতাংশই নারী। এই বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের পুরুষের সমান মজুরি এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। একই সঙ্গে নারীদের ভূমির মালিকানা ১০ শতাংশ বা তার চেয়েও কম। কৃষিখাতে টেকসই উন্নয়নে নারীর অবদানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি জরুরি বলে মত দেন তাসফিয়া জসিম।
এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে পাওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কৃষিখাতের উন্নয়নে এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে যেকোন সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দেন এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি।
এর আগে কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবুল হাশেম জানান, শিগগিরই স্ট্যান্ডিং কমিটির উদ্যোগে একটি জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- এফবিসিসিআই’র পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হারুন অর রশীদ, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হকসহ স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যরা।