নিত্যপণ্যের লাগামহীন দরের মধ্যেই বৃহস্পতিবার সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লিটারে সাত টাকা বাড়িয়ে সয়াবিন তেলের নতুন মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এছাড়া বাজেটের প্রভাব পড়েছে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দরেও।
শুক্রবার (১০ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ, আলু, ডাল, শুকনা মরিচ ও কিছু সবজির দাম বেড়েছে।
লিটারে পাঁচ থেকে সাত টাকা বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ১৮৫ টাকা। আর বোতলজাত এক লিটার সয়াবিনের সর্বোচ্চ খুচরা দাম হবে ২০৫ টাকা। এছাড়া পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হবে সর্বোচ্চ ৯৯৭ টাকা। এক লিটার খোলা পাম তেলের দাম হলো ১৫৮ টাকা।
রফিকুল ইসলাম নামে বেসরকারি ব্যাংকের এক কর্মী বলেন, এমনিতেই সব কিছুর দাম বাড়তি। আশা করেছিলাম বাজেটের পর কিছুটা দাম কমবে। কিন্তু দেখলাম উল্টা, বাজেটের দিনই বাড়ল তেলের দাম। কয়েকদিন আগে গ্যাসের দামও বাড়ল। আমরা হচ্ছি বলির পাঠা। দাম বাড়ালেও মেনে নিতে হবে।
ব্রয়লার মুরগি দাম কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে। বাজারে এককেজি ব্রয়লার মুরগি কিনতে দাম পড়ছে ১৫০-১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়। কক বা লেয়ারের কেজি ২৯০ টাকা। ফার্মের ডিমের দাম প্রতি হালি ৩ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ এবং খাসির ৯০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিকেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের তেলাপিয়া ১৮০-২০০, চাষের কই ১৮০-১৯০, পাঙাশ ১৬০-১৮০, শিং ৩০০-৪৬০, শোল ৪০০-৬০০, পাবদা ৩০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কেজিতে পাঁচ টাকা পযর্ন্ত বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ ও চায়না রসুন ১২০ থেকে বেড়ে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০-১২০ টাকা এবং হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২২৪০ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০, শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০, করলা বিক্রি হচ্ছে ৫০, মিষ্টিকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০, চাল কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০, পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০, কাঁকরল বিক্রি হচ্ছে ৬০, ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০, কচুরমুখী বিক্রি হচ্ছে ৪০, পটোল বিক্রি হচ্ছে ৩০, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। কেজিতে তিন টাকা বেড়ে আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা দরে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের লাগাতার অভিযানের পরও কমছে না চালের দাম। বাজারে চিকন চালের দাম কেজিতে চার টাকা পযর্ন্ত বেড়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৪-৭২ টাকা, মাঝারি চাল ৫২-৫৮ টাকা এবং মোটা চাল ৪৮-৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।