বাড়ল গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম। আবাসিকের লাইফলাইন গ্রাহকের (৫০ ইউনিট ব্যবহারকারি) ইউনিট প্রতি ১৯ পয়সা বাড়িয়ে ৩.৯৪ টাকা, প্রথমধাপে ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর ২১ পয়সা বাড়িয়ে ৪.৪০ টাকা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ বিভাগ নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর গেজেট প্রকাশ করেছে। নতুন ঘোষিত দর চলতি মাস জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে।
নির্বাহী আদেশে, দ্বিতীয় ধাপে ৭৬-২০০ ইউনিট পর্যন্ত ২৯ পয়সা হারে বাড়িয়ে ৬.০১ পয়সা, ২০১-৩০০ ইউনিট পর্যন্ত ৩০ পয়সা বাড়িয়ে ৬.৩০ টাকা, ৩০১-৪০০ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিল ৩২ পয়সা বাড়িয়ে ৬.৬৬ টাকা, ৪০১-৬০০ ইউনিট পর্যন্ত ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০.৪৪ টাকা এবং সর্বশেষ ধাপ ৬০০ ইউনিটের ঊর্ধ্বে ব্যবহারকারীদের ১১.৪৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২.০৩ টাকা করা হয়েছে। উল্লেখিত দর নিম্নচাপ শ্রেণির গ্রাহকদের জন্য প্রযোজ্য হবে। মধ্যম ও উচ্চচাপের গ্রাহকদের জন্য পৃথক দর নির্ধারণ করা হয়েছে। মধ্যমচাপে ৫০ কিলোওয়াট থেকে ৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত গ্রাহকদের ফ্ল্যাট রেটে ৮.৮২ টাকা, অফ-পিকে ৭.৯৪ এবং পিকে ১১.০৩ টাকা ধরা হয়েছে।
কৃষি সেচের দর ২১ পয়সা বাড়িয়ে ৪.৩৭ টাকা। এই ধরণের গ্রাহকের মধ্যমচাপে (১১ কেভি) ফ্ল্যাট রেটে ৫.২৫ টাকা, অফ-পিকে ৪.৭৩ টাকা, পিকে ৬.৫৬ টাকা করা হয়েছে।
শিল্প গ্রাহকদের ফ্ল্যাট রেটে ৮.৫৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮.৯৬ টাকা, অফ পিকে ৭.৭৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮.০৬ টাকা, পিকে ১০.২৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০.৭৫ টাকা করা হয়েছে। শিল্পে মধ্যমচাপে (১১ কেভি) ফ্ল্যাট রেটে ৮.৯৮ টাকা, অফ-পিকে ৮.০৯ টাকা এবং পিকে ১১.২২ টাকা দর নির্ধারণ করা হয়েছে। উচ্চচাপ (৩৩ কেভি) গ্রাহকদের ফ্ল্যাট রেটে ৮.৮৭ টাকা, অফ-পিকে ৭.৯৯ টাকা এবং পিকে ১১.০৯ টাকা দর নির্ধারণ করা হয়েছে।
শিক্ষা, ধর্মীয়, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে নিম্নচাপে ৩০ পয়সা বাড়িয়ে ৬.৩২ টাকা, রাস্তার বাতি ও পানির পাম্পে ৭.৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮.০৯ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক ও অফিসের বর্তমান দর ফ্ল্যাট রেটে ১০.৮২ টাকা, অফ-পিকে ৯,৭৩ টাকা, পিকে ১২.৯৮ টাকা করা হয়েছে।
অতি উচ্চচাপ (শিল্প) ২০ মেগাওয়াট থেকে ১৪০ মেগাওয়াট পর্যন্ত ফ্ল্যাট রেটে ৮.৭৮ টাকা, অফ-পিকে ৭.৯০ টাকা, পিকে ১০.৯৭ টাকা দর নির্ধারণ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিতরণ কোম্পানিগুলোর দাম বৃদ্ধির আবেদনের ওপর ৮ জানুয়ারি শুনানি নেয় বিইআরসি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। শেষ পর্যন্ত তড়িঘড়ি করে নির্বাহী আদেশেই বাড়িয়ে দেওয়া হলো বিদ্যুতের দাম। ইতিমধ্যেই যে সব গ্রাহকের বিল ইস্যু করা হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে আগামী মাসের বিলের সঙ্গে সম্পূরক বিল ইস্যু করা হবে।
বিইআরসি গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯.৯২ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি ইউনিট ৫.১৭ টাকা বাড়িয়ে ৬.২০ টাকা নির্ধারণ করেছে। তার পরেই বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন জমা দেয়। অতীতে কোম্পানি ভেদে দরের ক্ষেত্রে কিছুটা তারতম্য দেখা গেলেও নির্বাহী সব বিতরণ কোম্পানির অভিন্ন দর দেওয়া হয়েছে। এতে করে কিছু কোম্পানির আয় ফুলে ফেপে উঠবে। বিশেষ করে ডিপিডিসি ও ডেসকোর মধ্যে ধনিক শ্রেণির গ্রাহকদের কোম্পানিগুলো বিশেষ সুবিধা পাবেন।