২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য সেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণের জন্য ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা গত বছর ছিল ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য সেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণের জন্য গত বছরের তুলনায় আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৫৬ কোটি বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণের অব্যাহত অগ্রগতি বজায় রাখার নিমিত্ত আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা।
আবুল হাসান মাহমুদ বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে। মাতৃমৃত্যুর হার ২০০৭ সালে ছিল প্রতি লক্ষ্যে ৩৫১ যা বর্তমানে হ্রাস পেয়ে ১৩৬ হয়েছে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার ২০০৭ সালে ছিল প্রতি হাজারে ৬০, যা বর্তমানে হ্রাস পেয়ে ৩৩-তে নেমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ২০০৭ সালে ছিল ৬৬.৬, যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে ৭২.৩ এ উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। এক বছর বয়সের নিচের শিশুর পূর্ণ টিকা প্রাপ্তির হার ৭৫ শতাংশ থেকে ৯৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
এর আগে, প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনে দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাজেটে সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর দেন।
অর্থমন্ত্রী যে বাজেট বক্তব্য দেবেন তার শিরোনাম দেওয়া হয়েছে- ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার।’
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার ঘাটতিই থাকবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই বিশাল পরিমাণ ঘাটতি পূরণে কয়েকটি খাতকে উৎস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। এই খাত থেকে মোটা দাগে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য বিদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার সহায়তা পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ১ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প ঋণও রয়েছে। এর পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত খাত হিসেবে বিবেচিত সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। নন-এনবিআর থেকে আসবে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির টার্গেট থাকছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।