৯ গিগাওয়াট বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে: প্রতিমন্ত্রী

, অর্থনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2024-07-03 20:44:11

বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উপকূলীয় এলাকায় ২২টি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। ৯ গিগাওয়াট আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরল হামিদ, এমপি।

বুধবার (৩ জুলাই) রাজধানী ঢাকার বিআইসিসি কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ প্ল্যানিং কমিশন আয়োজিত ‘ওশান প্রোসপারিটি ক্যাটালাইজিং ব্লু ইকোনমি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী নসরল হামিদ এ মন্তব্য করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের উপকূলীয় এলাকায় বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে প্রাক-সমীক্ষা করা হয়েছে। সমীক্ষা চলমান রয়েছে। এতে ২২টি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় ৯ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সুযোগ রয়েছে।

ব্লু ইকোনমির সুফল প্রসঙ্গে নসরুল হামিদ বলেন, ব্লু ইকোনমি নিয়ে বিদ্যুৎ সেক্টর অনেক কাজ করছে। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করেছে। সেখানে ৮০ হাজার টন কয়লার জাহাজ ভিড়েছে। মাতারবাড়িতে ল্যান্ডবেজড এলএনজি এবং এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে, মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে শেষ করে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তেল-গ্যাসের বিশাল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। অনেক খ্যাতনামা কোম্পানি এতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী এ সময় আরো বলেন, সাগরের জোয়ার-ভাটা থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে। আমরা পাইলট আকারে প্রকল্প করে দেখবো। গ্যাস হাইডেড নিয়েও কাজ করা দরকার। আমাদের পুরো সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সমন্বিতভাবে কাজ করা দরকার। আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য ব্লু ইকোনমি বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে।

সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম।

খুরশেদ আলম বলেন, নানাবিধ সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে মৎস্য আহরণ অন্যতম। গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ জাহাজ নিয়ে আসেনি। সে কারণে বিশাল সম্ভাবনা থাকলেও গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ এখনো শুরু করা যায়নি। আমাদের সাগরে ৬০-৭০ কিলোগ্রাম ওজনের অনেক টুনা রয়েছে কিন্তু আমরা কাজ শুরু করতে পারিনি। এখানে অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের ৩০-৩২ শতাংশ জ্বালানির জোগান আসে সাগরাঞ্চল থেকে। আমাদের সাগরে ১শ ৭ টিসিএফ গ্যাস হাইড্রেড রয়েছে; যদিও এগুলো উত্তোলনের কোনো প্রযুক্তি এখনো আসেনি।

ব্লু ইকোনমি নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন বাড়ানো প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এনার্জির পরিচালক ড. এসএম নাফিস শামস বলেন, আমাদের অফশোর এলাকায় ৯.৬ গিগাওয়াট আওয়ার বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সুযোগ রয়েছে। একটি প্রাক-সমীক্ষা রিপোর্টে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের উপকূলীয় এলাকায় মিঠা পানির সংকট রয়েছে। ইলেকট্রোম্যাগনেটিভ সার্ভেতে দেখা গেছে, সুন্দরবন এলাকায় বিশাল মিঠা পানির আধার রয়েছে, যা উপকূলীয় এলাকায় ৪৪ মিলিয়ন জনগণের মিঠা পানির সংকট দূর করতে পারে। কয়েক দশকের চাহিদা পূরণ করা সক্ষমতা রাখে ওই আধার।

সিসিসিসি সেকেন্ড হারবার কনসালট্যান্ট কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী ভাইস প্রেসিডেন্ট লিউ লিহুয়া বলেন, ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ, বায়ু ও ওয়েভ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। জিয়াংজিং পোর্টের আদলে গ্রিন পোর্ট স্থাপনের মাধ্যমে অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। চীন এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনির্ভাসিটির সাবেক ভিসি রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খালেদ ইকবাল। বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর