বিগত সরকারের আমলে দেশে সকল সেক্টরে অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি খরচ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় উপদেষ্টা দেশের জ্বালানি খাতের উন্নয়নে ইউএনডিপি’র সহযোগিতা চান।
সম্প্রতি পরিদর্শনকৃত একটি পাওয়ার প্লান্টের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, জ্বালানি সরবরাহের ব্যবস্থা না করেই ৯ হাজার কোটি টাকা খরচ করে খুলনায় একটি পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। ৩৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রক্ষেপণ অনুযায়ী এর ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে আয় ধরা হয়েছিল ১৪০০ কোটি টাকা। অথচ গত ছয় মাসে সেখানে আয় হয়েছে মাত্র ৩৭ কোটি টাকা। এসব প্রকল্প যথাযথ সম্ভাব্যতা যাচাই ও বাস্তব প্রয়োজনীয়তার নিরিখে গ্রহণ করলে এমন দুরবস্থা হতো না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবে। জনগণের প্রত্যাশা, প্রয়োজনীয়তা, অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায় এমন প্রকল্প গ্রহণ করবে। সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় জিটুজি পদ্ধতি প্রাধান্য দেয়া হবে। ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ায় সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।
নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ যেন সম্পন্ন করা হয় সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, কারণ দীর্ঘসূত্রীতায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইউএনডিপি’র প্রতিনিধিদল দেশের জ্বালানি, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ও রেল নেটওয়ার্কের উন্নয়ন বিশেষ করে এ সকল ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদানের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তারা সৌরশক্তি, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
এছাড়া, ইতঃপূর্বে অনুমোদিত প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক অনুদান দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন।
সাক্ষাৎকালে, বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল বাকী উপস্থিত ছিলেন।